মুম্বই: কঙ্গনা রানাউতের মোদি-ভক্তির কথা কারও অজানা নয়। মাঝে মধ্যেই প্রধানমন্ত্রীর বন্দনায় মেতে ওঠেন অভিনেত্রী। তবে কৃষি আইন প্রত্যহারের পর কড়া প্রতিক্রিয়া দেন কঙ্গনা। নিজের ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে উগড়ে দেন সমস্ত রাগ-ক্ষোভ৷ লেখেন, ‘দুঃখজনক, লজ্জাজনক এবং এক্কেবারে অনুচিত৷’ সেই কঙ্গনায় আচমকা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীকে নিয়ে মুখ খুললেন। শুরু তাই নয়, আন্দোলনকারী কৃষকদের বিচ্ছিন্নতাবাদী খালিস্তানিদের সঙ্গে তুলনা করলেন।
বলে রাখা ভালো, কঙ্গনার আগামী ছবির নাম ‘এমার্জেন্সি’। যেই ছবিতে ইন্দিরা গান্ধীর চরিত্রে অভিনয় করছেন অভিনেত্রী। ইনস্টাগ্রাম স্টোরিতে অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘খালিস্তানি জঙ্গিরা আবারও সরকারের বিরুদ্ধে মাথাচাড়া দিচ্ছে…কিন্তু একজন মহিলাকে ভুললে চলবে না…দেশের একমাত্র মহিলা প্রধানমন্ত্রী নিজের জুতোর তলায় বিচ্ছিন্নতাবাদী খালিস্তানপন্থীদের পিষে দিয়েছিলেন।’
আরও পড়ুন: জেহাদি-মন্তব্যের জের, কঙ্গনার বিরুদ্ধে থানায় কংগ্রেস
বলাই বাহুল্য, এই স্টোরিতে আন্দোলনকারী কৃষকদের যেমন তুলোধনা করা হয়েছে, ঠিক তেমনই ইন্দিরার পদক্ষেপের প্রশংসা করলেও তাঁকে খোঁচা দিতে ছাড়েননি কঙ্গনা। অভিনেত্রী লিখেছেন, ‘ওঁনার (ইন্দিরার) এই পদক্ষেপের জন্য দেশকে কতখানি অসুবিধায়ও পড়তে হয়েছে তা প্রাসঙ্গিক নয়। নিজের জীবনের বিনিময়ে খালিস্তানিদের মশার মতো মেরেছিলেন উনি… দেশকে কোনওভাবেই ভাঙতে দেননি।’
কঙ্গনার বক্তব্যে পরিষ্কার, মোদিকে গণতন্ত্রপ্রিয় হিসেবে প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছেন তিনি। অভিনেত্রীর মতে, কৃষকদের টানা আন্দোলন সত্ত্বেও পাল্টা প্রতিরোধ গড়ে তোলেননি প্রধানমন্ত্রী। বরং শান্তি বজায় রাখতে তিনটি কৃষি আইন বাতিল করার কথা ঘোষণা করেছেন। এই আইন চালু থাকলে হয়তো কৃষকদের ভালো হত, কিন্তু মোদি সবার মতকে প্রাধান্য দেন বলেই তিনি আইন প্রত্যাহার করলেন, কঙ্গনার বক্তব্যে এই বিষয়টিই ফুটে উঠেছে।
আরও পড়ুন: ‘এক্কেবারে অনুচিত’, মোদির কৃষি আইন প্রত্যাহারের ঘোষণায় ফোঁস করে উঠলেন কঙ্গনা
আটের দশকে পঞ্জাবে বিচ্ছিন্নতাবাদী খালিস্তানপন্থীদের আন্দোলন মাথাচাড়া দেয়। তরুণ প্রজন্ম আলাদা রাষ্ট্রের দাবিতে অস্ত্র হাতে তুলে নেয়। নেতা ছিলেন ভিন্দ্রানওয়ালে। পঞ্জাবে তখন প্রতিদিন হিংসা। ইন্দিরা আইপিএস অফিসার কে পি এস গিল-কে সেখানে পাঠান। এর পর শুরু হয় অপারেশন ব্লু-স্টার। অমৃতসরের স্বর্ণ-মন্দিরে আশ্রয় নিয়েছিল সন্ত্রাসবাদীরা।
সেনা অভিযানে সবাইকে শেষ করা হয়। মারা যান ভিন্দ্রানওয়ালে। বদলা আসে ইন্দিরার দেহরক্ষীদের কাছ থেকে। সন্তবন্ত সিং, বিয়ন্ত সিং নামে দুই দেহরক্ষীর গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যান প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা। এর পর দিল্লি সহ গোটা দেশ জুড়ে শুরু হয় শিখ নিধন।