নয়াদিল্লি: আলোচনা ছাড়াই সংসদে একাধিক বিল পাস করিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। বিজেপির অভিযোগ, সংসদে বিরোধীদের হট্টগোলের জেরে স্বাভাবিক আলোচনা সম্ভব হয়নি। অধিবেশন শেষেরদিন তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায়, ডেরেক ও’ ব্রায়েন ও যশবন্ত সিনহা প্রেস কনফারেন্স করে গোটা অধিবেশনে সংসদে কেন্দ্রীয় সরকারের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনা করেন। তৃণমূল সাংসদ সৌগত রায় বলেন, ওবিসি বিল নিয়ে সংসদের দুই কক্ষেই সুষ্ঠ আলোচনা হয়েছে। লোকসভায় একদিনের জন্য উপস্থিত হননি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দেশের নিরাপত্তা নিয়ে আলোচনায় উপস্থিত ছিলেন না স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। এদিন ডেরেক ও’ ব্রায়েন সাংবাদিক বৈঠকে অভিযোগ করেন, সংসদীয় কমিটিতে আলোচনা ছাড়াই একাধিক বিল পাস করিয়ে নেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: অতিমারির মাঝে ভোট করাতে পরামর্শ চাইল নির্বাচন কমিশন
১০টি বিলে ৪টি অর্ডিনেন্স জারি করেছে সরকার। বিরোধীদের আচরণ নিয়ে প্রশ্ন তোলার আগে সরকারের গুণ্ডামি মানুষের সামনে নিয়ে আসা প্রয়োজন। ওবিসি বিল সহ একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিল সংসদে বাদল অধিবেশনে পাস হয়। শুরু থেকেই পেগাসাস ইস্যুতে বিরোধীদের বিক্ষোভে বার বার মুলতুবি হয়ে যায় সংসদের উভয় কক্ষ। একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব, শিল্পপতি, সাংবাদিকদের ফোনে ইজরায়েলি স্পাইওয়্যার দিয়ে নজরদারি চালানো হয়েছে। সংসদ অধিবেশনের শুরুর দিনই এই খবর প্রকাশ্যে আসার পরই বিরোধীরা এ নিয়ে আলোচনার দাবি তোলেন।
তৃণমূল-সহ সবকটি বিরোধী দলই এমন স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে সরব হয়েছিল। সৌগত রায় অভিযোগ করেন, প্রতিটি বিলে কমপক্ষে ১০ মিনিটও সু্ষ্ঠ আলোচনা হয়নি, অথচ আইন পাস হয়ে গেছে। সংসদে বিলের উপর সংশোধনী প্রস্তাব না করতে পারা কি কোনও গণতন্ত্রের পরিচয়? সিলেক্ট কমিটি গঠন হওয়ার পর থেকে গুরুত্বপূর্ণ বিলগুলি পর্যালোচনার জন্য সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর নিয়ম রয়েছে। বাদল অধিবেশনে মাত্র ১১ শতাংশ বিল সিলেক্ট কমিটিতে স্ক্রুটিনির জন্য পাঠানো হয়েছে। রীতিমতো জোর করেই সব বিল পাস করিয়ে নিয়েছে সরকার।
আরও পড়ুন: রাহুলের নেতৃত্বে বিরোধীদের কেন্দ্র বিরোধী মিছিল সংসদের বাইরে
স্বাধীনতার পর এই প্রথম লোকসভা কোনও অধিবেশনে প্রথম ১০টি বিলে একটি করে অর্ডিন্যান্স এনেছে সরকার যা গণতন্ত্রে কাম্য নয়। সৌগত রায় অভিযোগ করেন, সংসদে প্রবেশের সময় প্রধানমন্ত্রী আশ্বাস দিয়েছিলেন, সমস্ত প্রশ্নের উত্তর দিতে তিনি প্রস্তুত আছেন, অথচ সংসদকেই তিনি এড়িয়ে গেছেন। বাদল অধিবেশনের শেষে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে পেগাসাস বিতর্ক সহ মোট ৭টি প্রশ্ন রাখেন তৃণমূল সাংসদরা।
তাদের প্রশ্ন, শুধুমাত্র সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে একের পর এক বিল পাস করিয়ে নিতে পারেন মোদি-শাহর সরকার ? সংসদে ১ ঘণ্টার বেশী উপস্থিত থাকেননি অধ্যক্ষ অথচ একজন ডেপুটি স্পিকার নির্বাচন করার চেষ্টা করা হয়নি পাছে বিরোধীদের কেউ এই আসন পেয়ে যান। নরেন্দ্র মোদি বিরোধীদের প্রশ্নের কোনও উত্তরই দেননি। বাদল অধিবেশনের শেষে সরকারের বিরোধীতায় এভাবেই সরব হন তৃণমূল সাংসদরা যদিও বিজেপির বক্তব্য, তৃণমূল সংসদে কেন্দ্রীয় সরকার বিরোধী ঐক্য গঠনের চেষ্টা করছে।