গুয়াহাটি : ‘অসমের গবাদি পশু সুরক্ষা বিল, মব লিঞ্চিংয়ের মতো ঘটনাকে আরও উৎসাহিত করার জন্য।’ বুধবার এই অভিযোগ করেন অসমের কংগ্রেস সাংসদ আবদুল খালেক। তিনি আরও বলেন, এতে গবাদি পশু পাচার চক্রের সংখ্যাও বাড়বে। তাঁর দাবি, গবাদি পশু হত্যা, খাওয়া ও পরিবহন নিয়ন্ত্রণের জন্য আনা এই বিলটি আদতে বিজেপি ও আরএসএসের এজেন্ডা, যাতে রাজ্যের কোথাও গোমাংস বিক্রি করা না যায়। ‘গবাদি পশু পরিবহনে বিভিন্ন বিধিনিষেধ আরোপের ফলে নতুন পারমিট রাজ তৈরি হবে। যা থেকে গবাদি পশু পাচার চক্র তৈরি হবে।’ এক সাংবাদিক সম্মেলনে এই দাবি করেন অসমের বরপেটার কংগ্রেস সাংসদ আবদুল খালেক। অসমে গো সুরক্ষা বিল ২০২১ পেশ করে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা বলেন, সরকার ১৯৫০ সালের গোসুরক্ষা আইন বাতিল করতে চায়। তিনি দাবি করেন, গোসুরক্ষা ইস্যুর মোকাবিলায় যথেষ্ট পরিমাণে আইনি বিধানের অভাব রয়েছে ওই আইনে। মুখ্যমন্ত্রীর পেশ করা ওই বিলে প্রস্তাব করা হয়েছে, যেকোনও হিন্দু, জৈন, শিখ ও গোমাংস খায়না এমন জাতি অধ্যুষিত এলাকায় গোমাংস কেনাবেচা করা যাবেনা। এছাড়াও মন্দির, সাতরা (বৈষ্ণব মঠ) অথবা অন্য কোনও অঞ্চল, যেখানে কর্তৃপক্ষ চায়না সেখানে গোমাংস কেনাবেচা করা যাবে না। তবে রাজ্য সরকার অবশ্য ধর্মীয় কারণে গবাদি পশু জবাই করার জন্য, নির্দিষ্ট কিছু উপাসনালয় বা নির্দিষ্ট অনুষ্ঠানকে ছাড় দিতে পারে। তবে সেখানেও গরু, বাছুরের মতো গবাদি পশু হত্যা করা যাবে না।
আরও পড়ুন : ‘গোরক্ষা’ আরএসএসের হিন্দুত্ব তাস: গৌরব গগৈ
এই বিল পেশ করার পর থেকেই সমালোচনায় মুখর হয় বিভিন্ন মহল। বিরোধী দলনেতা দেবব্রত সাইকিয়া মনে করেন, এই বিলের পিছনে কোনও রাজনৈতিক প্ররোচনা আছে। অসমের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী তরুণ গগৈয়ের পুত্র গৌরব গগৈ বলেন, অসমে গো সুরক্ষা আইন আগেই ছিল। নতুন আইনে উত্তরপ্রদেশের মতো বদল আনার চেষ্টা করা হচ্ছে। বিলটি নতুন ভাবে পাস করানোয় প্রভাব রয়েছে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সংঘের।
আরও পড়ুন : অসমে মন্দিরের আশপাশে গোমাংস বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা
এরপর সাংবাদিক সম্মেলনে কংগ্রেস সাংসদ আবদুল খালেক প্রশ্ন তোলেন, ‘কেন রাজ্যের বিজেপি সরকার ৪৭ ধারার উপর গুরুত্ব না দিয়ে শুধুমাত্র ৪৮ ধারার উপর গুরুত্ব দিচ্ছে?’ সংবিধানের 47 ধারায় বলা হয়েছে যে, রাজ্যগুলি চিকিত্সার প্রয়োজন ছাড়া মাদকজাতীয় পানীয় ও শরীরের জন্য ক্ষতিকারক মাদক সেবন ব্যবহার নিষিদ্ধ করার চেষ্টা করবে। মুখ্যমন্ত্রী কেন অ্যালকোহলও নিষিদ্ধ করছেন না?’ প্রশ্ন করার পাশাপাশি কংগ্রেস সাংসদের অভিযোগ, ‘অসমের বিজেপি সরকার পার্টির এজেন্ডা অনুযায়ী নীতি নির্ধারণকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে।’