নয়াদিল্লি: কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের ধাক্কার পরও জিডিপি (Gross Domestic Product- GDP) বৃদ্ধির হার ২০.১ শতাংশ স্পর্শ করেছে৷ আগের বছর করোনার প্রকোপে তা মাইনাস ২৪.৪ শতাংশে নেমে গিয়েছিল৷ সেই ধাক্কা কাটিয়ে চলতি অর্থবর্ষের প্রথম ত্রৈমাসিকের মধ্যেই অর্থনীতিতে এই বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে মঙ্গলবার ন্যাশানাল স্ট্যাটিসটিক্যাল অফিসের (National Statistical Office- NSO) তরফে জানানো হয়েছে৷ কিন্তু, এই দাবি কি আশাপ্রদ? কেন্দ্রের এই দাবি কি উৎসাহ বৃদ্ধি করছে? সেই প্রশ্নই তুলে দিলেন অর্থনীতিবিদ কৌশিক বসু৷
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় সরকার জিডিপি’র যে হিসেবে প্রকাশ করেছে, সেই প্রসঙ্গে কৌশিক বসুর ব্যাখ্যা, সামান্য পাটিগণিতের হিসেবেই বোঝা যায়, আগের আর্থিক বছরে হার ছিল ২৪.৪%। এ-বছর সেটা মারাত্মক কমে হয়েছে ২০.১%। তার আগের বছরের (২০১৯) তুলনায় এবার বিকাশ মাইনাস ৯.২%।
গত বছর করোনার জন্য দেশজোড়া লকডাউন চলেছে৷ তারপরও চলতি বছর করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছে৷ তার ফলে নতুন করে বিধি-নিষেধ জারি করতে হয়েছে রাজ্যগুলিকে৷ এই অবস্থায় গত অর্থবর্ষে জিডিপি মাইনাসে নেমে যায়৷ সেখান থেকে এই এপ্রিল-জুনে তার ২০.১ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে বলে দাবি করেছে অর্থমন্ত্রক৷ কোভিডের আগে দেশের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি যা ছিল, সেখানে এখনও পৌঁছনো না গেলেও জিডিপির এই বৃদ্ধি আশাব্যঞ্জক বলে দাবি করছে কেন্দ্র৷
জিডিপি অর্থাৎ ‘মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন’ বা ‘আর্থিক বিকাশ’। চলতি এপ্রিল-জুনে জিডিপি ৩২,৩৮,০২০ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে৷ ২০১৯-২০ অর্থবর্ষের একই সময়ে তা ৩৫,৬৬,৭০৮ কোটি টাকা ছিল৷ দু’বছর আগের তুলনায় কম হলেও গত বছরের তুলনায় এটা বেশ ভাল বলে জানাচ্ছেন কেউ কেউ৷ গত বছর দেশব্যাপী লকডাউনের সময় এই এপ্রিল-জুনেই জিডিপি সঙ্কুচিত হয়ে ২৬,৯৫,৪২১ কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছিল৷
আরও পড়ুন: জাল দলিল দিয়ে দুয়ারের সরকারের ফর্ম ফিলআপ, গ্রেফতার ৫
কিন্তু, গতকাল অর্থমন্ত্রকের হিসেব প্রকাশের পরও থাকছে একাধিক প্রশ্ন৷ দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের বৃদ্ধির হার অতিমারির আগের মন্দা বিধ্বস্ত অবস্থাতেও পৌঁছায়নি৷ গত বছর অতিমারির কারণে লকডাউনের ফলে দেশের কলকারখানা-ব্যবসা বাণিজ্য সব কিছু বন্ধ থাকায় প্রথম ত্রৈমাসিকে অর্থনৈতিক ক্ষেত্র কোনও বৃদ্ধি ছিল না৷ উল্টে সঙ্কোচন ঘটে বিপুল হারে৷ চলতি বছরের প্রথম ত্রৈমাসিকে শিথিল হয়েছে লকডাউন৷ কলকারখানা খুলেছে৷ উৎপাদন-ব্যবসা চালু হয়েছে৷ ফলে বন্ধ অবস্থা থেকে বৃদ্ধি বেড়েছে৷ তবে, বৃদ্ধির যে হার দেখা গিয়েছে, তা আশাপ্রদ নয় বলেই মনে করেছে আর্থিক মহল৷
রিজার্ভ ব্যাঙ্ক আগেই জানিয়েছিল, প্রথম ত্রৈমাসিকে বৃদ্ধির হার দাঁড়াবে ২১.৪ শতাংশ৷ বৃদ্ধির হার তার থেকে অনেক কম ২০.১ শতাংশ৷ পাশাপাশি সরকারি তথ্যে দেখা গিয়েছে, অতিমারির আগে মন্দার সময় বিধ্বস্ত অর্থনীতির জিডিপি বৃদ্ধির হার কমে যেখানে পৌঁছেছিল, তার ধারে কাছে পৌঁছায়নি আর্থিক বৃদ্ধির হার৷
আরও পড়ুন: আফগানিস্তান থেকে সেনা সরানো বুদ্ধিমানের কাজ: বাইডেন