নয়াদিল্লি: কাবুল বিমানবন্দরে বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেছে আইএসকে বা ইসলামিক স্টেট খোরাসান। সেই বিস্ফোরণের জেরে স্তম্বিত গোটা বিশ্ব। এবার সেই বিস্ফোরণের ঘটনায় ‘ভারত যোগ’-এর তথ্য হাতে এল ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা এনআইয়ের। বিগত কয়েক বছর ধরে বহু ভারতীয় যুবককে সংগঠনের নিযুক্ত করেছে আইএসকেপি। আর এই তথ্য হাতে আসতেই নড়েচড়ে বসেছে মোদী সরকার ।
এনআইএ সূত্রে খবর, ঘটনার তদন্তে নেমে সম্প্রতি একটি মডিউলের সন্ধান পায় গোয়েন্দা সংস্থাটি। ক্রনিকল ফাউন্ডেশন নামে এক সংস্থা ভারত সিরিয়া ইরাক আফ্রিকা সহ একাধিক দেশের থেকে বহু যুবককে আইএসকের জন্য নিয়োগ নিয়োগ করেছিল।
ওই সংস্থাটিতে ৫০ হাজারের বেশি সদস্য ছিল। ২০১৯ সালের এপ্রিল মাসে থেকে পাকিস্তান কেন্দ্রিক সংস্থাটি ইরানের মাধ্যমে বহু যুবককে আফগানিস্তানে নিয়ে যায়। সেখানে তাদের আইএসকে ইসলামিক স্টেট করা যায় নিযুক্ত করা হয়।
আরও পড়ুন: মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পরই মন্ত্রিসভা গঠন প্রক্রিয়া শুরু হবে: তালিবান
গত মার্চ মাসে জম্মু-কাশ্মীর, কর্ণাটক ও কেরলে দশজন সন্দেহভাজনকে গ্রেফতার করেছিল এনআইএ। যারা কেরলের মাল্লাপুরমের বাসিন্দা জনৈক মোহাম্মদ আমিন দ্বারা পরিচালিত হতো। ভারতে সদস্য নিয়োগের ক্ষেত্রে খুব টেলিগ্রাফের মতন বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করত সন্ত্রাসবাদী সংগঠনটি। পাশাপাশি ওই সদস্যরা সংগঠনের জন্য আর্থিক তহবিল আদায় সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে চালাত। এমন তথ্যই হাতে এসেছে এনআইএর।
এনআইএ তদন্ত সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১৫ সালে কমপক্ষে ১২ জন ভারতীয়কে আফগানিস্তানের নানগারহর প্রদেশ নিয়ে যায় আইএসকেপি। এই সমস্ত তথ্য হাতে আসতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ পড়েছে সাউথ ব্লকের। উল্লেখ্য, ২০২০ সালের ২৫ মার্চ কাবুলের গুরুদুয়ারা হামলার ঘটনায় অভিযোগ স্বীকার করেছিল আইএসকেপি। সেই ঘটনার নেপথ্যে ছিল মোহাম্মদ মহাসিন বলে কেরলের বাসিন্দা এক ভারতীয়। যদিও পরবর্তীকালে আফগান সেনা অভিযানে মৃত্যু হয় তাঁর। মহসিন ছাড়াও ওই গুরুদুয়ারা হামলার ঘটনায় হাত ছিল আসলাম ফারুকীর। যিনি পাকিস্তান থেকে আইএসপির মডিউল অপারেট করছিলেন। পরে আফগান সেনার জেরায় আইএসকের সঙ্গে লস্কর-ই-তৈবা যোগাযোগের কথা স্বীকার করে আসলাম ফারুকী। যার থেকে স্পষ্ট হয় ইসলামিক স্টেট খোরাসানের সঙ্গে পাকিস্তানি জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তৈবার যোগাযোগের বিষয়টিও।
আরও পড়ুন: দু’এক দিনের মধ্যেই কাবুল বিমানবন্দরে ফের হামলার আশঙ্কা করছেন বাইডেন
সম্প্রতি, কাবুল বিমানবন্দরে ভয়াবহ বিস্ফোরণে নিহত হয়েছেন ১৫ মার্কিন সেনা। আহত বহু। এই বিস্ফোরণের ঘটনায় বিপর্যস্ত হয়েছে উদ্ধারকাজ। কিন্তু প্রশ্ন উঠছে তালিবানের পাশাপাশি আফগানিস্তানের মাটিতে ইসলামিক স্টেট এর উত্থান নিয়ে। সেইসঙ্গে পাকিস্তান যোগ স্বাভাবিক ভাবেই চিন্তা বাড়াচ্ছে নয়াদিল্লির। মার্কিন সেনা প্রত্যাহারের পর সন্ত্রাসবাদের স্বর্গ হতে চলা আফগানিস্তানের সঙ্গে কিভাবে সম্পর্ক বজায় রাখে ভারত। সেদিকেই তাকিয়ে রয়েছে কূটনৈতিক মহল।