কলকাতা: জ্বর ও শ্বাসকষ্টের সংক্রমণে গত ২৪ ঘণ্টায় আরও তিন শিশুর (Child) মৃত্যু হল শহরের (Kolkata) বিভিন্ন হাসপাতালে (Hospital)। একজনের মৃত্যু হয়েছে বি সি রায় শিশু হাসপাতালে (Bidhan Chandra Hospital)। বাকি দুই শিশুর মৃত্যু হয় কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে (calcutta medical college)। এই নিয়ে চলতি মরশুমে অন্তত ৩০ জন শিশুর মৃত্যু হয়েছে বলে বেসরকারি সূত্রের দাবি। তাদের মধ্যে অনেকেই অ্যাডিনো ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল বলে পরিবারের দাবি। স্বাস্থ্য মহল সূত্রের খবর, শনিবার থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত চারদিনেই জ্বর এবং শ্বাসকষ্টের উপসর্গ নিয়ে কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হওয়া ১৩টি শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
গত ২২ তারিখে অশোকনগরের শিশুটিকে বি সি রায় হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছিল। মঙ্গলবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটে মৃত্যু হয় তার। হাসপাতালের বিরুদ্ধে গাফিলতির অভিযোগ এনেছে পরিবার। বাড়ির লোকজন জানান, অক্সিজেন শেষ হয়ে যাওয়ার পর সঠিক সময় তা রিফিল করা হয়নি। তার ফলেই মৃত্যু হয় শিশুটির। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতাল থেকে কলকাতা মেডিক্যাল কলেজে নিয়ে আসা হয়েছিল সাত মাসের একটি শিশুকে। বুধবার সকালে শিশুটি মারা যায়। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত ওই শিশুটি হৃদযন্ত্রেরও সমস্যা ছিল বলে হাসপাতালের দাবি। হাওড়ার বগনানের বাসিন্দা ২২ দিনের একটি শিশু ১৬ ফেব্রুয়ারি জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে মেডিক্যালে ভর্তি হয়েছিল। মঙ্গলবার রাতে তার মৃত্যূ হয়।
আরও পড়ুন: Calcutta High Court: আপনাদেরও বিনিদ্র রাত কাটাতে হবে, মামলাকারীদের উদ্দেশে মন্তব্য বিচারপতির
রাজ্যে ক্রমেই বাড়ছে অ্যাডিনো ভাইরাসের আতঙ্ক। সংক্রমণে মূলত আক্রান্ত হচ্ছে শিশুরাই। এ নিয়ে ইতিমধ্যেই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর মঙ্গলবারই একটি দশ দফা নির্দেশিকা জারি করেছে। অ্যাকিউট রেসপিরেটরি ইনফেকশন বা এআরআই উপসর্গ থাকা শিশুরোগীদের জন্য করোনার সময়ের মতো হেল্পলাইন চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে স্বাস্থ্য ভবন।
ইতিমধ্যেই বি সি রায় শিশু হাসপাতাল সহ বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালে বেডের অভাবের অভিযোগ উঠেছে। বি সি রায় হাসপাতালেই একটি বেডে দু-তিন জন শিশুকে রাখা হচ্ছে। একই সঙ্গে সেই বেডেই থাকতে হচ্ছে মায়েদেরও। সরকারি হাসপাতালগুলিতে আউটডোরে শিশু সহ মায়েদের ভিড় উপচে পড়ছে।
পরিস্থিতি পর্যালোচনা করতে মঙ্গলবারই স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগমকে নবান্নে ডেকে জরুরি বৈঠক সারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নবান্ন সূত্রের খবর, পরিস্থিতি মোকাবিলায় কোনও রকম গাফিলতি বা অজুহাত বরদাস্ত করা হবে না। তাঁর নির্দেশ, সব সরকারি হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে পর্যাপ্ত বেডের ব্যবস্থা রাখতে হবে। নবান্নের বৈঠক সেরেই স্বাস্থ্যসচিব চলে যান বি সি রায় শিশু হাসপাতালে। সেখানে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বৈঠক করে তিনি ছোটেন স্বাস্থ্য ভবনে। সন্ধ্যায় আবার স্বাস্থ্যসচিব নবান্নে আসেন স্বাস্থ্য (শিক্ষা) অধিকর্তা দেবাশিস ভট্টাচার্যকে সঙ্গে নিয়ে। নবান্নে আরয় এক প্রস্থ বৈঠক হয়।