২০০৫ সাল থেকে এখন পর্যন্ত ইডি প্রায় ৬০০০ মামলা দায়ের করেছে। বিভিন্ন রাজ্যে, বিভিন্ন প্রান্তে মানুষজন সেসব মামলায় অভিযুক্ত হয়ে জেল খাটছেন, এবং এই ৬০০০ মামলার মধ্যে মাত্র ২৫টা, হ্যাঁ ২৫টা মামলার অভিযোগ সাব্যস্ত করা গেছে। মানে ইডি মামলা করল ৬০০০টা, তার ভিত্তিতে জেলে পোরা হল অসংখ্য মানুষকে আর ১৯ বছরে সেই ইডির তথ্যের ভিত্তিতে মাত্র ২৫টা মামলার, মানে দশমিক ৪২ শতাংশ মামলার কিনারা করা গেছে, শাস্তি বিধান করা গেছে। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই তথ্য। সারা দেশের দিক থেকে নজরটা এ রাজ্যে সরিয়ে আনুন, সেই কবে নারদা মামলা শুরু হয়েছে, তারও আগে সারদা থেকে রোজ ভ্যালি থেকে অসংখ্য চিট ফান্ডের মামলা, একটাতেও অভিযুক্তরা শাস্তি পেয়েছেন? একটা মামলারও কিনারা হয়েছে? টাকা ফেরত পেয়েছেন বিনিয়োগকারীরা? পাননি। তাহলে ইডি কী করছে? সিবিআই কী করছে?
আসলে ক্ষমতায় থাকা বিজেপি দলের ভরসা তাদের আদর্শের উপর নেই, তাদের সরকারের কাজের উপরে নেই, তাদের ভরসা ইডি-র উপর, সিবিআই বা ইনকাম ট্যাক্সের উপর, ইউএপিএ-র উপর। বিরোধীদের জেলে পুরে এক বিরোধী শূন্য দেশ চাইছে তারা। ছাত্র জেলে, শিক্ষক জেলে, সমাজকর্মী থেকে সাংবাদিক থেকে ব্যবসায়ী জেলে, বিরোধী রাজনৈতিক নেতারা জেলে। ছাড়া পাওয়ার শর্ত খুব সোজা, ঘাড় ঝোঁকাও, বিরোধিতা বন্ধ করো, বিনিময়ে জেল থেকে ছাড়া পাও।
মোডাস অপারেন্ডি, মানে এই ইডি সিবিআই ইত্যাদির কাজ কর্মের ধরন খুব সোজা, উপর থেকে হুকুম মেনেই বিরোধী নেতাদের টার্গেট করো, ডেকে পাঠাও, জেরা করো, মিডিয়াতে খবর দাও। তারপর এত টাকা আছে, এত সম্পদ আছে, ২০টা চালকল, ৩০০ কোটির ব্যাঙ্ক ডিপোজিট ইত্যাদির গল্প ছড়াও এবং মাথা নোয়ানোর প্রোপোজাল দাও। মাথা না নোয়ালে গ্রেফতার করো। এবং এই গ্রেফতারির পরে বেল নাকচ হবে, তারও পদ্ধতি বের করেছেন তাঁরা।
এই বানানো মামলা, তৈরি করা অভিযোগ আর চূড়ান্ত গণতন্ত্রহীনতা নিয়ে আজ আমাদের প্রতিবেদন শুরু করছি আমরা, ‘কারার ওই লৌহকপাট, ভেঙে ফেল কররে লোপাট’। কেন এখনই কেন? কারণ আমাদের সম্পাদক, কলকাতা টিভির মুখ্য সম্পাদক কৌস্তুভ রায় জেলে আছেন গত ২১৩ দিন। তাঁর বিরুদ্ধে বানানো অভিযোগ নিয়েই, তাঁর সঙ্গেই এইভাবেই যাঁরা বানানো অভিযোগের ভিত্তিতেই জেলে আছেন, তাঁদের মামলা আর আর এই চূড়ান্ত ধ্যাষ্টামো এখনই মানুষের সামনে তুলে ধরাটা দরকার বলে আমরা মনে করি। আমরা আমাদের কথা বলছি, আপনারা আপনাদের মতামত দিন।