নয়াদিল্লি: সম্প্রতি জিডিপি (GDP) বৃদ্ধি আশা জাগিয়েছে। মূল্যবৃদ্ধিও মাথা নামিয়েছে খানিকটা, কিন্তু তা শীর্ষ ব্যাঙ্কের সহনসীমা ৪ শতাংশের ঊর্ধ্বে। কর্মহীনতা, বৈষম্য ইত্যাদি নানা সমস্যার তীব্রতা ক্রমেই বাড়ছে। এহেন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বসছে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের (RBI) গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। এপ্রিল মিটিংয়ে রেপো রেট (REPO Rate) অপরিবর্তিত রেখেছিল শীর্ষ ব্যাঙ্ক। এবার কি কমবে শীর্ষ ব্যাঙ্কের নানা হার?
৬ থেকে ৮ জুন বসবে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের মনিটরি পলিসি কমিটি বা এমপিসি-র গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক। শীর্ষ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাসের (Shaktikanta Das) সভাপতিত্বে ছয় সদস্যের কমিটিতে আছেন ডেপুটি গভর্নর মাইকেল দেবব্রত পাত্র ও ব্যাঙ্কের অন্যতম কর্তা রাজীব রঞ্জন। অন্য তিনজন সদস্য কেন্দ্রীয় সরকার মনোনীত করেছে, তাঁরা হলেন জয়ন্ত বর্মা, অসীমা গোয়েল ও শশাঙ্ক ভিদে। বলাই যায়, রেপো রেট (REPO Rate), রিভার্স রেপো রেট (Reverse REPO Rate) ইত্যাদি ঠিক করতে বৈঠকে বসবে দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অর্থ-বিষয়ক কমিটি।
আরও পড়ুন: Char Dham Yatra 2023 | ২০ লক্ষ পুণ্যার্থীর চারধাম যাত্রা শেষ, জানাল উত্তরাখণ্ড সরকার
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক নানা বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ককে ২৪ ঘণ্টার মেয়াদে ঋণ দেয় এই ঋণে আরবিআই যে হারে সুদ নেয়, সেটাই রেপো রেট। ঋণ নেওয়ার সময় বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ককে কোনও সিকিউরিটি আরবিআই-এর কাছে বন্ধক রাখতে হয়, ধার শোধ হলে সেই সিকিউরিটি ফেরত পায় বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক। তবে কোনও সিকিউরিটি না রেখে ২৮ দিন পর্যন্ত মেয়াদে বাণিজ্যিক ব্যাঙ্ক ঋণ নিতে পারে। সেক্ষেত্রে সুদের হার বেশি হয়, তাকে বলে ব্যাঙ্ক রেট।
আবার রিজার্ভ ব্যাঙ্কও বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির থেকে টাকা ধার নেয় এক্ষেত্রে সুদ গুণতে হয় শীর্ষ ব্যাঙ্ককে। আরবিআই যে হারে বাণিজ্যিক ব্যঙ্ককে সুদ দেয়, তা-ই রিভার্স রেপো রেট। এসব রেট বা হার বাড়লে ব্যাঙ্কে সুদ বাড়ে, কমলে কমে।
খুচরো দামবৃদ্ধি মার্চে ছিল ৫.৭ শতাংশ, এপ্রিলে কমে ৪.৭ শতাংশ। পাইকারি মূল্যবৃদ্ধি ঋণাত্মক, অর্থাৎ দাম কমেছে। তবে এ বছরে কৃষি উৎপাদন কমার ঝুঁকি রয়েছে, থাকতে পারে এল-নিনোর প্রভাবও। সম্প্রতি পারচেজিং ম্যানেজার্স ইনডেক্স বেড়েছে। এতে ধরে নেওয়া যেতে পারে, কল-কারখানায় উৎপাদন বাড়বে। বাজারে টাকার চলাচল বাড়লে মূল্যবৃদ্ধি মাথা তোলার সম্ভাবনা। ব্রিটেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো দেশে মূল্যবৃদ্ধি রুখতে বেড়েই চলেছে ব্যাঙ্ক সুদ। এতে টাকার দাম আরও পড়তে পারে, বাড়বে আমদানির খরচ। এটাও মূল্যবৃদ্ধি ঘটাতে পারে। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস বলেছেন, মূল্যবৃদ্ধির সঙ্গে যুদ্ধ শেষ হয়নি। এই পরিস্থিতিতে জুন বৈঠকে রেপো ও রিভার্স রেপো রেট একই জায়গায় রাখাটাই বিবেচনার পথ, মনে করেন বিশেষজ্ঞদের অনেকেই।