নয়াদিল্লি: জম্মু-কাশ্মীর নিয়ে আজ, বুধবার লোকসভায় দুটি বিল পেশ করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Union Home Minister Amit Shah)। বিলের উপর আলোচনায় এদিন কাশ্মীর নিয়ে কংগ্রেস এবং রাহুল গান্ধীকে (Congress leader Rahul Gandhi) তুলোধনা করেন শাহ। তিনি বলেন, কিছু মানুষ আছেন যাঁরা সভায় ‘পড়ালিখা ভাষণ’ দিয়ে যান। কাশ্মীর নিয়ে জওহরলাল নেহরু ( Jawaharlal Nehru) এবং কংগ্রেসকে একতরফা আক্রমণে কংগ্রেস এমপি-রা ওয়াকআউটও করেন। শাহ বলেন, কাশ্মীরি পণ্ডিতদের উপর দিয়ে কী নির্যাতন ও যন্ত্রণা চলেছে তা কেউ কল্পনাও করতে পারবে না। তিনি জোর গলায় পাকিস্তান কাশ্মীরের (Pakistan Kashmir) যে অংশ দখল করে রেখেছে তা আমাদের।
এদিন জম্মু-কাশ্মীর (Jammu and Kashmir) সংরক্ষণ (সংশোধনী) বিল, ২০২৩ এবং জম্মু-কাশ্মীর পুনর্গঠন বিল, ২০২৩ পেশ করেন লোকসভায়। শাহ বলেন, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর দুই ভুলের ভুক্তভোগী হয়েছিল কাশ্মীর। একটি হল, যুদ্ধবিরতি এবং পরে কাশ্মীর ইস্যুকে রাষ্ট্রসঙ্ঘের দরজায় নিয়ে যাওয়া। যদি সেই সময় নেহরু সঠিক পদক্ষেপ নিতেন, তাহলে পাক অধিকৃত কাশ্মীর ভারতেরই অংশ থাকত। নেহরুর ঐতিহাসিক ভুল করেছিলেন।
আরও পড়ুন: সংখ্যালঘুদের এক থাকার বার্তা মমতার
অমিতের দাবি, ২০২৬ সালের মধ্যে কাশ্মীরে সন্ত্রাস বলে কিছু রাখা হবে না। এটা আমাদের সরকারের চ্যালেঞ্জ। ভূস্বর্গে জঙ্গি হামলায় প্রায় ৪৫ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। আমাদের লক্ষ্য ভূস্বর্গকে সন্ত্রাসমুক্ত করা। যাঁরা প্রশ্ন তোলেন ৩৭০ ধারা প্রত্যাহার করে কী লাভ হয়েছে? বছরের পর বছর ধরে যাঁদের কণ্ঠস্বর দেশের মানুষের কানে পৌঁছায়নি, তাঁদের কথা শুনেছেন প্রধানমন্ত্রী মোদি। আজ তাঁরা তাঁদের অধিকার ফিরে পেয়েছেন।
ইতিহাসের প্রসঙ্গ টেনে অমিত শাহ আরও বলেন, পাকিস্তান ভারত আক্রমণ করেছিল ১৯৪৭ সালে। সেই সময় ৩১,৭৮৯ পরিবার ঘরছাড়া হয়েছিলেন। ১৯৬৫ এবং ১৯৭১ সালে ১০ হাজার ৬৫টি পরিবার উদ্বাস্তু হন। এই বিল তাঁদের অধিকার ফিরিয়ে দেবে, তাঁদের প্রতিনিধিত্বের সুযোগ তৈরি করে দেবে।
১৯৮০-র জঙ্গিরাজের সময় কাশ্মীরি পণ্ডিতদের অবস্থা আরও দুর্বিষহ হয়। নিজের দেশেই তাঁরা শরণার্থী শিবিরে আশ্রয় নেন। জীবন কাটাতে হয় উদ্বাস্তু হিসেবে। আর যাদের এসব থামানোর দায়িত্ব, তাঁরা তখন ইংল্যান্ডে ছুটি কাটাচ্ছিলেন। এই বিল সেই সমস্ত শরণার্থীদের অধিকার দেবে, তাঁদের প্রতিনিধিত্ব দেবে লোকসভায়। তিনি আরও বলেন, কিছু মানুষ এসবকে খাটো করে দেখছেন। আসলে তাঁরাই এতদিন কাশ্মীরের মানুষকে ভোটব্যাঙ্ক হিসেবে ব্যবহার করে এসেছেন। আমি বিশ্বাস করি, ২০২৪ সালে আবার মোদি সরকার ফিরে আসবে। এবং কথা দিচ্ছি, ২০২৬ সালের মধ্যে কাশ্মীর থেকে জঙ্গিপনা উৎখাত করে দেব। এই দুটি বিলের একটিতে রয়েছে পাক অধিকৃত কাশ্মীর থেকে শরণার্থী হয়ে আসা মানুষের জন্য একটি বিধানসভা আসন সংরক্ষণ। আরেকটি হল কাশ্মীরি পণ্ডিতদের থেকে এক মহিলা সহ দুটি আসন সংরক্ষণ।