নয়াদিল্লি: দেশের একাধিক রাজ্যে লাভ জিহাদ বিরোধী আইন এনেছে বিজেপি সরকার। যা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। এই ধর্ম নিয়ে আলচনার মাঝেই ভিন্ন ছবি দেখা গেল দক্ষিণ ভারতের রাজ্য কর্ণাটকে। সেখানে হিন্দু রীতি মেনে হিন্দু ধর্মীয় পাত্রের সঙ্গে মেয়ের বিয়ে দিলেন মুসলিম অভিভাবক।
আরও পড়ুন- সিপিএম থেকে বহিষ্কারের মুখে অনিল কন্যা অজন্তা
ঘটনাটি কর্ণাটকের বিজয়পুরার অ্যালমেল শহরের। ওই শহরের নাসিন্দা মেহবুব মাসলি কীর্তি নজর কেড়েছে সমগ্র দেশের। তাঁর বাড়িতে থাকা অনাথ মেয়ে পূজার বিয়ে দিয়েছেন মেহবুব। খুব ছোট বয়সে অনাথ হয়ে যায় পূজা। সেই সময় থেকে মেহবুবের বাড়িরেই ছিল সে। সেই হিন্দু মেয়ের বিয়ের দায়িত্বও নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছিলেন তিনি। আর তা সম্পন্ন করেছে স্থাস্থ উপায়ে।
আরও পড়ুন- ব্যর্থতা ভুলে ব্রোঞ্জে চোখ মনপ্রীতদের
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, খুব ছোট বয়সে বাবা-মাকে হারায় পূজা। অনাথ শিশুটির দায়িত্ব নিতে কেউ এগিয়ে আসেনি। আত্মী-পরিজনেরাও মুখ ফিরিয়েছিল। সেই সময়ে ওই মেয়েটিকে কাছে টেনে নেয় মেহবুব। নিজের সন্তানদের সঙ্গেও লালন পালন করে বড় করে তোলেন। মেহবুবের নিজের দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে রয়েছে। নিজের চার সন্তানের সঙ্গে কখনও পূজাকে আলাদা করে দেখেননি তিনি।
আরও পড়ুন- বিএসএনএল বিক্রির প্রতিবাদে কানে ল্যান্ডফোন নিয়ে খাকি পোশাকে বিক্ষোভ
পিতৃস্নেহে বড় করে তোলা মেয়ে পূজার বিয়ে দেওয়া নিজের গুরুদায়িত্ব বলে বরাবরই মনে করে এসছেন মেহবুব মাসলি। যা তিনি পালন করেছেন অত্যন্ত নিষ্ঠার সঙ্গে। অন্য ধর্মের মেয়ে পূজার জন্য নিজের ধর্মের পাত্র নয়, হিন্দু ছেলে খুঁজে বিয়ের ব্যবস্থা করেছেন। বিয়ের দিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত মণ্ডল সজ্জা থেকে অতিথি আপ্যায়নের মতো সব কাজ বাবার মতোই সামাল দিয়েছেন তিনি।
আরও পড়ুন- রাহুলের ‘ব্রেকফাস্ট পে চর্চা’য় তৃণমূলের এক ঝাঁক মুখ, এলো না আপ
মেহুবের কথায়, “আমার কাছে থাকা পূজার বিয়ে দেওয়া আমার দায়িত্ব ছিল। হিন্দু ছেলের হাতে তুলে দেওয়াও আমারই কর্তব্য ছিল বলেই প্রথম থেকে মনে করে এসেছি।” সেই সঙ্গে তিনি আরও বলেছেন, “আমার বাড়িতে পূজা দশ বছরের বশি সময় ধরে রয়েছে। আমি তাকে কখনই আমার ধর্ম(ইসলাম) গ্রহণ করতে বলিনি। কিংবা মুসলিম ছেলের সঙ্গে বিয়ের কথাও বলিনি। এটা আমার ধর্মের বিরোধী।”
আরও পড়ুন- চুপিসারে শ্যুটিং সেরেছেন পরিণীতি
পালিত মেয়েকে পাত্রস্থ করা এবং সেই মেয়েকে ধর্ম পরিবর্তনের জন্য কোনও চাপ না দিয়ে সম্প্রীতির বার্তা দিতে চেয়েছেন মেহবুব। যা সংবাদ মাধ্যমের সামনে স্বীকার করেছেন তিনি। মেহবুবের কথায়, “আমি এই সমাজকে বার্তা দিতে চাইছি যে সকলের মিলেমিশে থাকা উচিত।” ১৮ বছরের পূজার বিয়ে হয়েছে ২১ বছর বয়সী শঙ্করের সঙ্গে। ছেলের পরিবারের পক্ষ থেকে সাদরে গ্রহণ করা হয়েছে পূজাকে। পাত্রপক্ষের তরফে কোনও প্রকারের পণ নেওয়া হয়নি বলেও জানিয়েছেন মেহবুব মাসলি।