নয়াদিল্লি: এবার গুজরাত দাঙ্গার সঙ্গে কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে জড়িয়ে প্রচারে নামল বিজেপি। জড়ানো হয়েছে সোনিয়ার প্রয়াত রাজনৈতিক সচিব আহমেদ প্যাটেলকেও। শনিবার সাতসকালেই আসরে নেমেছেন বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র সম্বিত পাত্র। কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ পাল্টা বলেন, বিজেপি মৃত মানুষকেও রেহাই দেয় না। এটাই নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহদের কৌশল। সোনিয়া সম্পর্কে বিজেপির অভিযোগকে হাস্যকর বলে উড়িয়ে দেন কংগ্রেস নেতা।
এদিন সম্বিত বলেন, গুজরাত দাঙ্গায় তখনকার মুখ্যমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে জড়ানোয় হাত রয়েছে সোনিয়া গান্ধীর। মোদিকে অপমান করার জন্যই সোনিয়া তাঁর রাজনৈতিক সচিবকে আসরে নামিয়েছিলেন। আহমেদ প্যাটেলই তিস্তা শেতলওয়াড়, কয়েকজন পুলিস অফিসারকে টাকা দিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে বিপাকে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। সম্বিত বলেন, আহমেদ প্যাটেল কেবল একটি নাম। তাঁর চালিকা শক্তি ছিলেন বস সোনিয়া। তাঁর অভিযোগ, গোটাটাই গভীর ষড়যন্ত্র ছিল। তার হোতা কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। গুজরাত পুলিসের সিট বলেছে, ওই সময় গুজরাত সরকারকে ফেলে দেওয়ার চক্রান্ত হয়েছিল। তার অংশীদার ছিলেন আইনজীবী তিস্তা শেতলওয়াড়। আহমেদ প্যাটেল তাঁকে সাহা্য্য করেছিলেন।
সম্প্রতি মহারাষ্ট্র পুলিসের সিটের তদন্ত রিপোর্ট উল্লেখ করে সুপ্রিম কোর্ট গুজরাত দাঙ্গায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহকে ক্লিন চিট দিয়েছে। বলা হয়েছে, আইনজীবী তিস্তা শেতলওয়াড় এবং নিহত কংগ্রেস সাংসদের স্ত্রী ভুল তথ্য দিয়েছেন। তার পরেই অমিত শাহ এক সংবাদমাধ্যমে ইন্টারভিউ দিয়ে তিস্তাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করান। তার পরের দিনই গুজরাত পুলিসের স্পেশাল টিম তিস্তাকে গ্রেফতার করে। প্রসঙ্গত, ২০০২ সালে ওই দাঙ্গার সময় অমিত ছিলেন গুজরাতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেই সময় আদালতের নির্দেশে অমিত শাহকে জেলও খাটতে হয়। কংগ্রেসের অভিযোগ, বিজেপি এখন তারই বদলা নিতে উঠেপড়ে লেগেছে।
এদিন কংগ্রেসের মিডিয়া সেলের ভারপ্রাপ্ত জয়রাম রমেশ বিজেপির অভিযোগ খণ্ডন করে বলেন, প্রয়াত আহমেদ প্যাটেলের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ বিজেপি নেতাদের কল্পনাপ্রসূত। এটা নরেন্দ্র মোদির দায় এড়ানোর অদ্ভুত অপকৌশল মাত্র। জয়রামের অভিযোগ, তখনকার মুখ্যমন্ত্রী মোদির অপদার্থতার জন্যই গুজরাত দাঙ্গা এড়ানো যায়নি। তার জন্যই তখন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী মোদিকে রাজধর্ম পালন করার কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েছিলেন।
কংগ্রেস নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রীর রাজনৈতিক দূরভিষন্ধি এতটাই প্রকট যে, তিনি প্রয়াত নেতাকেও ছেড়ে দিতে রাজি নন। গুজরাত সরকারের এই সিট তার রাজনৈতিক প্রভুদের অঙ্গুলিহেলনে চলেছে। তাঁরা যেমন নাচিয়েছেন, সিট তেমনি নেচেছে। আমরা জানি, এর আগে গঠিত সিটের প্রধানকে কেমন করে পুরস্কৃত করা হয়েছিল। তিনি মোদিকে ক্লিন চিট দেওয়ার জন্যই পুরস্কার পেয়েছিলেন।
জয়রাম বলেন, মোদি এবং শাহ বছরের পর বছর ধরে যে অপকৌশল চালিয়ে আসছেন, তারই চিত্রনাট্য মেনে পুতুল তদন্তকারী সংস্থা রিপোর্ট তৈরি করেছে। তাতে মৃত ব্যক্তিকেও ছাড় দেওয়া হয়নি। কারণ তিনি তো আর আত্মপক্ষ সমর্থন করতে পারবেন না। তাঁর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ খণ্ডনও করতে পারবেন না।