কলকাতা: আগামী সপ্তাহে দিল্লি যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি এবং রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোভিন্দের সঙ্গে দেখা করবেন তিনি। বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে নবান্নের সাংবাদিক বৈঠকে নিজের দিল্লি সফরের কথা জানিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো।
আরও পড়ুন- মোদি-শাহ চুপ কেন, সংসদে দাঁড়িয়ে জবাব দিন: মমতা
তৃতীয়বার মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ার পর এই প্রথম দিল্লি সফর করছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যেই আগামী লোকসভা নির্বাচনে লড়াইয়ের নীল নকশা তৈরি করতে শুরু করে দিয়েছে অবিজেপি দলগুলি। আরও একবার তৃতীয় ফ্রন্ট গঠনের কথাও শোনা গিয়েছে মমতার মুখে। এই অবস্থায় মোদির সঙ্গে তাঁর বৈঠক বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ।
আরও পড়ুন- টিভি দেখতে গিয়ে নাবালিকাকে ধর্ষণ করলেন প্রতিবেশী
বুধবার শহিদ দিবসের মঞ্চ থেকে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছিলেন মমতা। পরের দিনেই আবার দিল্লি সফরের কথা ঘোষণা করলেন। সেই সঙ্গে জানিয়ে দিলেন যে দিল্লিতে দেশের প্রধানমন্ত্রী এবং রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের কথা। জানা গিয়েছে যে আগামী সোমবার অর্থাৎ ২৬ জুলাই বিকেলের দিকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। ৩০ তারিখ ফিরবেন কলকাতায়। কবে প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা করবেন সেই বিষয়ে এখনও কিছুই জানানো হয়নি।
আরও পড়ুন- জাতীয় সংবাদমাধ্যমের অফিসে এজেন্সি পাঠিয়ে মুখবন্ধ করার চেষ্টা করছে বিজেপি : মমতা
চলতি বছরের মে মাসে অল্প সময়ের জন্য মুখোমুখি হয়েছিলেন মোদী-মমতা। ওড়িশার কলাইকুণ্ডাতে ইয়াস ঝড় নিয়ে বৈঠকের আয়োজন করা হয়। দিঘায় প্রশাসনিক বৈঠকের কারণে কলাইকুণ্ডায় বেশি সময় থাকেননি তৃণমূল সুপ্রিমো। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করে ক্ষয়ক্ষতির হিসেব দিয়েই চলে আসেন। যা নিয়ে বিতর্ক হয়েছিল।
আরও পড়ুন- ইউরোপ পাড়ির পথে ভূমধ্যসাগরে জাহাজ ডুবিতে মৃত্যু ১৭ বাঙালির
প্রায় দুই বছর আগে দিল্লিতে একান্তে বৈঠক করতে চলেছেন মোদি-মমতা। এর আগে ২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসে দিল্লিতে গিয়েছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। তার মাস খানেক আগে দ্বিতীয়বারের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন নরেন্দ্র মোদি। সেই অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ জানানো হলেও দিল্লিতে জাননি মুখ্যমন্ত্রী মমতা। আইপিএস রাজীব কুমারকে নিয়ে বিতর্কের মাঝেই দিল্লিতে গিয়ে মোদির সঙ্গে দেখা করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যা নিয়ে টিপ্পনি করেছিল সিপিএম।
সেই বৈঠকও ছিল দীর্ঘ আড়াই বছর পরে। ২০১৭ সালের ১৯ এপ্রিল দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী মোদির সঙ্গে একান্তে বৈঠক করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা। তখনও বাংলায় বিজেপির এত বাড়বাড়ন্ত ছিল না। সাংসদ সংখ্যা মাত্র দুই। প্রশাসনিক কারণেই প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী। ২০১৮ সালে মে মাসে শান্তিনিকেতনের সমাবর্তনের অনুষ্ঠানে মোদি-মমতা সাক্ষাৎ হয়। সেই সময়ে হাজির শান্তিনিকেতনে হাজির ছিলেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আরও পড়ুন- সংসদে মন্ত্রীর হাত থেকে কাগজ কেড়ে ছিঁড়ে দিলেন তৃণমূল সাংসদ
২০১৯ সালের সেপ্টেম্বর মাসের পর অনেক সময় কেটে গিয়েছে। গঙ্গা বা যমুনা দিয়ে অনেক জল গড়িয়েছে। সেই সঙ্গে অনেকটাই বদলে গিয়েছে রাজনৈতিক সমীকরণ। করোনার কারণে আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিও পালটে গিয়েছে। এই অবস্থায় ফের একান্তে মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন মমতা। বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ওই বৈঠকের আলোচ্য বিষয় নিয়ে কৌতুহল সৃষ্টি হয়েছে। রাজ্যের আর্থিক দাবিদাওয়া নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর কাছে দরবার করবেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।
আরও পড়ুন- ভোটের প্রতিশ্রুতি রেখে মমতার সরকার রাজ্যবাসীর দুয়ারে
যদিও সাংবাদিক বৈঠকে মমতা বলেছেন, “প্রতি বছর সংসদের অধিবেশন শুরু হলে আমি এক বার দিল্লি যাই। কোভিড পরিস্থিতির কারণে এ বার ভোটে জেতার পরে যাওয়া হয়নি। এক বার দিল্লি যাব। এ বার গিয়ে সময় পেলে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতির সঙ্গেও দেখা করব।” মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে প্রশাসনিক কারণেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানা গিয়েছে তৃণমূল সূত্রে। আরও জানা গিয়েছে, দিল্লিতে অবিজেপি নেতানেত্রীদের সঙ্গেও বৈঠক করবেন মমতা।