নয়া দিল্লি : ধর্ষিতা নাবালিকার গর্ভপাতের ক্ষেত্রে বেশ কিছু নির্দেশিকা বেঁধে দিল দিল্লি হাইকোর্ট (Delhi High Court)। ধর্ষণ এবং অন্য কোনও যৌন সংসর্গের কারনে গর্ভস্থ ভ্রূণের বয়স যদি ২৪ সপ্তাহের বেশি হয়ে যায় সেক্ষেত্রে এই নির্দেশিকা পুলিশকে অবশ্যই মেনে চলতে হবে বলে বুধবার রায় দিল্লি হাইকোর্ট (Delhi High Court)। বিচারপতি স্বর্ণকান্ত শর্মার (Swarana Kanta Sharma ) একক বেঞ্চ জানিয়েছেন, অপরিণত বয়সে যৌন সংসর্গ বা ধর্ষণের শিকার হলে তার মেডিক্যাল পরীক্ষার সময় অবশ্যই ইউরিন প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে হবে। তাতে যদি প্রেগন্যান্সি ধরা পড়ে এবং ওই নাবালিকা যদি গর্ভপাতের অনুমতি দেয় তবে, সেদিনই তদন্তকারী অফিসারকে তাকে মেডিক্যাল বোর্ডের সামনে হাজির করাতে হবে। আদালত বলেছে, মেডিক্যাল টার্মিনেশন অফ প্রেগন্যান্সি অ্যাক্টের (Medical Termination of Pregnancy Act.) ৩ নম্বর ধারা অনুযায়ী তা বাধ্যতামূলক।
আদালতকে জানানো হয় এই মুহূর্তে দিল্লির এইমস, রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতাল, সফদরজং এবং লোকনায়ক জয় প্রকাশ হাসপাতালে এই ধরনের মেডিক্যাল বোর্ড রয়েছে। বেঞ্চের নির্দেশ, বোর্ডের পরীক্ষার পর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে সেই রিপোর্ট পেশ করতে হবে। এ ব্যাপারে কোনও বিলম্ব হোক তা চায় না আদালত। সমস্থ রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলকে হাসপাতাল গুলিতে মেডিক্যাল বোর্ড গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছে দিল্লি হাইকোর্ট।
আরও পড়ুন:CV Ananda Bose & ‘Hatekhari’: রাজ্যপালের হাতে খড়ি ঘিরেও রাজনীতির ছোঁয়া, কটাক্ষ বাম, বিজেপির
আদালতের পর্যবেক্ষণ, অনেক জেলা হাসপাতালে এ ধরনের মেডিক্যাল বোর্ড নেই। এর ফলে তদন্তকারী অফিসার এবং সংশ্লিষ্ট ভুক্তভোগীকে অসুবিধায় পড়তে হয় পরবর্তী পরীক্ষা-নিরীক্ষায় অনেক দেরি হয়ে যায়। এ কথা মাথায় রেখেই যেসব সরকারি হাসপাতালে এমটিপি সেন্টার রয়েছে, সেগুলিতে অবিলম্বে মেডিক্যাল বোর্ড গঠন করতে হবে বলেও বেঞ্চের নির্দেশ। দিল্লি সরকারের স্বাস্থ্য দফতর এবং কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রককে দুমাসের মধ্যে এই নির্দেশিকা কার্যকর করতে বলা হয়েছে।
দিল্লি হাইকোর্ট এদিন একটি মামলা শুনছিল। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে ১৪ বছরের একটি মেয়ে ধর্ষণের শিকার হন। মামলাটি সেই ধর্ষণ সংক্রান্ত। গত ১৯ জানুয়ারি মেডিক্যাল পরীক্ষায় জানা যায় নাবালিকা ২৪ সপ্তাহের গর্ভবতী। পরের দিন শিশু কল্যাণ সমিতির দ্বারস্থ হন তদন্তকারী অফিসার। তার গর্ভপাতের অনুমতি চাওয়া হয় মেডিক্যাল বোর্ডের কাছে। কিন্তু বলা হয় এই পরিস্থিতিতে গর্ভপাত করা সম্ভব নয়। নাবালিকার মা হাইকোর্টে যান। মঙ্গলবার হাইকোর্ট মা-মেয়ের মতামত জানতে চায়। গর্ভপাতের পক্ষেই দুজন মত দেয়। রাম মনোহর লোহিয়া হাসপাতালের মেডিক্যাল বোর্ড জানায়, মেয়েটি শারীরিক ও মানসিক ভাবে সম্পূর্ণ সুস্থ। সেক্ষেত্রে গর্ভপাত করা যেতে পারে। এই সংক্রান্ত সুবিধা-অসুবিধার কথাও তাদের জানানো হয়। বেঞ্চ বলে, ওই হাসপাতালেই শুক্রবার বেলা ১১ টায় গর্ভপাত করা হবে। এরপরই দিল্লি হাইকোর্ট ওই নির্দেশিকা জারি করে।