নয়াদিল্লি: সপ্তদশ লোকসভার চূড়ান্ত পর্ব বাজেট অধিবেশন শুরু হতে চলেছে আগামী ৩১ জানুয়ারি থেকে। চলবে ৯ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। ১ ফেব্রুয়ারি কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন অন্তর্বর্তী বাজেট পেশ করবেন। লোকসভা ভোটের পর নতুন সরকার গঠিত হলে ২০২৪-২৫ আর্থিক বছরের পূর্ণাঙ্গ বাজেট পেশ অথবা এই ভোট অন অ্যাকাউন্টেই কিছু পরিবর্তন এনে পাশ করিয়ে নেওয়া হবে।
এই বাজেট পেশের আগে চিরাচরিত একটি রীতি মেনে আসা হয়। তার নাম হালুয়া উৎসব। বাজেট প্রস্তুতকারী অর্থ উপদেষ্টা, সচিব, অর্থ রাষ্ট্রমন্ত্রী সহ খোদ অর্থমন্ত্রী নর্থ ব্লকে আয়োজিত এই উৎসবে যোগ দেন। হালুয়া উৎসবের আয়োজন করেন অর্থমন্ত্রী নিজে।
আরও পড়ুন: বাজেট পেশের দিন বদলে গেল কী করে?
হালুয়া উৎসব কী?
বাজেট সম্পর্কিত বিভিন্ন তথ্য ছাপার জন্য পাঠানো হলে, অর্থাৎ বাজেট প্রস্তাবের মূল কাজ সাঙ্গ হলে হালুয়া উৎসব পালিত হয়। বেশ কয়েক মাস ধরে বাজেট লেখার কাজ শেষ হওয়ায় আনন্দানুষ্ঠানের ধাঁচে পালিত হয় হালুয়া উৎসব।
অর্থমন্ত্রকের কর্মীরা কী করেন?
এইদিনে সরকারিভাবে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী যাঁরা দিনরাত খেটে বার্ষিক আর্থিক হিসাব সংরক্ষণ করেছেন, তাঁদের আনুষ্ঠানিক বিদায় সংবর্ধনা দেওয়া হয়। বিশেষ করে এই দিনটি থেকে তাঁরা লক-ইন পিরয়ডে চলে যান। বাজেট সম্পর্কিত কাজে যুক্ত কর্মী-পদাধিকারীরা এই দিন থেকে স্বেচ্ছা নির্বাসনে থাকেন বলা যায়। তাঁরা মন্ত্রকের ঘরে ঘরে যাতায়াত বন্ধ করে দেন। পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করেন। যাতে না বাজেট তথ্য কোনওভাবে ফাঁস হয়ে যায়। এই কর্মীরা লোকসভায় ১ ফেব্রুয়ারি বাজেট পেশের পরেই নর্থ ব্লকের বাইরে বেরনোর অনুমতি পান।
কোথায় হয় হালুয়া উৎসব?
মধ্য দিল্লিতে অর্থমন্ত্রকের বেসমেন্টে উৎসবের আয়োজন করা হয়। এখানেই ছাপা হয় বাজেট-পত্র। বিশালাকার কড়াইতে হালুয়া রান্নার সময় চিত্র সাংবাদিকদের অনুরোধে খুন্তি নাড়তেও হয় অর্থমন্ত্রীকে।
কী কী কৃচ্ছসাধন করতে হয় কর্মীদের?
এককথায় বলা যায়, এই দিন থেকে অর্থমন্ত্রকের কর্মীদের নিভৃতবাসে রাখা হয়। বাজেটের গোপনীয়তা বজায় রাখার জন্য অত্যন্ত সন্তর্পণে চলতে হয় সরকারকে। এই কাজে যুক্তদের বাজেট পেশ না হওয়া পর্যন্ত মোবাইল ফোন বন্ধ রাখতে হয়। প্রধানমন্ত্রীর সম্মতি পাওয়ার পরেই বাজেট ভাষণ ছাপতে যায়। জরুরি ক্ষেত্রে কর্মীদের পরিবার একটি নির্দিষ্ট নম্বরে মেসেজ পাঠাতে পারেন। কিন্তু কোনওভাবেই সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন না। ১৯৫০ সালে বাজেট ফাঁস হওয়ার পর থেকে এই পদ্ধতি-বিধি চালু হয়েছে।
অন্য খবর দেখুন