জুয়ার নেশা মানুষকে সর্বস্বান্ত করে। বাংলার গ্রামীণ সমাজ বিচিত্র। জুয়া গ্রাম বাংলার কোথাও কোথাও সামাজিক অনুষ্ঠানের অঙ্গ। যেমন, পুরাতন মালদার মোকাতিপুরের একটি মেলা। এই মেলাজুড়ে ছড়িয়ে থাকে জুয়ার বোর্ড। আর জুয়াখেলায় অংশ নেন আবাল-বৃদ্ধ-বনিতা। জুয়াখেলা বেআইনি হলেও তাতে নাক গলান না উপস্থিত পুলিশকর্মীরা।
মেলা শুরুর আগে যষ্ঠীপুজো হয়। স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, পুজোর আগে জুয়াখেলা বারণ। মোকাতিপুরের এই মেলায় অবশ্য অন্যান্য সামগ্রীর দোকানও থাকে। আর ছড়িয়ে থাকে প্রচুর জুয়ার বোর্ড। সেখানে পুরুষরা তো বটেই, গৃহবধূ থেকে তরুণীরা পর্যন্ত জুয়ার স্বাদ নেন। নাবালক-নাবালিকারাও বাদ পড়ে না। অনেকে আবার শুধুমাত্র ভাগ্যপরীক্ষা করাতেই জুয়ার বোর্ডে হুমড়ি খেয়ে পড়েন। কপাল ভালো হলে জয়, কপাল খারাপ হলে বাজির টাকাটা স্রেফ জলে যায়।
আরও পড়ুন: Russia-Ukraine Conflict: আমেরিকা-রাশিয়ার মিলিটারি হটলাইন, ইউক্রেন নিয়ে কথা হয়েছে মাত্র একবার
মোকাতিপুরের মেলা বসে শীতকালে। মানুষ শীতের ওম নিতে নিতে মেলায় ঘোরেন। সকালে বসে মেলা। চলে রাতভর। আর সময় যত গড়ায় মানুষের ভিড়ও ততই উপচে পড়ে। এই মেলা স্থানীয় ধনীদরিদ্র সকল শ্রেণির মানুষের কাছেই সমান আকর্ষণীয়। জেলার বাইরে থেকেও অনেকে মেলায় আসেন। এমনকি বিহার, ঝাড়খণ্ড, অসম থেকেও বহু মানুষ মেলা দেখতে আসেন।
জানা গেল, মেলাজুড়ে জুয়াখেলা আরম্ভ হয় দুপুরের দিকে। গত মঙ্গলবার মুলাযষ্ঠীর দিন রীতিমতো মেলা বসেছে। লোকমুখে শোনা যায়, তুর্কিদের শাসনকাল থেকেই চলেছে মেলা। ইতিহাসের অনেক উত্থান-পতনের মধ্যে দিয়ে প্রাচীন মেলা আজও চলমান।
মেলায় আসা মহিলারা মা লক্ষ্মীকে সন্তান কামনায় পুজো দেন। এরপর মেলার পাশ দিয়ে বয়ে চলা সতীবেহুলা নদীর জলপান করেন। বাংলার গ্রামাঞ্চলে যে বিচিত্র সংস্কৃতি রয়েছে, মোকাতিপুরের এই মেলা তারই অন্যতম নমুনা।