কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রের অবনমনের কড়া সমালোচনায় এবার সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি এন ভি রমণা। আর কদিন বাদেই শুরু হতে চলেছে সংসদের বাদল অধিবেশন। তার আগেই আগামী সোমবার হতে চলেছে রাষ্ট্রপতি ভোট। সেই ভোটকে কেন্দ্র করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাক বিরোধী দলগুলি সর্বসম্মত প্রার্থী দিয়েছে। কিন্তু, দেশের শাসক দল বিজেপি সেই প্রার্থীকে হারাতে আদাজল খেয়ে নেমে পড়েছে। বিরোধী শিবিরের ছোটখাট বিভিন্ন দল এখন বিজেপি প্রার্থী দ্রোপদী মুর্মুকে সমর্থনের কথা জানাতে শুরু করেছে। এর পিছনে বিজেপির আগ্রাসন নীতিই কাজ করছে বলে অনেকে মনে করছেন। সেই পরিপ্রেক্ষিতে ভারতের প্রধান বিচারপতির এই মত বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ বলে অনেকে মনে করছেন।
রাজস্থান বিধানসভায় এক অনুষ্ঠানে রমণা শনিবার বলেন, দেশে এখন বিরোধীদের অবস্থান ক্রমশ তলিয়ে যাচ্ছে। পারস্পরিক শত্রুতা সুস্থ গণতন্ত্রের পক্ষে ক্ষতিকর। সারা ভারত লিগাল সার্ভিসেস অথরিটির ১৮-তম সম্মেলনে যোগ দিতে শনিবার জয়পুরে এসেছিলেন তিনি। তাঁর সঙ্গেই ছিলেন দেশের আইন ও বিচারমন্ত্রী কিরেন রিজেজু। তাঁকে পাশে বসিয়েই রমণা বলেন, সরকার ও বিরোধীদের পারস্পরিক বোঝাপড়া ও শ্রদ্ধার সম্পর্ক ক্রমশ উবে যাচ্ছে। রাজনৈতিক বিরোধী দলের অর্থ দিনদিন শত্রু হিসেবে চিহ্নিত হচ্ছে। এটা সুস্থ গণতন্ত্রের লক্ষণ নয়। আগে সরকার ও বিরোধী দলের মধ্যে একটা পারস্পরিক সম্মানের জায়গা ছিল। কিন্তু এখন বিরোধীদের অস্তিত্বই হারিয়ে যাচ্ছে।
আরও পড়ুন:ICSE 10th Result 2022: আজই আইসিএসই দশমের ফলপ্রকাশ, কোথায় কখন রেজাল্ট দেখা যাবে, জানুন
দেশের প্রধান বিচারপতির মতে, শক্তিশালী সংসদীয় গণতন্ত্রে বিরোধীদেরও শক্তিশালী রাখতে হয়। তিনি বলেন, মনে রাখতে হবে ভারত মানে সংসদীয় গণতন্ত্র, সংসদীয় সরকার নয়। সংখ্যার জোরে এখানে আইন পাশ হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রেই তার প্রয়োজন আছে কি না, কিংবা আইনের ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলিও পরীক্ষিত হয় না। ডঃ বি আর আম্বেদকরের কথা উদ্ধৃত করে রমণা বলেন, তিনি বলেছিলেন সংসদীয় গণতন্ত্র মানে সংখ্যাগুরুর শাসন নয়। সংখ্যাগুরুর শাসন তত্ত্বকথায় মানায়, কিন্তু তার বাস্তব প্রয়োগ অযৌক্তিক। কারণ এতে যারা সংখ্যায় কম, তাদের মতামতকে উপেক্ষা করার প্রবণতাই বেশি মাত্রায় দেখা যায় বলে অনুষ্ঠানে নাম না করে বিজেপি সরকারকে বেঁধেন ভারতের প্রধান বিচারপতি।