কলকাতা: টার্গেট পশ্চিমবঙ্গ। ভোটে হারার পরও জমি ছাড়তে নারাজ সঙ্ঘ পরিবার। বাংলায় শক্ত ঘাঁটি বানাতে চায় রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ (RSS) ৷ চিত্রকূটে পাঁচ দিন ধরে সঙ্ঘের মহামন্থন বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়েছে। তৈরি হয়েছে ব্লু-প্রিন্ট৷ সেই লক্ষ্যে বাংলায় আরএসএসের নেতৃত্বে বড় পরিবর্তন আনা হয়েছে৷ এ’বার সংগঠনকে আরও মজবুত করতে তিনটি নতুন সদর দফতরের তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে সঙ্ঘ পরিবার। এ’ছাড়াও মুসলিমরা থাকেন এমন সংখ্যালঘু এলাকায় সংগঠনের শাখা তৈরির সিদ্ধান্ত নিয়েছে মহামন্থন। দেশে সবমিলিয়ে আড়াই লক্ষ নতুন শাখা তৈরি করবে রাষ্ট্রীয় স্বয়ং সেবক সঙ্ঘ (RSS)।
আরও পড়ুন: কোভিড নিয়ে চিন্তায় রাখছে উত্তর ২৪ পরগণা, দার্জিলিং, কলকাতা
উত্তর কলকাতার মানিকতলায় দীর্ঘদিন ধরে আরএসএসের একটি সদর দফতর আছে৷ নাম কেশব ভবন৷ আরএসএসের সাংগঠনিক কাজকর্ম মূলত সেখান থেকেই পরিচালিত হয়৷ সংগঠনে কেশব ভবনের নিয়ন্ত্রণ কমাতে এ’বার রাজ্যের আরও তিন জায়গায় তৈরি হবে আরএসএসের সদর দফতর৷ এ জন্য পশ্চিমবঙ্গকে তিনটি জোনে ভাগ করেছে নেতৃত্ব- উত্তর, মধ্য এবং দক্ষিণবঙ্গ৷ ওই তিন জায়গায় তৈরি হবে সঙ্ঘের নতুন সদর দফতর৷ আলাদা আলাদ জোনের সাংগঠনিক কাজকর্ম নিয়ন্ত্রণ করবে ওই নির্দিষ্ট এলাকার সদর দফতর৷ ঠিক হয়েছে, কলকাতা, বর্ধমান এবং শিলিগুড়িতে সদর দফতর খুলবে আরএসএস৷ সূত্রের খবর, সঙ্ঘের নয়া দফতরগুলি মুরলীধর লেন স্ট্রিটের সঙ্গে সম্বনয় বাড়ানোর কাজ করবে৷
আরও পড়ুন: এবার জালে ‘ভুয়ো’ সেনা, চাকরির নামে লক্ষাধিক টাকা প্রতারণা
বঙ্গে আরএসএসের নতুন সদর দফতর খোলার মধ্যে রাজনৈতিক চাল দেখতে পাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা৷ সবাই জানে, আরএসএস বিজেপির ধাত্রী সংগঠন৷ দলের নীতি-নির্ধারণে সঙ্ঘ নেতাদের বড় ভূমিকা থাকে৷ এমনকি বিজেপির রাজ্য সভাপতিরা সঙ্ঘ থেকেই উঠে আসেন৷ সঙ্ঘের কাজকর্ম মূলত সমাজকল্যাণমূলক কাজেই সীমাবদ্ধ থাকে৷ তাদের লক্ষ্যই থাকে নিচু স্তরের মানুষের কাছে জনকল্যাণমূলক পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার৷ সুতরাং সঙ্ঘের জনসংযোগ বাড়লে তার সুফল পাবে বিজেপি৷ এ’ছাড়া মুসলিমরা বসবাস করেন এমন এলাকায় শাখা বিস্তারের পরিকল্পনা করেছে আরএসএস।
আগামী বছর উত্তরপ্রদেশে বিধানসভা নির্বাচন। যা ২০২৪-এর আগে কার্যত সেমিফাইনাল। যোগী সরকারের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং প্রশাসনিক কাজকর্ম নিয়ে ইদানীং বিস্তর বিতর্ক তৈরি হয়েছে। কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ের পর দেশে-বিদেশে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ভাবমূর্তি অনেকটাই তলানিতে। এ রকম সময়ে কোনও রকম ঝুঁকি নিয়ে চাইছে না আরএসএস। দেশের যেখানে যেখানে সংখ্যালঘু জনবসতি বেশি সেগুলোকেই আলাদা করে চিহ্নিত করছে সংগঠন। এই সব এলাকায় সব মিলিয়ে আড়াই লক্ষ শাখা বিস্তারের পরিকল্পনা করা হয়েছে। বিরোধীরা যাকে সঙ্ঘের গৈরিকীকরণ অভিযান হিসেবেই দেখছে।