সিউড়ি: ছোট ছোট হাতে বই থাকার কথা। সে হাতে উঠেছে হাতুড়ি, ছেনি। পড়াশোনা শিকেয় তুলে পড়ুয়ারা দল বেঁধে পাথরের খনিতে। বীরভূমের মহম্মদ বাজারের পাথর শিল্পাঞ্চল এলাকার ঘটনা।
করোনার কারণে বহুদিন বন্ধ রয়েছে স্কুল। স্কুল খোলা থাকলে দৈনিক মিড ডে মিলের খাবারটুকু জুটত। একবেলার খাবার নিশ্চিত ছিল পড়ুয়াদের। স্কুল বন্ধ থাকায় সেটুকুও জুটছে না। মাসে চালটুকু জুটছে বটে কিন্তু পরিবারে অভাব নিত্য সঙ্গী। তাই সেখানকার শিশুরা লেখাপড়ার পাট সাময়িক বন্ধ রেখে ভাঙতে যাচ্ছে পাথর।
বীরভূমের মহম্মদ বাজার এলাকার অধিকাংশই পাথর শিল্পাঞ্চল। এখানেই রয়েছে ডেউচা পাচামি পাথর খনি। সেই খনি থেকে পাথর উত্তোলন হয়, ক্রাশারে ভাঙ্গা হয়। তবে তার আগে খাদানের বড় বড় পাথর হাতুড়ি মেরে নির্দিষ্ট মাপের করতে হয়। এই কাজই পরিবারের সঙ্গে করে বীরভূমের মহম্মদ বাজারের পাথর শিল্পাঞ্চল এলাকার হাই স্কুলের অধিকাংশ আদিবাসী পরিবারের সন্তানেরা।
দৈনিক ১০০ থেকে ১২০ টাকা মজুরিতে অথবা গাড়ির পিছু সাড়ে ৫ হাজার টাকা হারে কাজ করে তারা। আর এভাবেই দিন কাটে হরিণশিঙ্গা, পাচামি, তালবাঁধ গিরিজোর, দেওয়ানগঞ্জ প্রভৃতি এলাকার আদিবাসী শ্রমজীবী মানুষদের।
আরও পড়ুন: তোলাবাজির অভিযোগে পুলিশের গাড়ি আটকে বিক্ষোভ
করোনাকালে স্কুল বন্ধ রয়েছে। সব জায়গায় অনলাইনে ক্লাস হচ্ছে। এখানেও প্রথম দিকে চেষ্টা করা হয়েছিল অনলাইনে ক্লাস করানোর। তবে আদিবাসী এলাকায় সবসময় টাওয়ার থাকে না, আবার অনেকের মোবাইল কেনার সামর্থ্য নেই। তাই শিক্ষা থেকে দূরেই রয়েছে এলাকার কচিকাচারা।
করোনার প্রকোপ অনেকটাই কমেছে। স্কুল খোলার ব্যাপারে সরকার চিন্তা ভাবনা শুরু করেছে। তবে পাথর ভাঙার কাজে যুক্ত হয়ে পড়ায় ছাত্র ছাত্রীরা আর স্কুলমুখী হবে কিনা সে নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ রয়েছে স্কুলশিক্ষকদের।
আরও পড়ুন: বাম আমলের পঞ্চায়েত উপপ্রধান এখন ফুটপাতের ফল বিক্রেতা