মেক্সিকো: আজ থেকে ১৭০০ বছর আগে আমেরিকার (America) মায়া সভ্যতায় (Mayan Civilization) ছিল এক অদ্ভুত প্রথা। দুই বড় শক্তির গোষ্ঠীর মধ্যে সম্পর্ক দৃঢ় করতে উপহার হিসেবে দেওয়া হত স্পাইডার মাঙ্কি (Spider Monkey)। দক্ষিণ আমেরিকার ট্রপিক্যাল অরণ্যে (Tropical Forest) দেখা মেলে এই বিশেষ প্রজাতির বানরের। আরও অদ্ভুত এই যে, উপহার পাওয়া বানরদের পরে বলি দেওয়া হত।
মায়া সভ্যতার (Mayan Cibvilization) এই নতুন তথ্য সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে প্রসিডিংস অফ দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস-এ। গত শতাব্দীর সাতের দশকে পান্ডা নিয়ে চীনের কূটনীতির সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে এই দৃষ্টান্তের।
ডিএনএ (DNA) বিদ্যা, রেডিও কার্বন ডেটিং (Radiocarbon Dating) এবং কেমিক্যাল ডায়াটারি অ্যানালিসিসের মাধ্যমে একটি স্পাইডার বানরের জীবন ও মৃত্যুর ঘটনা পুনর্গঠন করতে সক্ষম হয়েছেন বিজ্ঞানীরা। তাঁরা জানিয়েছেন, তাকে যখন জীবন্ত কবর দেওয়া হয়, তার বয়স ছিল পাঁচ থেকে আটের মধ্যে।
আরও পড়ুন: Jakarta Earthquake: জাকার্তার ভূমিকম্পে মৃতের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়াল ১৬২
এই রিসার্চের প্রধান গবেষক ক্যালিফোর্নিয়া (California) বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক নাওয়া সুগিয়ামা বলছেন, প্রত্নতত্ত্ব নিয়ে কাজ করার এটাই সবথেকে চিত্তাকর্ষক সময়, কারণ পুরো প্রণালী বিদ্যাটাই হাতে এসে গিয়েছে। নতুন আবিষ্কারের শুরুটা ২০১৮ সালে হয়েছিল। মেক্সিকোর পাহাড়ে ইউনেস্কোর (UNESCO) ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইট টেওটিয়াকানে (Teotihuacan) বানরের দেহাবশেষ খুঁজে পান সুগিয়ামা।
তিনি দ্বিধায় পড়েন, কারণ স্পাইডার মাঙ্কি প্রজাতিটি পাহাড়ি অঞ্চলে বসবাস করে না। তাহলে কে ওটাকে নিয়ে এল, কেনই বা কবর দেওয়া হল, এই সমস্ত প্রশ্ন সুগিয়ামাকে কুরে কুরে খেতে থাকে। ক্লু খুঁজে পান দেহাবশেষ যেখানে পাওয়া যায় সেই এলাকা থেকেই। দেহাবশেষ পাওয়া গিয়েছিল প্লাজা অফ কলামস নামে একটি কমপ্লেক্স থেকে যাকে প্রাচীন মায়ানদের দূতাবাস বলে মনে করা হচ্ছে। কমপ্লেক্সে বানরের দেহাবশেষের সঙ্গেই পাওয়া গেছে সোনালি ইগল যা আজও মেক্সিকোর একটি প্রতীক। এছাড়াও ছিল বহুমূল্য পাথর ও শিল্পসামগ্রী। মায়াদের ছবিতেও বহুবার দেখা গেছে স্পাইডার মাঙ্কিদের। এরপর দুইয়ে দুইয়ে চার করে নিতে অসুবিধা হয়নি সুগিয়ামার।