কলকাতা: সর্বদলীয় বৈঠকের পর বিরোধী দলগুলি একযোগে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের (State Election Commission) বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগড়ে দিলেন। বিরোধীদের দাবি, নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা (Rajiv Sinha) ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসে আছেন। রাজ্য সরকারের অঙ্গুলিহেলনে তিনি কাজ করছেন। বিরোধী নেতাদের অভিযোগ, এদিন সর্বদল বৈঠকে কোনও প্রশ্নেই সদুত্তর দিতে পারেননি রাজ্য নির্বাচন কমিশনার। তারা বলেন, কমিশন যেখানে মনোনয়ন পেশের সময়ই নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ, সেখানে ভোটের দিন কীভাবে ৮৭ হাজার বুথে নিরাপত্তা দেবেন, এত পুলিশ কোথায়? বৈঠক শেষে তৃণমূলের প্রতিনিধি অরূপ বিশ্বাস বলেন, বিরোধীরা পঞ্চায়েত ভোটে (Panchayat Election 2023) গোলমাল পাকানোর চেষ্টা করছে। তাদের সে চেষ্টা সফল হবে না।
এদিনই কলকাতা হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময়সীমা বাড়ানো হচ্ছে না। তবে আদালতের নির্দেশ, স্পর্শকাতর জেলাগুলিতে এখন থেকেই কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের করতে হবে। যে সাতটি জেলাকে কমিশন স্পর্শকাতর বলে চিহ্নিত করেছে, সেই জেলাগুলিতে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ যথাযত ভাবে পালন করতে বলা হয়েছে। বিরোধীদের দাবি, আদালতের এই নির্দেশ পালন করতে কমিশন সম্পূর্ণ ব্যর্থ হবে। গত চারদিনে কমিশনের ভূমিকা সেটাই স্পষ্ট করে দিয়েছে।
সর্বদল বৈঠক শেষে এদিন বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য বলেন, কমিশন শান্তিপূর্ণ ভাবে পঞ্চায়েত নির্বাচন করতে চাইছে না। কেন্দ্রীয় বাহিনী কবে আসবে, আদৌও আসবে কি না, কোনও প্রশ্নেরই জবাব দিতে পারেননি কমিশনার। জেলার পরিস্থিতি খারাপ। এখনও অন্তত ৫০টি ব্লকে মনোনয়ন জমাই পড়েনি। কত পুলিশ থাকবে সেটাও পর্যন্ত জানাতে পারেননি রাজ্য কমিশনার। শমীক বলেন, এবারের পঞ্চায়েত ভোটে লড়াই হবে, একতরফা নির্বাচন হবে না। কারণ মানুষের চোখ খুলে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: Panchayat Election 2023 | মনোনয়নের চতুর্থ দিনেও রক্ত ঝরল, দিনহাটায় গুলি
সিপিএম নেতা শমীক লাহিড়ী বলেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশনের উচিত ছিল আরও আগে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকা। সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আদৌ করাতে চাইছে না কমিশন। তারা রাজ্য সরকারের লেজুড়ের মতো আচরণ করছে। এবারের ভোটে মানুষ তাদের হক বুঝে নেবে। কমিশন রাজ্য সরকারের হাতের পুতুলে পরিণত হয়েছে। সিপিএম নেতা বলেন, বৈঠকে যে প্রশ্নই করা হয়, কমিশনার তার কোনও উত্তর দেননি। কমিশন কী চায় সেটাই বোঝা যাচ্ছে না।
কংগ্রেস নেতা তথা আইনজীবী কৌস্তভ বাগচী বলেন, প্রার্থীদের নিরাপত্তাহীনতার দিকে ঠেলে দিচ্ছে কমিশন। আদালত বলেছে রাজ্য পুলিশের সঙ্গে ভোটের সময় কেন্দ্রীয় বাহিনীও মোতায়েন করতে হবে। কেন্দ্রীয় বাহিনী আনার ক্ষেত্রে রাজ্যকে কোনও খরচ বহন করতে হবে না বলে হাইকোর্ট জানিয়ে দিয়েছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী নিয়ে কমিশনের সিদ্ধান্ত বোঝা যাবে, তারা আধা সামরিক বাহিনী আনতে কতটা আন্তরিক। পঞ্চায়েত ভোটকে প্রহসন পরিণত করার চেষ্টা হচ্ছে।