লখনৌ: ফের সামনে এল যোগী রাজ্যে দলিতদের প্রতি অস্পৃশ্যতার ঘটনা। দলিত পড়ুয়াদের দিয়ে তাঁদের ব্যবহৃত বাসন মাজানো ও অস্পৃশ্য আচরণের জন্য বহিষ্কার হলেন প্রধান শিক্ষক ও দুই রাঁধুনী। ঘটনাটি ঘটেছে উত্তরপ্রদেশের মৈনপুরা জেলার দাউদাপুর এলাকায়। জানা গিয়েছে, দাউদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে মোট ৮০ জন পড়ুয়া রয়েছে। যার মধ্যে ৬০ জন এই দলিত সম্প্রদায় ভুক্ত। ওই দলিত সম্প্রদায় ভুক্ত পড়ুয়াদের মিড ডে মিলের বাসন মাজানো হতো। শুধু তাই নয় ওই পড়ুয়াদের ব্যবহৃত বাসন বাকিদের থেকে আলাদা করে রাখা হতো। সম্প্রতি এমনই অভিযোগ দায়ের হয়েছিল জেলা প্রশাসনের কাছে। সেই অভিযোগ খতিয়ে দেখতে স্কুল পরিদর্শনে আসেন বেওয়ার ব্লক কর্তারা
স্কুলে এসে এমন দৃশ্য বাস্তবে দেখতে পান প্রশাসনিক আধিকারিকরা। তারপরই প্রধান শিক্ষিকা গরিম রাজপুত ও দুই রাঁধুনিকে পড়ুয়াদের সঙ্গে অস্পৃশ্য আচরণের জন্য বরখাস্ত করা হয়েছে।
সম্প্রতি গ্রামের নয়া পঞ্চায়েত প্রধান মঞ্জু দেবীর স্বামী এই অভিযোগটি করেছিলেন বলে জানান জেলার প্রাথমিক শিক্ষা আধিকারিকর কমল সিং।
গত বুধবারে এই অভিযোগটি দায়ের করা হয়। তারপরেই খতিয়ে দেখতে স্কুলটিতে একটি পর্যবেক্ষক দল পাঠায় জেলা প্রশাসন। স্কুলে গিয়ে রাঁধুনিদের অস্পৃশ্য আচরণ নিজের চোখে দেখে স্তম্ভিত হয়ে যান আধিকারিকরা। তার পরই তাঁদের বরখাস্তের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
পঞ্চায়েত প্রধান মঞ্জু দেবীর স্বামী সাহাব সিংয়ের কথায়, “কয়েকদিন আগেই এই ঘটনার একটি অভিযোগ আমার কানে আসে। তারপরি স্কুল পরিদর্শনে যাই। সেখানে কি দেখতে পাই রান্নাঘর অত্যন্ত নোংরা। রান্নাঘরের কয়েকটি থালা বাসন থাকলেও ৫০-৬০ বাসন আলাদা করে রাখা হয়েছে। কারণ জানতে চাইলে রাধুনীরা বলেন ওগুলো দলিতদের জন্য। দলিত পড়ুয়ারা ওই বাসনগুলো মাজে। তাদের ব্যবহৃত বাসন আর কেউ স্পর্শ করে না। এমনটাই জানায় রাধুনীরা। তারপর অভিযোগটি করতেই স্থানীয় সাংবাদিক ও প্রশাসনিক আধিকারিকেরা ব্যবস্থা নিতে তৎপর হয়ে ওঠে। ”
আরও পড়ুন: রোহিণী কোর্টে শুটআউটের ঘটনায় গ্রেফতার দুই
ওই গ্রামটিতে ৩৫ শতাংশ বাসিন্দাই দলিত সম্প্রদায়ের। হাতেগোনা রয়েছে উচ্চ বংশ ঠাকুর সম্প্রদায় । এছাড়া বাকি সকলেই অন্যান্য পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায় ভুক্ত বলে জানা গিয়েছে।
স্থানীয় সমাজবাদী পার্টি নেতা শুভম সিংহ বলেন, “দলিতদের উন্নয়নে বিজেপি অনেক কাজ করেছে বললেও সবই মিথ্যে। বাবাসাহেব আম্বেদকরের পর কয়েক দশক পেরিয়ে গেলেও আজও দলিতদের এই অবস্থা । এটাই উত্তরপ্রদেশের বাস্তবতা। “
আরও পড়ুন: বিহারে ‘মদ্যপ পুলিশে’র হাতে শ্লীলতাহানির শিকার নাবালিকা
এটাই প্রথম নয়, এর আগে যোগী রাজ্যে হাতরস কিংবা উন্নাওয়ে দলিত মহিলাদের সঙ্গে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলি আজও ভোলেনি দেশবাসী। তারমধ্যে এবার মৈনপুরার ঘটনা যোগীরাজ্যের বাস্তবতা আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখাল।