কলকাতা: অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর এবার তাঁর ঘনিষ্ঠ তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষ খোঁচা দিলেন কংগ্রেসকে। অসমে একটি স্থানীয় স্বশাসিত সংস্থার ভোটে তৃণমূল কংগ্রেসের থেকে কম ভোট পেয়েছে। সেই কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে অভিষেক কংগ্রেসকে আকাশ ছোঁয়ার স্বপ্ন দেখতে নিষেধ করেন কয়েকদিন আগে। তাঁর মন্তব্যের উপলক্ষ ছিল বাংলায় লোকসভা ভোটে কংগ্রেসের বেশি আসন চাওয়ার প্রসঙ্গ। সোমবার কুণাল বলেন, রাহুল গান্ধী-সহ কংগ্রেস নেতাদের রাজ্য রাজনীতির বেসলাইনটি স্মরণে রাখা দরকার। সেই বেসলাইন হল ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে কংগ্রেসের স্কোরশিট ছিল শূন্য।
এদিন কংগ্রেসের ভারত জোড়ো ন্যায় যাত্রার বাংলায় প্রবেশ নিয়ে কুণালের মতামত জানতে চাওয়া হয়েছিল। তৃণমূলের রাজ্য মুখপাত্র বলেন, পশ্চিমবঙ্গে গণতন্ত্র রয়েছে। কংগ্রেস একটি আলাদা রাজনৈতিক দল। কাজেই তারা পৃথক কর্মসূচি গ্রহণ করতেই পারে। রাহুল গান্ধী আসবেন তাঁর দলের কর্মসূচিতে শামিল হতে। তিনি আসতেই পারেন। তারপরই তিনি কংগ্রেস নেতাদের খোঁচা দিয়ে বলেন, বাংলার রাজনীতির ভিত্তিটা তাঁদের স্মরণে রাখা উচিত। ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটে তৃণমূল বিজেপিকে হারিয়েছিল। কংগ্রেস বাম এবং অন্যান্য শক্তির সঙ্গে জোট বেঁধে লড়াই করে মস্ত শূন্য পেয়েছিল। এটাই বাস্তব যে, তৃণমূলই বাংলায় বিজেপির বিরুদ্ধে নিরন্তর লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। রাহুল গান্ধীর এই বাস্তবতার কথা মাথায় রাখা উচিত।
আরও পড়ুন: তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে মহিলাকে মারধরের অভিযোগ
লোকসভা ভোটে বাংলায় তৃণমূলের সঙ্গে কংগ্রেসের আসন সমঝোতা হবে কি না, তা নিয়ে নানা চর্চা চলছে। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী থেকে শুরু করে দলের অধিকাংশ নেতা তৃণমূলের সঙ্গে আসন সমঝোতা বা জোটের বিরোধী। খোদ অধীর হাইকমান্ডকে জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি পদে থাকতে তৃণমূলের সঙ্গে কোনও সমঝোতা হতে দেবেন না। সেরকম হলে তাঁর বদলে অন্য কাউকে প্রদেশ সভাপতি পদে বসানো হোক। এমনকী অধীর এ কথাও জানিয়েছেন দিল্লিকে, দরকার হলে তিনি বহরমপুরে নির্দল প্রার্থী হয়ে লোকসভা ভোটে লড়াই করবেন।
ইন্ডিয়া জোট তৈরির পর থেকেই তৃণমূল বলে আসছে, গত লোকসভা ভোটে জেতা দুটি আসনের বাইরে একটি আসনও তারা কংগ্রেসকে ছাড়বে না। সোনিয়া গান্ধী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ফোন করলে তৃতীয় একটি আসন কংগ্রেসকে ছাড়া যেতে পারে। তাও সেই আসন বিজেপির জেতা। অধীর স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, মমতার দয়া দাক্ষিণ্য তাঁরা চান না। কংগ্রেস নিজের ক্ষমতায় লড়াই করবে। আসন সমঝোতা নিয়ে এখনও তৃণমূল এবং কংগ্রেসের মধ্যে টানাপড়েন চলছে। কংগ্রেস চায় ২০ জানুয়ারির মধ্যে আসন সমঝোতার বিষয়টি সেরে ফেলতে। কিন্তু প্রদেশ কংগ্রেস এবং রাজ্য তৃণমূল নেতাদের মধ্যে বাগযুদ্ধ অব্যাহতই রয়েছে।