নয়াদিল্লি: দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল (Delhi Chief Minister Arvind Kejriwal) তোপ দাগলেন বিজেপির (BJP) বিরুদ্ধে। তাঁর অভিযোগ, কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ইডি (ED), সিবিআই (CBI) এবং রাজ্যপাল পদের অপব্যবহার করছে। দেশজুড়ে যেখানেই বিরোধীদের সরকার চলছে, সেখানেই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে সরকার ফেলে দেওয়ার চক্রান্তে মেতেছে বিজেপি। মুখ্যমন্ত্রী এও বলেন, এভাবে বেশ কয়েকটি রাজ্যে তদন্তকারী সংস্থাগুলিকে বিরোধীদের পিছনে লেলিয়ে দিয়ে সরকার ফেলে দিয়েছে তারা।
রবিবার কংগ্রেস ছাড়া অন্য বিরোধী দলগুলির মিলিত প্রতিবাদপত্র দেওয়া হয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকে (PM Narendra Modi)। সেকথার উত্থাপন করে কেজরিওয়াল বলেন, প্রধানমন্ত্রী বেশ অভিনব পদ্ধতি নিয়েছেন। সেটা হল, বিরোধী রাজ্য সরকারগুলিকে কোনও মতেই শান্তিতে কাজ না করতে দেওয়া। তাদের পদে পদে গতি রোধ করে দেওয়া।
আরও পড়ুন: Manish Sisodia: সিসোদিয়াকে দুপুরে আদালতে তোলা হবে, ‘মানসিক যন্ত্রণা’ দিচ্ছে সিবিআই
কেজরিওয়াল আরও বলেছেন, জনসেবা করাই প্রধানমন্ত্রীর কাজ। সরকারি কাজ সুষ্ঠু ও নিরুপদ্রবে যাতে চলে তার সুব্যবস্থা করা তাঁর প্রধান দায়িত্ব। কিন্তু, এখানে আমরা দেখছি তিনি ঠিকই করে ফেলেছেন যে, দেশে একটাও বিজেপি-বিরোধী রাজ্য সরকার চালাতে দেবেন না। তাঁর দাবি, যখন যেখানেই অ-বিজেপি সরকার ক্ষমতায় এসেছে, সেখানে তখন থেকেই ইডি-সিবিআইকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে। বিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে তদন্তের নামে বিপর্যস্ত করা হয়েছে। তারা লোক ভাঙিয়ে নির্বাচিত সরকার ফেলে দিয়েছে। পদে পদে হেনস্তা করা হচ্ছে বিরোধী নেতাদের।
প্রসঙ্গত, আম আদমি পার্টির (AAP) নেতা মণীশ সিসোদিয়ার (Manish Sisodia) সিবিআই হেফাজতের মেয়াদ শেষ হচ্ছে সোমবার। এদিনই দুপুর ২টো নাগাদ তাঁকে আদালতে তোলা হবে। দিল্লির আবগারি দুর্নীতি তদন্তে গ্রেফতার হওয়া সিসোদিয়া প্রায় সপ্তাহখানেক ধরে সিবিআই হেফাজতে রয়েছেন। গ্রেফতারের পর তাঁকে আদালত প্রথম দফায় পাঁচদিনের হেফাজত দিয়েছিল। শনিবার তাঁকে আদালতে তোলার পর বিশেষ বিচারক এমকে নাগপাল সিসোদিয়াকে আরও ২ দিন সিবিআই হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেন।
আম আদমি পার্টির নেতা তথা দিল্লির প্রাক্তন উপমুখ্যমন্ত্রী মণীশ সিসোদিয়াকে গ্রেফতারির ঘটনায় বিরোধী দলগুলি যারপরনাই ক্ষুব্ধ। শুধু আম আদমি পার্টি নয়, বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে একের পর এক বিরোধী নেতা-নেত্রীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ এনে তদন্ত শুরু করে। এর মধ্যে বাদ যায়নি কোনও বিরোধী দলই। কংগ্রেস নেতা রাহুল এবং সোনিয়া গান্ধীও ছাড় পাননি। অথচ, মামলা চলাকালীন কিংবা তার ঠিক আগেই দলবদলু নেতাদের ছাড় দেওয়া হয়েছে, যার তালিকাটাও দীর্ঘ। এমনই অভিযোগ ৮টি বিজেপি-বিরোধী দলের।
বিরোধী দলে থাকলে অসৎ-দুর্নীতিগ্রস্ত। আর বিজেপিতে যোগ দিলে সেই লোকগুলোই হয়ে যায় স্বচ্ছ, পবিত্র গঙ্গাজলের মতো! বিজেপি কি একটা ওয়াশিং মেশিন? পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বহুবার এই অভিযোগ তুলেছেন বিজেপি এবং কেন্দ্রীয় সরকারি তদন্তকারী সংস্থাগুলির আচরণের প্রতিবাদে। এবার তৃণমূল নেত্রীর সুরেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জমাট বাঁধল। ৮টি বিরোধী দল মিলে মোদিকে চিঠি দিয়ে কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলির অপব্যবহার নিয়ে অভিযোগপত্র লিখেছে। যদিও দেশের প্রধান বিরোধী দল কংগ্রেস এই প্রতিবাদপত্রে স্বাক্ষর না করে নিজেকে সরিয়ে রাখার সিদ্ধান্ত নেয়।
প্রতিবাদপত্রে স্বাক্ষর করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কে চন্দ্রশেখর রাও, পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান, দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল, ন্যাশনাল কনফারেন্স নেতা ফারুক আবদুল্লা, এনসিপি নেতা শরদ পাওয়ার, শিবসেনার উদ্ধব ঠাকরে, সপা নেতা অখিলেশ যাদব এবং বিহারে উপমুখ্যমন্ত্রী তথা আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব।