নয়াদিল্লি: করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের ভয়াবহতা কিছুটা কমতেই শিথিল হয়েছে বিধি-নিষেধ। খুলেছে সিনেমা-হল, শপিং মল। বেশকিছু রাজ্যে স্কুল-কলেজও খুলে গিয়েছে। দেশে সংক্রমণ যতই কমেছে, সামাজিক দূরত্ববিধিও ততই শিকেয় উঠেছে। মুখের মাস্কও নেমে এসেছে গলায়। সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন ভাইরোলজিস্ট ডাঃ ডব্লিউ ইয়ান লিপকিন।
অধিকাংশ ভারতীয়র কাছে ‘সুরক্ষা বর্ম’ না থাকায় উৎসবের মরশুমে বাড়তে পারে সংক্রমণ। দুর্গাপুজো থেকে শুরু করে নবরাত্রি, দেশরা, বিজয়া দশমী, ঈদ সবকিছুই রয়েছে অক্টোবর মাসে। ফলে মানুষ রাস্তায় বেরোবেন, তা একপ্রকার বলাই যায়। অথচ অধিকাংশ ভারতীয়ই এখনও টিকা পাননি। সে কারণেই বিধি-নিষেধে শিথিলতা বড় বিপদ ডেকে আনতে পারে, এমনটাই মত লিপকিনের।
আরও পড়ুন: পুজোর আগে রাজ্যে দৈনিক করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধি, শীর্ষে কলকাতা ও উত্তর ২৪ পরগনা
লিপকিন বলেন, ভারতের জনসংখ্যার ২০ শতাংশেরও কম মানুষ ভ্যাকসিন পেয়েছেন। দেশে ১৮ বছরের কম বয়সী মানুষের সংখ্যা মোট জনসংখ্যার ৩০ শতাংশ। তারা এখনও টিকা নেওয়ার যোগ্যতা পায়নি। অর্থাৎ, করোনা থেকে সুরক্ষিত থাকার অন্যতম অস্ত্র অধিকাংশ মানুষের কাছেই নেই। এই পরিস্থিতিতে সবকিছু খুলে দেওয়া মোটেই নিরাপদ নয়।
তাঁর মতে, বিজ্ঞানীদের এমন ভ্যাকসিন তৈরি করা উচিত, যা গুরুতর রোগ প্রতিরোধ করা ছাড়াও সংক্রমণকেও আটকাতে পারবে। স্বাস্থ্য পরিকাঠামোর উন্নয়নের কথাও বলেছেন তিনি। লিপকিন বলেন, দেশের জনস্বাস্থ্য পরিকাঠামো আরও উন্নত করতে হবে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের ট্র্যাক এবং ট্রেস করার উপর জোর দিতে হবে। এর ফলে রিং ভ্যাকসিনেশন কৌশল গ্রহণ করা যাবে। গুটিবসন্ত নির্মূল করার ক্ষেত্রে ভারত এই পদ্ধতি অবলম্বন করেছিল।
আরও পড়ুন: Covid 19: করোনার তৃতীয় ঢেউ থেকে বাঁচতে এই নিয়মগুলো মেনে চলুন
উৎসবের মরশুমে দেশে দৈনিক সংক্রমণ কিছুটা কমল। গত ২৪ ঘণ্টায় দেশে মারণ ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছেন ১৮ হাজার ১৩২ জন। মৃত্যু হয়েছে ১৯৩ জনের। দেশে অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যাও কমছে। এই মুহূর্তে দেশে করোনা অ্যাকটিভ রোগীর সংখ্যা ২ লক্ষ ২৭ লক্ষ ৩৪৭। গত ২৪ ঘণ্টায় সুস্থ হয়েছেন ২১ হাজার ৫৬৩ জন। মোট সুস্থ হয়েছেন ৩ কোটি ৩২ লক্ষ ৯৩ হাজার ৪৭৮ জন।