কলকাতা: গঙ্গাসাগর মেলার (Gangasagar Mela) রায়কে কেন্দ্র করে কলকাতা হাইকোর্টের (Kolkata High Court) বিরুদ্ধে সরাসরি পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ আনলেন রাজ্য বিজেপি-র মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য (Samik Bhattacharya)। হাইকোর্টের গঙ্গাসাগর কমিটি থেকে কেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে বাদ দেওয়া হল, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে মঙ্গলবার বেনজির আক্রমণ করেন শমীক ভট্টাচার্য। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্রের অভিযোগ, ‘রাজ্য যেমন চাইছে, আদালত তেমন রায় দিয়েছে।’ শমীকের এই মন্তব্য হাইকোর্টের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলারই শামিল। শমীকের কথায়, ‘আদালতের রায় দুর্ভাগ্যজনক।’
মঙ্গলবারই গঙ্গাসাগর মেলা নিয়ে রায় দিয়েছে হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ। গঙ্গাসাগর সংক্রান্ত কমিটিতে শুভেন্দু অধিকারীকে রাখা নিয়ে একাধিক পিটিশন জমা পড়ায়, নতুন রায় ঘোষণার সময় আগের কমিটিই বাতিল করে দেওয়া হয়। সেখানে শুধুমাত্র শুভেন্দু অধিকারীকে বাদ দেওয়া হয়নি। কমিটিতে কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বকে রাখা হয়নি। হাইকোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি সমাপ্তি চট্টোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে দুই সদস্যের এই কমিটি গড়া হয়। কমিটির অপর জন পশ্চিমবঙ্গ লিগাল এইড কমিটির সদস্য। শুধু শুভেন্দু নন, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যানকেও আগের কমিটিতে রাখা হয়েছিল। যদিও রাজ্যে মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান এখনও পর্যন্ত নিয়োগ করা হয়নি। তাই আগের কমিটি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল।
বিজেপি নেতা শমীক ভট্টাচার্য যদিও এর মধ্যে ষড়যন্ত্র দেখছেন। শমীকের মন্তব্য, ‘শুভেন্দু অধিকারীকে কমিটি থেকে বাদ দেওয়া একটা ঘৃ্ণ্য ষড়যন্ত্র। এটা অনভিপ্রেত ঘটনা।’ ষড়যন্ত্রের আঙুল তিনি তুলেছেন রাজ্যের শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের দিকে। শমীক ভট্টাচার্যের কথায়, ‘তৃণমূলের ষড়যন্ত্রেই হাইকোর্টের কমিটি থেকে শুভেন্দু অধিকারী বাদ পড়েছেন।’ বিগত এগারো বছরে এই সরকারের রূপ বদল হয়নি বলেও তাঁর অভিযোগ।
আরও পড়ুন: Gangasagar: শর্তসাপেক্ষে গঙ্গাসাগর মেলার অনুমতি দিল হাইকোর্ট
হাইকোর্ট কেন গঙ্গাসাগর মেলার অনুমতি দিল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপির মুখপাত্র। একই সঙ্গে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেছেন। শমীকের কথায়, ‘মুখ্যমন্ত্রী লোকজনকে ঘর থেকে বেরোতে বারণ করছেন। অথচ, গঙ্গাসাগর মেলা চলছে। সরকারের এই গাফিলতিতে সাধারণ মানুষকে ভুগতে হবে। এই সরকারের কাছে মানুষের জীবনের কোনও দাম নেই।’ শমীকের আশা, হাইকোর্ট রায় পুনর্বিবেচনা করবে।
এদিন শর্তসাপেক্ষেই গঙ্গাসাগর মেলায় ছাড়পত্র দিয়েছে হাইকোর্ট। মেলায় যাওয়ার ৭২ ঘণ্টা আগে পুণ্যার্থীদের আরটি-পিসিআরল টেস্ট বাধ্যতামূলক। সেই রিপোর্ট নেগেটিভ আসার সঙ্গে কোভিডের দু’টি ডোজ নেওয়ার শংসাপত্র থাকলে, তবেই গঙ্গাসাগরে যাওয়ার অনুমতি মিলবে। সাগরদ্বীপকে নোটিফায়েড জোন হিসেবেও ঘোষণা করার কথা বলেছে হাইকোর্ট। আগের রায় ঘোষণার সময় সরকার যে কোভিড বিধির উল্লেখ করেছিল, সাগরমেলায় তা কার্যকর করতে হবে রাজ্যের মুখ্যসচিবকে। আদালত নিযুক্ত দুই সদস্যের কমিটি সে দিকে নজর রাখবে।