Placeholder canvas
কলকাতা বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
ঘৃণার রাজনীতি: মোকাবিলার শিক্ষা দিল ওপার বাংলা
জয়ন্ত চৌধুরী Published By:  • | Edited By: অর্পিতা দে
  • প্রকাশের সময় : সোমবার, ২৫ অক্টোবর, ২০২১, ০৪:১০:০০ পিএম
  • / ৫৬৪ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By: অর্পিতা দে

কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক:  শাসক না চাইলে দাঙ্গা হয় না। এমনটাই বিশ্বাস করতেন জ্যোতি বসু। বাবরিকাণ্ডের পর একাধিক সাক্ষাৎকারে তৎকালীন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী জোরের সঙ্গে একথা বলতেন। মসজিদ ধ্বংসের পর সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার গ্রাসে গোটা দেশ। বাংলাতেও উত্তেজনার ইন্ধন ছিল। বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ঘটলেও কিন্তু শেষ পর্যন্ত দাঙ্গাকারীরা বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি। সজাগ ছিল শাসক দল বামফ্রন্ট, প্রশাসনও। ‘৯২ সালের ডিসেম্বরের আগে ‘৮৪ ইন্দিরা গান্ধী হত্যার পরেও দেশজুড়ে শিখ বিরোধী প্রাণঘাতী হামলা হয়েছিল।

সেবারেও জ্যোতি বাবুর প্রশাসন তা রুখে দিয়েছিল। দুটিক্ষেত্রেই কেন্দ্রের শাসক ছিল কংগ্রেস। স্বভাবতই, জ্যোতিবাবু দাঙ্গায় শাসকের পৃষ্ঠপোষকতার যে কথা বলেছিলেন,তার নিশানায় ছিল কংগ্রেস। যদিও ইতিহাসের অভিজ্ঞতায় জ্যোতিবাবুর সেই অভিজ্ঞান আদতে একটি সর্বজনীন সত্যে পর্যবসিত। সম্প্রতি বাংলাদেশের ঘটনার প্রেক্ষিতে ফের প্রয়াত মুখ্যমন্ত্রীর সেই সংক্ষিপ্ত অথচ তীক্ষ্ণ পর্যবেক্ষণ স্মরণ করিয়ে দিল। না, প্রথমেই বলে রাখা যাক, বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা ব্যাখ্যা করতে জ্যোতিবাবুর ওই মন্তব্যের শরণ নয়। বরং উল্টোটা।

কুমিল্লাসহ বাংলাদেশের নানা প্রান্তে দুর্গা পূজার সময় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছিল। সাম্প্রদায়িক হানাহানির সমস্ত রসদ মজুদ ছিলো কুমিল্লা,নোয়াখালি, চট্টগ্রামসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা ও উপজেলায়। তবে সংখ্যাগরিষ্ঠ সমাজের মুষ্টিমেয় অংশ একতরফা যে হিংসা ছড়িয়েছে তাকে দাঙ্গা বলা সমীচীন নয়। কেননা পাল্টা সংঘর্ষের কোনো খবর মেলেনি। উল্টে হামলাকারীর বিরূদ্ধে ধর্মনির্বিশেষে মানুষ রাস্তায় নেমেছে। মুসলমান সমাজের নানা ধর্মীয় সংগঠনের তরফে সক্রিয় প্রতিবাদ দেখা গিয়েছে।

আরও পড়ুন – কেমন করে গান করো হে গুণী

সেদেশের বাংলা ও ইংরেজি সংবাদ মাধ্যমে মুসলমান দাঙ্গাবাজদের মিছিলের ছবির চাইতে অনেক বেশি গুরুত্ব দিয়ে ছাপা হয়েছে ঘাতক বাহিনী বিরোধী মহামিছিলের ছবি।এমনকী সিঁদুর খেলা থেকে দুর্গা বিসর্জন পর্বের খবর ছবি সহযোগে প্রকাশিত হয়েছে বাংলাদেশের দৈনিকে। মনে রাখা উচিত যে এ বছরেও সেদেশে ৩২হাজারের বেশি দুর্গা পুজো হয়েছে। তা সম্পন্ন হয়েছে সুষ্ঠুভাবে । পুজো বা অন্য পার্বণে হিন্দু মন্দির আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বাংলাদেশে নতুন নয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও প্রায় আড়াই কোটি হিন্দু এখনও দোল-দুর্গোৎসব পালন করে আসছে।

বাংলাদেশের একাধিক সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, এবারের ঘটনা যতটা পরিব্যপ্ত, সংখ্যাগুরু সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে দেশময় সর্বজনীন প্রতিরোধের অভিঘাত তার চাইতেও অনেক বেশি তীব্র। ইতিহাসে দেখা গিয়েছে ধর্ম বা যে কোনো পরিচিতি ভিত্তিক উন্মাদনা গণরূপ পায়,যখন আমজনতা অন্ততপক্ষে পরোক্ষে তাতে মদত দেয়। জনমত সংগঠিত হয়। কিন্তু কয়েকটি প্রাণের বিনিময়ে শেষ পর্যন্ত নাগরিক প্রতিরোধের মুখে পিছু হটল ধর্মীয় মৌলবাদ।

আরও পড়ুন – সিধুর ছক্কায় বেসামাল পঞ্জাব কংগ্রেস

অবিভক্ত বাংলা , সাবেক পূর্ববঙ্গ ও পশ্চিমবঙ্গে ধর্মীয় হানাহানির হিংসাত্মক দাঙ্গার ঘটনা বিশ্বের ইতিহাসে ঠাঁই পেয়েছে। কিন্তু বর্তমান সময়ে বাংলাদেশ প্রশাসন বিশেষত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রথম থেকেই সক্রিয় ছিলেন। দেশের শাসকের পাশাপাশি বিরোধী নেতৃত্ব দলীয় স্বার্থ সরিয়ে সাম্প্রদায়িক হিংসার বিরোধিতায় তৎপর ছিল। যা বাংলাদেশের সামাজিক-রাজনৈতিক ইতিহাসে নতুন উপাদান হিসেবে সংযোজিত হল। প্রথম সারির সংবাদমাধ্যম থেকে শুরু করে বাংলাদেশের তরুণ প্রজন্ম, ছাত্রসমাজ পথে নেমেছে হিংসা বন্ধের দাবিতে। মনে রাখা দরকার, এই প্রতিরোধ যাঁরা গড়ে তুলেছেন, তাঁদের সিংহভাগ মুসলমান সম্প্রদায়ভুক্ত। এই সার্বিক সামাজিক ও রাজনৈতিক চাপের মুখে পড়ে কিছুটা ব্যাকফুটে দাঙ্গাবাজরা।

অন্যদিকে ভারতের ছবিটা মনে করা যাক। শাসকের রাজনীতির প্রাবল্যে সমাজের একাংশ ক্রমাগত কলুষিত হয়ে চলেছে। জম্মুর কাঠুয়ায় এক আট বছরের শিশুকন্যাকে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ উঠেছিল। একদল মানুষ ওই ঘটনায় অভিযুক্তদের সমর্থনে সরব হল। যার নেপথ্যে ছিল ধর্মীয় উস্কানি। প্রশাসন ছিল নীরব দর্শক। পরে আদালত অভিযুক্তদের শাস্তি দিয়েছে। ২০২০ সালের দিল্লির দাঙ্গায় সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছিলো স্থানীয় গেরুয়া শিবির। বাহিনীর কর্মীরাই একতরফা ভাবে (অনেকটা বর্তমান বাংলাদেশের মতো) সেই দাঙ্গা ঘটিয়েছিল। দিল্লির পুলিশ-প্রশাসন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের হাতে। সরকার চেয়েছিল বলেই ওই সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হয়েছিল তা নিয়ে আজ কোনো সংশয় নেই। দিল্লির সেই দাঙ্গা নিয়ে বড় বড় মিডিয়ার ভূমিকাও মোটেই ভালো ছিলো না। শাসকের তাঁবেদারি করতে গিয়ে সংখ্যাগরিষ্টের হিংসার পক্ষে সওয়াল করেছে এক শ্রেণীর সংবাদমাধ্যম।

আইসিস বা লস্কর-ই-তৈবার মতো জঙ্গি মুসলমান সংগঠনের নাম জড়িয়ে হিন্দু মৌলবাদীদের হিংসার পক্ষে যুক্তি সাজানোর কাজ একযোগে বিজেপি ও মিডিয়ার একাংশ করেছিল। এমনকী কোভিড অতিমারীর সময়েও কেন্দ্রীয় শাসকদল তবলিগি মুসলমানদের সংক্রমণ বৃদ্ধির জন্য কাঠগড়ায় দাঁড় করায়। মনগড়া তথ্য হাজির করে সংখ্যালঘুদের সম্পর্কে ঘৃণা ছড়াতেই সক্রিয় ছিল বিজেপিসহ সঙ্ঘ পরিবার। কেন্দ্রীয় সরকার পরোক্ষে তাতে মদত জুগিয়ে গিয়েছে। (রাম মন্দির,গো-রক্ষা বা লাভ জেহাদ, যেকোনো বিতর্কিত বিষয়ে শাসক দল এবং অনেক ক্ষেত্রে প্রশাসন নগ্নভাবে ধর্মীয় সংখ্যালঘুর বিরুদ্ধে হিন্দুত্ববাদী অবস্থান নিয়েছে ) অর্থাৎ সরকারের ইচ্ছাতেই ওই ঘৃণার চাষ। অথচ,সেই ঘটনার পরপরই কুম্ভ মেলা হয়েছিল।কেন্দ্রের জারি করা অতিমারী আইন উপেক্ষা করেই লাখ লাখ লোকের জমায়েত হয়েছিল কুম্ভে সরকারি পৃষ্ঠপোষকতায়। ঘটনাচক্রে তার অব্যবহিত পরেই কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউ আছড়ে পড়েছিল গোটা দেশে।

আরও পড়ুন – গিরের সিংহ নিয়ে নিজের সাফল্যে গর্বিত মোদী

বাংলাদেশে কিন্তু সাম্প্রদায়িক শক্তির মোকাবিলায় অভিন্ন সুর ছিল দেশের শাসক ও বিরোধীর। হিংসা বিরোধী প্রচারে নাগরিক সমাজ থেকে ছাত্র-যুব সম্প্রদায় ধর্মমতনির্বিশেষে এক সুরে কথা বলেছে। মৌলবাদী উন্মাদনাকে নির্বাচনী রাজনীতির আঙিনায় টেনে আনার পরিচিত ছক দেখা যায়নি সেখানে। প্রশাসনিক তৎপরতায় এ পর্যন্ত সেদেশে ৭১ টি মামলা রুজু হয়েছে হামলাকারীর বিরুদ্ধে। গ্রেপ্তার হয়েছে সাড়ে চারশোর বেশি দুষ্কৃতী। সোশ্যাল মিডিয়ায় ভুয়ো ,উত্তেজক ছবি পোস্ট করার অভিযোগে ৫৩ জনের বিরুদ্ধে সাইবার অপরাধের মামলা করা হয়েছে। শাসক আওয়ামি লিগ তো বটেই সংসদীয় রাজনীতিতে তাদের প্রধান প্রতিপক্ষ খালেদা জিয়ার বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট পার্টি (বিএনপি) পর্যন্ত হিংসার নিন্দা করেছে।

ভারত সরকার সংযম দেখিয়ে হাসিনা প্রশাসনের ওপর আস্থা প্রকাশ করেছে। কিন্তু কেন্দ্রের শাসক দল তথা বিজেপির প্রাণভোমরা সঙ্ঘ পরিবার অবশ্য এপার বাংলায় হিন্দু সাম্প্রদায়িকতার উস্কানি দিতে সক্রিয় রয়েছে। তবে বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকায় এখনও পর্যন্ত তারা বিশেষ সুবিধা করতে পারেনি। প্রসঙ্গত,বাংলাদেশ মোটেই মৌলবাদ মুক্ত নয়। গত এক দশকে সেখানে মুক্ত চিন্তার বিরুদ্ধে মোল্লাতন্ত্রের সহিংস আক্রমণের বহু নজির রয়েছে। কিন্তু এই সন্ধিক্ষণে প্রতিবেশী রাষ্ট্রের এবং তার নাগরিকদের আচরণ একটা ঐতিহাসিক দৃষ্টান্ত রেখে গেলো। এপার বাংলা তথা তামাম ভারতের কাছে সেটা শিক্ষণীয় বটে।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই সোম ও মঙ্গলবার বৃষ্টির পূর্বাভাস
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
গোল পেলেন না এমবাপে, পিএসজিকে ১-০ হারাল ডর্টমুন্ড
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
প্রথম স্থানাধিকারী চন্দ্রচূড় চিকিৎসক হতে চায়
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
কোচবিহার থেকে মাধ্যমিকে প্রথম চন্দ্রচূড় সেন
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
এবছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার পাশের হার ৮৬.১৩ শতাংশ
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
ঘাটাল মাস্টার প্ল্যান না হলে তৃণমূলকে ভোট দিতে হবে না, মন্তব্য দেবের
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
মে মাসে কেরিয়ারে বড় উন্নতি হবে ৫ রাশির জাতকের
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
আচমটাই ঝড়-বৃষ্টি মেদিনীপুর জুড়ে, বাকি জেলায় কবে?
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
নির্বাচনী প্রচারে গিয়ে অসুস্থ অভিনেতা সোহম, ভর্তি হাসপাতালে
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
বিশ্বকাপে খেলতে পারেন রিঙ্কু, আছে আইসিসির এই নিয়ম
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
খড়গ্রামের ঘটনায় গ্রেফতার ৭, এখনও অধরা অনেকে
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
কুণাল কি বড় পদক্ষেপ করতে চলেছেন, জল্পনা তুঙ্গে
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
কাল, বৃহস্পতিবার সকালে মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
ভোটদানের হার বাড়ল কী করে? প্রশ্ন মমতার
বুধবার, ১ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team