কলকাতা: এই পরিবর্তন তাঁরা চাননি বলে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Mamata Banerjee Chief Minister of West Bengal) খোলা চিঠি দিচ্ছেন অপর্ণা সেন (Aparna Sen) সহ বিশিষ্ট কয়েকজন বুদ্ধিজীবী। বৃহস্পতিবার ভারতসভা হলে গণতান্ত্রিক অধিকার রক্ষা সমিতির এক সভার পর ওই চিঠিটি পাঠ করেন অপর্ণা । পরে তিনি বলেন, এই পরিবর্তন আমরা চাইনি। সাম্প্রতিক পঞ্চায়েত ভোটে যে হিংসার যে ছবি ফুটে উঠেছে, মুখ্যমন্ত্রী তার দায়ে এড়াতে পারেন না।
অপর্ণা বলেন, এই রক্তস্নাত কসাইখানা আমার দেশ না। এই জল্লাদের উল্লাসমঞ্চ আমার দেশ না। আমার মন ভেঙে গিয়েছে। আমি অনেকভাবে প্রতিবাদ করেছি, চেষ্টা করেছি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে। প্রবীণ এই অভিনেত্রী এবং পরিচালক জানান, তিনি শুধু মানুষের সঙ্গে থাকতে চান। তিনি কোনও রাজনৈতিক দলের সঙ্গে যুক্ত নন, তাঁর কোনও রং নেই। পঞ্চায়েত ভোটে যে ভাবে রক্ত ঝরেছে তা দেখে অভিনেত্রী মর্মাহত।
মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা ওই খোলা চিঠিতে, বলা হয়েছে, পঞ্চায়েত ভোটকে কেন্দ্র করে গত প্রায় দেড়মাসে ৫৫ জনের প্রাণ গিয়েছে। বহু মানুষ নিখোঁজ। এখনও অনেকে ঘরছাড়া। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হিসাবে আপনি এই দায় কোনও ভাবেই অস্বীকার করতে পারেন না। রাজ্য নির্বাচন কমিশনের সাংবিধানিক দায়িত্ব অস্বীকার না করেও বলা যায়, অরাজকতার দায়িত্ব মূলত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের এবং আপনার। অপর্ণা বলেন, আমি ইতিমধ্যে সই সংগ্রহ শুরু করে দিয়েছি। ভাবতে ভালো লাগছে যে আর বেশিদিন বাঁচতে হবে না। গণতন্ত্র আর অবশিষ্ট নেই। সব শেষ।
আরও পড়ুন: Manipur |CM | অপরাধীরা ছাড় পাবে না, মৃত্যুদণ্ড পাবে, আশ্বাস মুখ্যমন্ত্রীর
তৃণমূল সাংসদ শান্তনু সেন বলেন, অপর্ণা দেবীর মনে রাখা উচিত, বাম আমলে বিভিন্ন নির্বাচনে কম সন্ত্রাস হত না। তৃণমূল প্রতিহিংসার রাজনীতি করে না বলে ১২ বছর ক্ষমতায় থাকার ফলে এই পঞ্চায়েত ভোট আমাদের কর্মীদেরই বেশি ম়ৃত্যু হয়েছে। অপর্ণা বলেন, সব রাজনৈতিক দলকেই দুর্নীতিগ্রস্ত বলে আখ্যা দেন। তাঁর মতে, সব দলই সমান দুর্নীতিগ্রস্ত। ২০১১ সালে পালা বদলের আগে পরিবর্তনের দাবিতে যে সব বুদ্ধিজীবী পথে নেমেছিলেন, তাঁদের মধ্যে প্রথম সারিতে ছিলেন অপর্ণা। নন্দীগ্রামে জমি আন্দোলন পর্বে মমতার সঙ্গে তিনি বহুবার সেখানে গিয়েছেন, জঙ্গলমহলেও তিনি এবং অন্য বুদ্ধিজীবীরা মমতার সঙ্গী হয়েছিলেন।