কলকাতা: প্রতারণা মামলায় মুখ পড়ল বিজেপির। আইনজীবী পরিচয় দিয়ে এক ব্যক্তির থেকে ধাপে ধাপে ৬ লক্ষ টাকা নেওয়ার অভিযোগে বৃহস্পতিবার বিজেপি নেত্রী নাজিয়া ইলাহি খানকে গ্রেফতার করেছে কলকাতা পুলিশ। যা নিয়ে রাজ্য রাজনীতি সরগরম হয়ে উঠেছে। সূত্রের খবর, ধৃতকে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনে প্রার্থী করার চিন্তাভাবনা করেছিল বঙ্গ বিজেপি। এমনকি দুদিন আগেও বিজেপি মজদুর সেলের ত্রিপুরার এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন নাজিয়া।
শুধু তাই নয়, ২০১৮ সালের পর থেকে একাধিক নির্বাচনে বিজেপির ‘মাইনোরিটি মুখ’ হিসাবে রাজ্যের মুসলিম অধ্যুষিত এলাকায় শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে আক্রমণাত্মক ভূমিকা নিতে দেখা গেছে তাকে। স্বাভাবিকভাবেই তার গ্রেপ্তারের খবর প্রকাশ পেতেই ফের মুখ পুড়লো বিজেপির। যে বিজেপি রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ‘দুর্নীতি,তোলাবাজি-প্রতারণা’র অভিযোগ করে, সেই দলের রাজ্য সভাপতি থেকে শুরু করে একাধিক পদস্থ নেতাদের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ থাকা নেত্রী ‘প্রতারণা’র গ্রেপ্তার হলেন!
আরও পড়ুন- নার্সদের জন্য ‘প্র্যাকটিশনার সিস্টার’ পদ ঘোষণা মমতার, দেওয়া হবে জমি
‘প্রতারণা’র অভিযোগে এদিন নাজিয়াকে গ্রেফতার করেছে গিরীশ পার্ক থানা। নাজিয়া ইলাহি খান বিজেপির আইনজীবী সেলের সঙ্গে যুক্ত। সূত্রের খবর অনুযায়ী, নিজেকে আইনজীবী পরিচয় দিতেন তিনি। এরপর তিনি নিজের হোয়াটসাঅ্যাপে একটি স্টেটাস দিয়ে দাবি করেন ভারতীয় রেল বিভাগের ভাইস-চ্যেয়ারম্যান হিসেবে নিয়োগ করা হয়েছে তাকে। এরপর তিনি ভারতীয় রেল বিভাগের ভাইস-চ্যেয়ারম্যান বলেও পরিচয় দিতেন। এই পরিচয়েও অনেকের সঙ্গে প্রতারণা করেন বলে অভিযোগ।
আরও পড়ুন- বারাসতে ভ্যাকসিন নিতে গিয়ে তৃণমূলকে মারধর তৃণমূলের
সূত্রেরখবর, নিজেকে আইনজীবী পরিচয় দিলেও তিনি আইনজীবী নন। এমনটাই দাবি করেন আইনজীবীরা। ২০২০ সালে তাঁর বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগও দায়ের করা হয় আইনজীবীদের তরফে। গিরীশ পার্ক থানা ছাড়াও বিভিন্ন থানায় দায়ের হয় অভিযোগ। এরপর পুলিশ ওই নেত্রীকে থানায় ডাকে। কিন্তু, দীর্ঘদিন তদন্তে অসহযোগিতার ওঠে।
আরও পড়ুন-নিম্নমুখী কোভিড গ্রাফ, এখনই উপনির্বাচনের দাবিতে নির্বাচন কমিশনের ‘দুয়ারে’ তৃণমূল
আইনজীবীরা ছাড়াও তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন সন্দীপ আগরওয়াল নামে ভিআইপি রোডের এক বাসিন্দা। তাঁর অভিযোগ, দাম্পত্য মামলা মেটানোর জন্য তিনি ৬ লক্ষ টাকা দেন নাজিয়াকে। অথচ দাম্পত্যের সমস্যা মেটেনি। তখন ঐ ব্যক্তি টাকা ফেরত চাইলে তাঁকে হুমকিও দেওয়া হয়। এরপর তিনি থানায় অভিযোগ করেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতেই শুরু হয় তদন্ত। এরপর বৃহস্পতিবার বিজেপি নেত্রী নাজিয়া এলাহি খানকে নিজের বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।