কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোটের দিন বেলডাঙা ২ ব্লকের দু’টি বুথে সিসিটিভি ফুটেজ উধাও হয়ে যাওয়ার ঘটনায় অবাক কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমৃতা সিনহা। কীভাবে ওই ফুটেজ নষ্ট হয়েছে, তা হলফনামা দিয়ে বিডিওকে জানানোর নির্দেশ দেন বিচারপতি সিনহা। সিসিটিভি ফুটেজ না থাকলে ওই দুই বুথে পুনর্নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা কীভাবে বুঝবেন বিডিও, তাও হলফনামায় জানাতে বলা হয়েছে।
৮ অগাস্ট ওই পঞ্চায়েতে বোর্ড গঠনের নির্দেশ দিয়েছেন বিডিও। মঙ্গলবার বিচারপতি সিনহা জানান, এই মামলার পরবর্তী শুনানি ৩০ অগাস্ট। বোর্ড গঠন হলেও তার ভবিষ্যত নির্ভর করবে মামলার রায়ের উপর। ভোট এবং গণনার দিন ওই বুথে মারধর এবং গোলমালের অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হন সিপিএম প্রার্থী নাসিমা বিবি। অভিযোগ, বুথের বাইরে প্রচুর ব্যালট পেপার পাওয়া যায়। ওই এলাকায় অন্য কয়েকটি বুথে ফের ভোট করা হলেও ১১ এবং ১২ নম্বর বুথে পুনর্নির্বাচনের কোনও নির্দেশ দেওয়া হয়নি কেন, আদালতে সেই প্রশ্নও তোলেন মামলাকারীর আইনজীবী। এদিন আদালত ওই মামলায় সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসারকেও যুক্ত করার নির্দেশ দেয়।
আরও পড়ুন: কৌস্তুভকে আটকে রাখলে কলকাতা টিভি চালানো সমস্যা হবে, দাবি আইনজীবীর
কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ পঞ্চায়েত ভোটের আগেই নির্দেশ দিয়েছিল, সমস্ত বুথে সিসিটিভি রাখতে হবে, যাতে ভোটের পর প্রয়োজন হলে সেই সব সিসিটিভির ফুটেজ পাওয়া যায়। শুধু তাই নয়, গণনাকেন্দ্রেও সিসিটিভি বসানোর নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। কিন্তু ভোটের দিন দেখা গিয়েছে, বহু বুথে সিসিটিভির কোনও অস্তিত্বই ছিল না। আবার অনেক বুথে সিসিটিভি ভেঙে দেওয়া হয়েছে। একই ধরনের ঘটনা ঘটেছে গণনাকেন্দ্রেও। তা নিয়ে আদালতে একাধিক মামলা হয়েছে। ভোট এবং গণনা নিয়ে প্রায় ৭০টি মামলা রয়েছে কলকাতা হাইকোর্টে। ৩ অগাস্ট সেই সব মামলার একত্রে শুনানি হওয়ার কথা। প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ আগেই জানিয়েছে, রাজ্যে সমস্ত পঞ্চায়েতে জয় পরাজয়ের নিষ্পত্তি নির্ভর করবে মামলার ভবিষ্যতের উপর।
বিভিন্ন মামলার ক্ষেত্রে এবার বিডিও, এসডিওদের ভূমিকা আদালতের আতসকাচের আওতায় চলে এসেছে। ইতিমধ্যে উলুবেড়িয়ায় দুই বাম প্রার্থীর মনোনয়নপত্র বিকৃত করার অভিযোগ ওঠে বিডিও, এসডিও এবং অনগ্রসর কল্যাণ অফিসারের বিরুদ্ধে। আদালত এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি দেবীপ্রসাদ দে-র নেতৃত্বে ঘটনার অনুসন্ধানের দায়িত্ব দেয়। ওই বিচারপতি তাঁর রিপোর্টে সুপারিশ করেন, ওই তিনজনের বিরুদ্ধে এফআইআর করতে হবে, বিভাগীয় তদন্ত করতে হবে এবং তাঁদের সাসপেন্ড করতে হবে। গতকালই বিচারপতি অমৃতা সিনহা বলেন, এবার এসডিওদের বিষয়েও নজর দিতে হবে।