নয়া দিল্লি : ইনস্টাগ্রাম প্রোফাইলের জনপ্রিয়তা বাড়ানোর তাগিদে এক যুবককে নৃশংস ভাবে খুন করে ঘটনার ভিডিও পোস্ট করা হল দিল্লিতে। তিন নাবালকের এই কীর্তির কথা প্রকাশ্যে আসতে স্তম্ভিত দিল্লি পুলিস। ওই তিন জনকে হোমে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। পুলিস জিজ্ঞাসাবাদ করে জানতে পারে, ওই তিন জন বিভিন্ন ক্রাইম থ্রিলারের ভক্ত। একাধিক অপরাধমূলক ছবি, ওয়েব সিরিজ দেখে তারা এই খুনের ছক কষে। উদ্দেশ্য একটাই, ইনস্টাগ্রামের ফলোয়ারস বাড়ানো। পুলিশ আরও জানায়, গত ১৭ জানুয়ারি মুক্তিপ্রাপ্ত ‘পুষ্পা : দ্য রাইজ’ নামে একটি তেলুগু ছবির এক চরিত্রের অনুকরণে ওই কিশোররা এই কাণ্ড ঘটায়। আল্লু অর্জুন অভিনীত ওই ছবিটি বক্স অফিসে যথেষ্ট নাম করেছে।
ঘটনাটি ঘটে ১৯ জানুয়ারি উত্তর পশ্চিম দিল্লির একটি পার্কে। পুলিশ সূত্রের খবর, ওই দিন পার্কার মধ্যে ডাণ্ডা গুলি খেলছিল ১৫, ১৬ ও ১৭ বছরের তিন কিশোর। ২৪ বছর বয়সি ওই যুবকটি পার্কেই বসে ছিলেন। তিনি তিন কিশোরকে ডাণ্ডা গুলি খেলতে নিষেধ করেন। তাতেই মাথায় খুন চেপে বসে তিন কিশোরের। একজনের কোমরে গোঁজা ছিল একটি ছুরি। সেই ছুরি দিয়ে দু’জন কিশোর শিবু হোসেন নামে ওই যুবককে চেপে ধরে এলোপাথাড়ি কোপাতে থাকে। অপর কিশোর গোটা ঘটনাটি মোবাইলে ভিডিও করে রাখে। স্থানীয়রাই শিবুকে হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়।
দিল্লির উত্তর পশ্চিমের ডেপুটি পুলিস কমিশনার ঊষা রাংনানি জানান, হাসপাতাল সূত্রে তাঁরা খবর পান। তদন্তে নেমে ১২ ঘন্টার মধ্যেই তিন নাবালককে পাকড়াও করে পুলিস। পার্কের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে ওই তিন কিশোরকে চিহ্নিত করা হয়। ওই কিশোররা ভিডিওটি অনলাইনে পোস্ট করার তোড়জোড় করছিল। তার আগেই তাদের ধরা হয়। ওই নৃশংস ভিডিও দেখে তাজ্জব হয়ে যান খোদ ডেপুটি পুলিস কমিশনার।
আরও পড়ুন : আল্লুর ছবির হিন্দি ডাবিং এ হতবাক বলিউড অভিনেতা
পুলিসকে ওই তিন কিশোর জেরায় জানিয়েছে, সম্প্রতি তারা পুষ্পা সিনেমাটি দেখেছে। এছাড়া ভাউকাল নামে একটি ওয়েব সিরিজও দেখে ফেলেছে তারা। তার থেকেই এভাবে খুনের কথা ভাবে। ইতিমধ্যে তারা বদনাম নামে একটি দলও গড়ে ফেলেছে। ইনস্টাগ্রামে বদনাম, শের এবং গ্যাংস্টার নামে তিন জনের প্রোফাইলও রয়েছে। ইনস্টাগ্রামের বায়োতে লেখা রয়েছে অ্যাড্রেস – মুকদ্দমা নম্বর ৩০২, ৩০৭ (address- mukadma no./302..307)। একাধিক পোস্টে ওই তিন জনের ধূমপান করা, বন্দুক নিয়ে ঘাটাঘাটি করার ছবি রয়েছে। ডেপুটি পুলিস কমিশনার জানান, ধরা পড়ার পরেও তাদের চোখেমুখে বিন্দুমাত্র উদ্বেগ ধরা পড়েনি।
১৫ বছর বয়সি কিশোরের মা জানান, তাঁর স্বামী নেই। তিনি কোনও মতে সংসার চালান। তাঁর ছেলে কাউকে খুন করতেই পারে না, দাবি ওই মহিলার। বাকি দু’জনের পরিবার ছোটখাটো ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত। পুলিস জোরদার তদন্ত চালাচ্ছে।