বালেশ্বর: ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং পরিবর্তনের ভুলেই ভয়াবহ ট্রেন দুর্ঘটনার সাক্ষী বালেশ্বর। রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব রবিবার সকালে একথা জানিয়ে বলেন, কার ভুলে এতবড় ঘটনা ঘটেছে তাকে এবং মূল কারণটি আমরা চিহ্নিত করে ফেলেছি। কমিশনার অফ রেলওয়ে সেফটি এ বিষয়ে তদন্ত চালাচ্ছে। সেই রিপোর্ট আসার আগেই মূল কারণটি চিহ্নিত করা গিয়েছে। আজকের মধ্যে রেললাইন পরিষ্কার করে ফেলা হবে। প্রায় সব দেহই সরিয়ে নেওয়া গিয়েছে। বুধবার সকালের মধ্যে লাইন পূর্বাবস্থায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্য নেওয়া হয়েছে। তারপর থেকে ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক হবে। তিনি আরও বলেন, মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দুর্ঘটনার কারণ হিসেবে গতকাল যা বলেছিলেন তা ঠিক নয়। ইলেকট্রনিক ইন্টারলকিং বদলের ফলে তিনটি ট্রেনের সংঘর্ষ ঘটে।
এদিকে, ওড়িশার ট্রেন দুর্ঘটনা নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে একটি জনস্বার্থ আবেদন জমা পড়ল। সুপ্রিম কোর্টের একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে টেকনিক্যাল বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানানো হয়েছে। এই তদন্ত কমিশন ২ মাসের মধ্যে সুপ্রিম কোর্টে তাদের রিপোর্ট জমা দিক, এও আবেদনে বলা হয়েছে। কবচ নামে অটোম্যাটিক ট্রেন প্রটেকশন সিস্টেম যত দ্রুত সম্ভব গঠনের নির্দেশ দিক সর্বোচ্চ আদালত।
দুর্ঘটনাস্থলে এদিন যান কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। সেখানে তিনি বলেন, যত দ্রুত সম্ভব ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করাই আমাদের দায়িত্ব। যারা এই ঘটনার জন্য দায়ী তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি আরও জানান, উদ্ধারকাজ শেষ। আমরা স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে নিহত ও আহতদের ঘরে ফিরিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করছি। অন্যদিকে, লোকসভার দলনেতা অধীর চৌধুরী এদিন ঘটনাস্থলে গিয়ে এই ঘটনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং কেন্দ্রীয় সরকারকে সরাসরি দায়ী করেন।
রবিবার সকালে ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক ফোনে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। সাম্প্রতিক পরিস্থিতি নিয়ে তিনি জানান মোদিকে। মৃতদের পরিবারকে এককালীন মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিল থেকে এককালীন ৫ লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও এদিন জানান পট্টনায়ক। প্রধানমন্ত্রীও নবীনকে দ্রুত ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য ধন্যবাদ জানান। মোদি এদিনও রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণবকে ফোন করে উদ্ধারকাজ ও ঘটনাস্থলের পরিস্থিতি নিয়ে খোঁজখবর নেন। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী মনসুখ মাণ্ডব্য বালেশ্বরে পৌঁছে বলেন, প্রায় এক হাজার মানুষ জখম হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে ১০০ জনের অবস্থা গুরুতর। দিল্লি এইমস, লেডি হার্ডিঞ্জ এবং আরএমএল হাসপাতাল থেকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তাররা আধুনিক সরঞ্জাম নিয়ে পৌঁছে গিয়েছেন।