কলকাতা: বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেই সদ্য প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় (Former Justice Abhijit Gangopadhyay ) রাজ্যের শাসকদল তৃণমূলকে চড়া সুরে আক্রমণ শুরু করে দিলেন। মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্টের (Calcuta High Court) প্রধান বিচারপতি টি এস শিভগননমের কাছে ইস্তফাপত্র দিয়ে এসেই তিনি সল্টলেকের বাড়িতে সাংবাদিক বৈঠক করেন। সেখানে তিনি বলেন, তৃণমূল দলটা দ্রুত ভাঙছে। ২০২৬ সাল পর্যন্ত দলটা থাকবে কি না, সেটা আগে দেখুন। তিনি অবশ্য তৃণমূলকে কোনও রাজনৈতিক দল বলেই মানতে নারাজ। তিনি বলেন, এটা আসলে একটা যাত্রা পার্টি। তার নাম মা মাটি মানুষ। ৭ মার্চ, বৃহস্পতিবার অভিজিতের আনুষ্ঠানিকভাবে বিজেপিতে যোগ দেওয়ার কথা।
অভিজিতের অভিযোগ, তৃণমূল দুষ্কৃতীতে ভরা। সেখানে শিক্ষিত এবং সংস্কৃতিবান লোকের বড় অভাব। কেন তিনি বিজেপিতে যোগ দিচ্ছেন, জানতে চাওয়া হলে সদ্য প্রাক্তন বিচারপতি বলেন, ওরা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। আমিও বিজেপি নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করি। বিজেপিই একমাত্র জাতীয় রাজনৈতিক দল, যারা তৃণমূলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারে। এই দল জাতীয়তাবাদে বিশ্বাসী। ঈশ্বরে বিশ্বাস করে। সিপিএম নাস্তিক দল। তারা ঈশ্বরে বিশ্বাস করে না। আমি নিজে ঈশ্বরবিশ্বাসী। আমি ধর্ম মানি। তাই আমার সিপিএমে যাওয়ার কোনও প্রশ্নই ওঠে না। তাঁর মতে, কংগ্রেস দলটা একটা পারিবারিক জমিদারির দল। ওই দলে রাহুল গান্ধীর থেকে অনেক শিক্ষিত, অনেক যোগ্যতাসম্পন্ন নেতা রয়েছেন। কেন তাঁরা রাহুলদের পিছনে পিছনে ঘুরে বেড়ান, তা আমি বুঝে উঠতে পারি না বলে মন্তব্য করেন অভিজিত। প্রাক্তন বিচারপতি জানান, এই কারণেই তিনি কংগ্রেসেও যাচ্ছেন না।
আরও পড়ুন:
https://kolkatatvonline.in/scroll/lok-sabha-election-2024-date-may-be-announced-either-on-14-or-15-march-say-sources-kolkatatv-online-national-news/
গত রবিবার একটি সংবাদমাধ্যমে সাক্ষাতকারে অভিজিত বিচারপতি পদ থেকে ইস্তফা দেওয়ার কথা জানান। তিনি যে রাজনীতির মতো বৃহত্তর পরিসরে যাচ্ছেন, তাও জানিয়ে দেন প্রাক্তন বিচারপতি। ওই সাক্ষাতকারের পরই জল্পনা শুরু হয়, তিনি বিজেপিতে যোগ দিয়ে তমলুক লোকসভা কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। রবিবার জানানো হয়েছিল, তিনি মঙ্গলবার ইস্তফা দিয়ে যা বলার বলবেন। সেইমতো এদিন সকালে অভিজিত প্রথমে হাইকোর্টে যান ইস্তফা দিতে। তারপর তিনি সল্টলেকের বাড়িতে আসেন। সেখানে তখন সাংবাদিক, চিত্র সাংবাদিকদের থিকথিকে ভিড়।
সাংবাদিক বৈঠকের শুরুতেই অভিজিত অভিযোগ করেন, তাঁর সাংবাদিক বৈঠক ভেস্তে দেওয়ার একটা চক্রান্ত চলছে। এখানে অনেক সাদা পোশাকের দুষ্কৃতী লুকিয়ে আছে। সাংবাদিকদের একের পর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি শাসকদলকে তীব্র আক্রমণ করেন। অভিজিত বলেন, শাসকদলের অনেক নেতা-মন্ত্রীর মুখোশ খুলে গিয়েছে আমার রায়ে। অনেকে জেলে গিয়েছেন। তাই আমার উপর ওদের এত রাগ। আমাকে এবং আরও কয়েকজন বিচারপতিকে নাম ধরে ওরা আক্রমণ করেছে। বিচার ব্যবস্থাকে আক্রমণ করা যায়। কিন্তু বিচারপতিদের আত্রমণ করা যায় না। তৃণমূল নেতাদের সেই শিক্ষাটাও নেই। তৃণমূলের আইনজীবী সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কেও তিনি ছেড়ে কথা বলেননি। অভিজিত বলেন, উনি কুকথার জন্য বিখ্যাত।
অন্য খবর দেখুন