কলকাতা: ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের রিপোর্টকে ‘ভুল’ প্রমাণ করতে চায় রাজ্য সরকার৷ তারই প্রস্তুতি শুরু করে দিল নবান্ন৷ শাসকদলের অভিযোগ, উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে রিপোর্ট তৈরি করেছে কমিশন৷ বাংলাকে বদনাম করা হয়েছে৷ তাই এবার কমিশনের রিপোর্টের সত্যতা যাচাই করবেন রাজ্য পুলিশের উচ্চপর্যায়ের এক আধিকারিক৷ সূত্রের খবর, আজ শনিবার নবান্নে স্বরাষ্ট্র সচিবের নেতৃত্বে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠক হয়৷ সেখানেই ঠিক হয়েছে, উচ্চপদস্থ আমলাকে দিয়ে রিপোর্টের সত্যতা যাচাই করা হবে৷
আরও পড়ুন: রবীন্দ্রনাথের বাংলায় হিংসা, ভিটেছাড়া মানুষ, সিবিআই তদন্ত চায় জাতীয় মানবাধিকার কমিশন
চলতি সপ্তাহে ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দিয়েছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন৷ তাতে বলা হয়েছে, রবীন্দ্রনাথের মাটিতে হিংসার শিকার হয়েছেন বহু মানুষ। শ্লীলতাহানি, খুন, ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেছে। প্রচুর মানুষকে ভিটেছাড়া হতে হয়েছে। কমিশনের রিপোর্টের পরই গর্জে ওঠেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি জানান, সরকারেরও অনেক কিছু বলার আছে৷ তবে যা বলার আদালতে বলা হবে৷
আরও পড়ুন: নিশীথ প্রামাণিক কি ‘বাংলাদেশি’? কংগ্রেস সাংসদের চিঠিকে হাতিয়ার করছে তৃণমূল
মুখ্যমন্ত্রীর কথা মতো কমিশনকে পাল্টা পুঙ্খানুপুঙ্খ জবাব দিতে স্বরাষ্ট্র দফতরের আধিকারিকদের নির্দেশ দেওয়া হয়৷ কীভাবে জবাব দেওয়া হবে সেই রূপরেখাও তৈরি৷ সূত্রের খবর, কমিশনের রিপোর্টকে তিনটি পর্যায়ে ভাগ করে নেওয়া হবে। ভোট পূবর্বতী, ভোট পরবর্তী এবং তার পরের পর্যায়৷ ২৬ ফেব্রুয়ারি ভোটের দিন ঘোষণা করে নির্বাচন কমিশন৷ সেই দিন থেকে রাজ্যে চালু হয়ে যায় আদর্শ আচরণবিধি৷ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা তখন কমিশনের নিয়ন্ত্রণে৷ এই সময়টা ভোট পূবর্বতী সময় বলে বিবেচিত হবে৷
আরও পড়ুন: মানবাধিকার কমিশনের বিরুদ্ধে মামলার হুঁশিয়ারি তৃণমূল নেতাদের
এর পর ২ মে ফল ঘোষণা হয়৷ মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় শপথ নেন ৫ মে৷ মুখ্যমন্ত্রী শপথ নেওয়া আগে পর্যন্ত কমিশনের নিয়ন্ত্রণে ছিল রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা৷ এই সময়কালকে ভোট পরবর্তী পর্যায়ে ফেলা হয়েছে৷ তার পর ৫ মে-র পর থেকেই রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব নেয় সরকার৷ সেই সময়কে তৃতীয় পর্যায় বলে ধরে নেওয়া হবে৷ অর্থাৎ তিনটির মধ্যে প্রথম দু’টি পর্যায়ে রাজ্যের আইনশৃঙ্খলার দায়িত্বে ছিল কমিশন৷ শাসক শিবিরের দাবি, ভোট পরবর্তী সময়ে এবং মুখ্যমন্ত্রীর শপথ নেওয়ার আগে পর্যন্ত রাজ্যের পুলিশ কমিশনের নিয়ন্ত্রণে ছিল৷ আর সেই সময়ে বেশি হিংসার ঘটনা ঘটেছে৷ সেটাই রাজ্য সরকার তাদের জবাবে বিস্তারিতভাবে তুলে ধরবে বলে সূত্রের খবর৷