খড়ার: খড়ার পুরসভার বিদ্রোহী চেয়ারম্যান অদ্যুৎ মণ্ডলকে বহিষ্কার (Kharar Municipality) করল তৃণমূল। বুধবার দলের রাজ্য নেতৃত্বের ঠিক করে দেওয়া চেয়ারম্যান সন্ন্যাসী দোলুইকে মানতে পারেনি দলেরই কাউন্সিলরদের একটি অংশ। তা নিয়ে তৃণমূলের দুই গোষ্ঠীর বিক্ষোভ-পালটা বিক্ষোভে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। ভণ্ডুল হয়ে যায় শপথ গ্রহণের অনুষ্ঠান। নতুন চেয়ারম্যানের জন্য ভোটাভুটিও হয়। বিজেপির দুই কাউন্সিলরের সমর্থনে চেয়ারম্যান হন অদ্যুৎ। তারপরই তড়িঘড়ি অদ্যুৎকে বহিষ্কারের (TMC expelled new chairman) কথা ঘোষণা করে তৃণমূল।
খড়ারে গোষ্ঠীকোন্দলের খবর পেয়ে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম (Firhad Hakim) বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দেন। তারপরই বিকেলে রাজ্য নেতৃত্বের নির্দেশে ঘাটাল সাংগঠনিক জেলা তৃণমূলের (TMC) সভাপতি আশিস হুদাইত অদ্যুৎকে বহিষ্কারের কথা ঘোষণা করেন। তিনি জানান, অদ্যুতের সঙ্গে যদি দলের কেউ কোনও সম্পর্ক রাখেন, তাঁর বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
খড়ারে পরিস্থিতি যে এরকম জায়গায় পৌঁছে যেতে পারে, তার কোনও আগাম আঁচ পাননি জেলা নেতৃত্ব। সূত্রের খবর, বিদ্রোহী কাউন্সিলরদের মধ্যে সকাল থেকেই তৎপরতা চলছিল। এদিনই নতুন চেয়ারম্যানের শপথ গ্রহণের কথা ছিল। বিক্ষোভে সেই অনুষ্ঠান ভণ্ডুল হয়ে যায়। রাজ্য নেতৃত্বের ঠিক করে দেওয়া চেয়ারম্যান ছিলেন সন্ন্যাসী দোলুই। তাঁকে কিছুতেই মেনে নেওয়া হবে না বলে বেঁকে বসেন ৭ নম্বর ওয়ার্ডের তৃণমূল কাউন্সিলর অদ্যুৎ মণ্ডলের অনুগামীরা। তা নিয়ে দুই গোষ্ঠীর মধ্যে তুমুল বচসাও হয়। পরে বিক্ষুব্ধদের চাপে পড়ে জেলা নেতৃত্বের সামনেই নতুন করে ভোটাভুটির ব্যবস্থা করা হয়। বিজেপির দুই কাউন্সিলর অদ্যুৎকে ভোট দেন। ফলে ৬-৪ ভোটে জয়ী হন অদ্যুৎ।
আরও পড়ুন: Kalna Municipality: দলীয় কোন্দলে কালনায় ভেস্তে গেল শপথগ্রহণ অনুষ্ঠান
যে বিজেপির সঙ্গে তৃণমূলের মূল লড়াই, সেই দলের কাউন্সিলরদের সমর্থনে অদ্যুতের জয়ী হওয়া কিছুতেই মেনে নিতে পারেননি তৃণমূল নেতৃত্ব। মুহূর্তের মধ্যেই রাজ্য নেতৃত্ব অদ্যুৎকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন। অবিলম্বে সেকথা জানিয়ে দিতে বলা হয় ঘাটাল জেলা সভাপতি আশিসকে। দলীয় সূত্রের খবর, অদ্যুৎকে বহিষ্কার করে নেতৃত্ব বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের বার্তা দিল যে, কোনওরকম বিদ্রোহ বরদাস্ত করা হবে না। অন্য যেসব পুরসভায় দলীয় নির্দেশ অমান্য করে বিক্ষোভ বা গোলমাল হচ্ছে, সেগুলির ক্ষেত্রেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে রাজ্য নেতৃত্ব জানিয়ে দিয়েছেন। এদিন সকাল থেকেই পুরসভার সামনে ছিল তুমুল উত্তেজনা। ঘটনাস্থলে হাজির ছিলেন ঘাটাল থানার ওসি, এসডিপিও প্রমুখ। মোতায়েন ছিল বিশাল পুলিসবাহিনী।