কলকাতা: হার্ট অ্যাটাকের (Heart Attack) সমস্যা এখন খুবই বেড়েছে। প্রচুর মানুষ এই অসুখে আক্রান্ত। এমনকী অনেক কম বয়সেই এই সমস্যা বাড়ছে। আজকাল তরুণদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা বেড়ে যাওয়া উদ্বেগের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর এর অন্যতম কারণ হল জীবনযাত্রা। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রাই তরুনদের মধ্যে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়াচ্ছে। জেনে নিন কেন তরুণ প্রজন্মের মধ্যে কেন হার্ট অ্যাটাকের প্রবণতা বাড়ছে?
স্থূলতার কারণে কোলেস্টেরল বেড়ে যায়- স্থূলতাও অস্বাস্থ্যকর হার্টের অন্যতম কারণ। তরুণদের খাওয়া-দাওয়ার অভ্যাস দিন দিন খারাপ হচ্ছে। সময়ের অভাবে তাঁরা নিজেদের খাবার নিজে রান্না করতে পারছে না এবং পেট ভরানোর জন্য জাঙ্ক ফুডের উপর নির্ভর করছেন। আর এই ধরনের খাবারে স্যাচুরেটেড ফ্যাট রয়েছে যা কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় যার সরাসরি প্রভাব পড়ে হার্টের উপর।
ওজন বৃদ্ধি- অতিরিক্ত ওজন হৃৎপিণ্ডের ওপর চাপ সৃষ্টি করে এবং শরীরে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বাড়ায়। এই কোলেস্টেরল রক্তনালীতে জমা হয় এবং তাদের ব্লক করে, শিরার মধ্য দিয়ে রক্ত চলাচলে বাধা দেয় এবং এটি হৃৎপিণ্ডের রক্ত পাম্প করার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে। তাই সঠিক পুষ্টি ও ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ করা প্রয়োজন। নইলেই বিপদ।
দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা এবং পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়া- দেরি করে ঘুম থেকে ওঠা এবং কম ঘুম হার্টের ওপর ভালো প্রভাব ফেলে না। নিয়মিত ব্যায়াম করলে হৃৎপিণ্ডের রক্ত পাম্প করার ক্ষমতা বাড়ে। ব্যায়াম শরীরে কোলেস্টেরল ও চর্বির পরিমাণও কমায়, যা স্থূলতা কমাতে সাহায্য করে এবং রক্তনালী ও স্নায়ুতে জমে থাকা ব্লকেজ দূর করে রক্ত চলাচলের উন্নতি ঘটায়। হার্টকে সুস্থ রাখলে শরীরের সার্বিক স্বাস্থ্যের উন্নতি হয়। তাই ভালো ও দীর্ঘ জীবনের জন্য হার্টকে সুস্থ রাখা প্রয়োজন।
কাজের চাপ- আজকাল যুবকরা তাঁদের ক্যারিয়ার, ভাল চাকরি এবং একটি মানসম্পন্ন জীবনধারা বজায় রাখার বিষয়ে চাপের মধ্যে রয়েছে। আজকের ব্যস্ত এবং প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশে, স্ট্রেস প্রবল আকার ধারণ করেছে, যা হার্টের স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব ফেলছে। মানসিক চাপ শরীরে কর্টিসল এবং অ্যাড্রেনালিনের মতো হরমোন নিঃসরণ করে, যা রক্তনালীতে বিরূপ প্রভাব ফেলে। এ কারণে রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং দীর্ঘ সময় ধরে এ অবস্থা চলতে থাকলে হৃদপিণ্ডের রক্তনালীগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
মদ- সিগারেটের নেশা- নেশার কারণে হৃৎপিণ্ডে অক্সিজেনের সরবরাহ কমে যায় এবং হৃদস্পন্দনে বাধা সৃষ্টি হয়। এটি রক্তে জমাট বাঁধার দিকে পরিচালিত করে এবং রক্তনালীতে রক্তের মসৃণ প্রবাহকে হ্রাস করে। কিন্তু যৌবনে হার্ট অ্যাটাক বাড়ে এমন ঝুঁকির কারণগুলি মোকাবেলা করার মাধ্যমে, হৃদরোগ হ্রাস করা যেতে পারে এবং ভবিষ্যত প্রজন্মের হৃদরোগকে রক্ষা করা যেতে পারে।