Placeholder canvas
কলকাতা সোমবার, ২০ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
গোয়া, ভারতীয় রাজনীতির টার্নিং পয়েন্ট?
জয়ন্ত চৌধুরী Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : মঙ্গলবার, ২ নভেম্বর, ২০২১, ১১:০৫:৪০ পিএম
  • / ৫১৪ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

ফ্লাশ ব্যাক…

২০১৩, জুন মাস। রাজধানী শহর পানজিমে বসেছে বিজেপির জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক। তিনদিন ধরে চলবে আলোচনা। পরের বছর লোকসভা নির্বাচন। দ্বিতীয় ইউপিএ সরকারের মেয়াদ শেষ হবে মে মাসে। হাতে এগারো মাস। পরপর দু’দফা মনমোহন সিং সরকার। তাই প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া। তার মধ্যে একাধিক দুর্নীতির প্রশ্নে জেরবার কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন জোট সরকার। পরিস্থিতি অনুকূল হলেও বিরোধী মুখ কে হবে, তা নিয়ে বিজেপিতে মতবিরোধ। প্রধানত তার সমাধানসূত্র খুঁজতে জাতীয় কর্মসমিতির বৈঠক। আরএসএস বিরূপ। তাই তাঁর ইচ্ছা থাকলেও লোকসভা নির্বাচনে দলের মুখ বা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে লালকৃষ্ণ আদবানি আগেই বাতিলের খাতায়।

সম্ভবত, সেই কারণেই গোয়ামুখো হননি ‘লৌহ পুরুষ’। বৈঠকে নাম এসেছিল নাগপুরের ব্যবসায়ী সরসঙ্ঘচালক মোহন ভগবতের খাস, নীতিন গড়করির (প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি)। কিন্তু বৈঠকের শেষ দিন দলের সর্বভারতীয় সভাপতি রাজনাথ সিংহ ঘোষণা করলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী, সঙ্ঘের প্রাক্তন প্রচারক নরেন্দ্র দামোদর দাস মোদির নাম, আসন্ন লোকসভা নির্বাচনের প্রচার কমিটির প্রধান হিসেবে। যশবন্ত সিংহ, যশবন্ত সিনহা, উমা ভারতী প্রমুখ মোদির ওই পদোন্নতির বিরোধিতা করেও পর্যুদস্ত।

প্রতিনিধিদের বিপুল সমর্থনের মধ্য দিয়ে (গুজরাট দাঙ্গার অভিযোগ প্রমাণের অভাবে, সুপ্রিম কোর্ট থেকে বেকসুর ঘোষিত হওয়া) সেই শুরু জাতীয় রাজনীতির আঙিনায় মোদির পথ চলা শুরু। হ্যাঁ, আরব সাগরের পাড়ের এই একদা পর্তুগিজ শাসিত ছোট্ট রাজ্য গোয়া থেকে ভবিষ্যতের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নরেন্দ্র মোদির আনুষ্ঠানিক অভিযাত্রার সূচনা। ওই বছরের নভেম্বরে দিল্লিতে বিজেপির সংসদীয় কমিটির সভায় মোদিকেই ভাবী এনডিএ সরকারের মুখ, বলে ঘোষণা করা হল। ততদিনে সরসঙ্ঘ চালক মোহন ভগবতও মোদির পিঠে হাত রেখে দিয়েছেন। ২০১৪ সালে লোকসভা ভোটে ৫৪৩টি আসনের মধ্যে বিজেপি এককভাবে ২৫৩টি আসন পেল মোদির নেতৃত্বে।

ফ্লাশ ফরোয়ার্ড
গোয়া।

২০২১ অক্টোবর মাস। সমুদ্র তটে মৎস্যজীবীদের সঙ্গে দেখা করে তাদের অভাব অভিযোগের কথা শুনলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আড়াই দিনে তাঁর ঝটিকা সফর আলোড়ন তুলেছে দেশীয় রাজনীতিতে। গোয়ায় নিজেদের অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে একই সময় সেখানে হাজির রাহুল গান্ধী।

আরও পড়ুন: দিশাহীন কংগ্রেসের জামানত জব্দ, অধীর মানলেন সংগঠনের অভাব

লোকসভা ভোট প্রায় তিন বছর দেরি আছে। নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে আসনের বিচারের একক ভাবে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে দ্বিতীয় বারের জন্য দিল্লির মসনদে নরেন্দ্র মোদি। তাঁর বিরুদ্ধে প্রতিষ্ঠান বিরোধী হাওয়া মৃদু মন্দ বইতে শুরু করেছে। কেন্দ্রে শক্তিশালী হলেও বিভিন্ন প্রদেশে প্রতিরোধের মুখে বিজেপি। বলা ভালো পরোক্ষে ধাক্কা খাচ্ছেন নরেন্দ্র মোদি । কেন না দল ও প্রশাসনে তাঁর দাপট নিরঙ্কুশ। কিন্তু সেই মোদি ও তাঁর বিশ্বস্ত দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী অমিত শাহের সমস্ত দর্পচূর্ণ হয়েছে বাংলায়। যার অবিংসবাদী কান্ডারীর নাম মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মোদি যেমন একটি অঙ্গরাজ্যে দুবছর মুখ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব পালনের পর জাতীয় রাজনীতির ময়দানে নেমেছিলেন, মমতাও মুখ্যমন্ত্রীত্বের হ্যাটট্রিকের পর বিজেপি বিরোধী বিকল্প শক্তির ভরকেন্দ্র হয়ে উঠতে চলেছেন।

গোটা দেশে বিরোধী শিবিরে তার প্রতি আগ্রহ বাড়ছে। সেই প্রেক্ষাপটে মমতার গন্তব্য সেই গোয়া। বাংলায় ভোটের ফল প্রকাশের এক মাসের মধ্যে মমতা দিল্লি গিয়েছিলেন। তারপর দ্বিতীয় রাজ্য গোয়া। সেখানে দাঁড়িয়ে স্পষ্ট ভাষায় মমতার ঘোষণা, গোয়ার আগামী বছরের বিধানসভা নির্বাচনে তৃণমূলকে সুযোগ দিক গোয়াবাসী। বাংলার বাইরে একাধিক রাজ্যে তৃণমূলের বিধায়ক ছিল। কিন্তু হাতে বেশ কিছুটা সময় নিয়ে কোনো রাজ্যে (প্রায় আড়াই দিন নানা আঙ্গিকে রাজনৈতিক সংযোগ করলেন) গিয়ে এই প্রথম সরকার বদলের ডাক দিলেন মমতা। নিজের দলকে ক্ষমতায় বসানোর এমন প্রত্যক্ষ ও সক্রিয় উদ্যোগ তৃণমূল নেত্রীর পক্ষে এই প্রথম। যার আশু লক্ষ্য গোয়ার বিজেপি সরকারের পতন ঘটানো হলেও ২০২৪ সালে দিল্লিতে পরিবর্তনই তাঁর আসল এজেন্ডা।

অভিন্ন শত্রু পক্ষ, কংগ্রেস।

২০১৩ সালে বিজেপির কর্মসমিতির বৈঠকের সময় দেশে একটানা দশ বছর ক্ষমতায় কংগ্রেস সরকার। সেই সরকারের বিরোধীতাকে ‘কংগ্রেসমুক্ত ভারত’ গঠনের স্লোগানে জুড়ে দিলেন বিজেপির ভাবী প্রধানমন্ত্রী মোদি। আক্ষরিক অর্থে ‘কংগ্রেস মুক্ত’ হয়নি দেশ। তবে জরুরি অবস্থার পর ১৯৭৭ সালের ভোটে প্রবল ইন্দিরা গান্ধী বিরোধী ঝড়েও সংসদে কংগ্রেসের প্রতিনিধিত্বের এমন দুর্দশা ঘটেনি। ক্ষীণ শক্তি শতাব্দী প্রাচীন কংগ্রেস, ২০১৯ সালেও মোদির পরাক্রমের কাছে খড়কুটোর মত ভেসে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: ৭৮ শতাংশ ভোট পেল তৃণমূল, ব্যাপক ধস বিজেপির ভোটব্যাঙ্কে

বাংলায় মোদি-শাহের কাছে লোকসভায় জোর ধাক্কা খেলেও মাত্র দুবছরের মধ্যেই ঘুরে দাঁড়িয়েছেন মমতা। তবে সেই লড়াইতে কংগ্রেসকে তিনি সঙ্গে পাননি। কেন্দ্রীয় স্তরে বিজেপিকে প্রধান শত্রু বলে দাবি করেও বাংলায় বামেদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তৃণমূলকেও নিশানা করে কংগ্রেস। ঘটনাচক্রে, জোট সঙ্গী বামেদের নিয়ে কংগ্রেস বস্তুত নিশ্চিহ্ন। ভারতের তথা বঙ্গের ইতিহাসে বেনজির ঘটনা। রাজ্য বিধানসভায় একমাত্র বিরোধী দল বিজেপি। কংগ্রেস ,বাম শূন্য।

সর্বভারতীয় রাজনীতিতে বিজেপি বিরোধী প্রধান শক্তি কংগ্রেসের এহেন ভূমিকায় সন্দিহান মমতা। তাঁর লক্ষ্য আগামী লোকসভা ভোটে বিজেপি কে হারাতে বিরোধী জোট গঠন। কিন্তু সেক্ষেত্রে কংগ্রেসের দুর্বলতা প্রকট। তাই মমতা নিজেই উদ্যোগ নিয়েছেন। ভরসা রাখতে পারছেন না সোনিয়া-রাহুল গান্ধীর উপর। কেননা বিজেপি মোকাবিলায় কংগ্রেসের ধারাবাহিক ব্যর্থতায় বিরোধী শিবিরের মনোবল নষ্ট হচ্ছে বলে মনে করেন মমতা।উল্টোদিকে বাংলায় মোদি-শাহ ব্যক্তিগতভাবে নজিরবিহীন নির্বাচনী প্রচার করেও মুখ থুবড়ে পড়েছে গেরুয়া শিবির। ওই ঘটনা মমতাকে ঘিরে জাতীয় স্তরে আগ্রহ বেড়েছে। বেড়েছে বিজেপি বিরোধী নেতৃত্ব হিসাবে তাঁর বিশ্বাসযোগ্যতা। তাকে পুঁজি করেই মমতা ঝাঁপিয়েছেন, ভিন রাজ্যে। ‘কংগ্রেসকে দিয়ে হবে না’। যদি বিজেপিকে রুখতে চান তাহলে আমার হাত ধরুন। গোয়ায় প্রধান বিরোধী কংগ্রেস। আগামী বছর বিধানসভা ভোট। তার আগেই কংগ্রেসের বিকল্প হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে মরিয়া তৃণমূল নেত্রী। পরিস্থিতি বেগতিক দেখে রাহুল গান্ধীও ছুটেছেন সেই গোয়ায়। নিজেকে বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণে মরিয়া সোনিয়া তনয়ের গোয়ার কথা মনে পড়েছে।

২০১৩ সালে দেশের যে ভূখন্ড থেকে মুখ্যমন্ত্রী থেকে সর্বভারতীয় রাজনীতিতে পদার্পনের সূচনা হয়েছিল মোদির , সেই গোয়াতেই নতুন ভোরের ডাক দিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী। মোদি কংগ্রেস মুক্ত ভারত চেয়েছিলেন। মমতা মনে করেন, বিজেপির বীমা, কংগ্রেস। তাই কংগ্রেসে ভরসা করলে বিজেপি মুক্তি ঘটবে না। তাই জাতীয় কংগ্রেস বিযুক্ত বিকল্প খুঁজতে নিজেই নেমে পড়েছেন। হাতে তাঁর বাংলায় ধারাবাহিক বিজেপি বিরোধিতার সাফল্যের মার্ক শিট। সেই রেকর্ড সঙ্গী করে গোয়া থেকেই তাঁর যাত্রা শুরু দিল্লি অভিমুখে। ২০১৪ পর কি সেই গোয়া কি ফের টার্নিং পয়েন্ট হতে চলেছে ভারতীয় রাজনীতির ? ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি কি অনিবার্য ? সময় হলেই তার জবাব মিলবে।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

মুখ্যমন্ত্রীর চটি ছিঁড়ে যাওয়াকে কটাক্ষ দিলীপের
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
উধাও বিজেপির পতাকা, ঝাড়গ্রামে রাজনৈতিক তরজা
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
ভরাডুবির মরসুম নিয়ে কী সাফাই দিলেন হার্দিক
শনিবার, ১৮ মে, ২০২৪
বজরংবলীর আশীর্বাদ পাবেন ৫ রাশির জাতক
মঙ্গলবার, ৭ মে, ২০২৪
Stadium Bulletin | কোন ৫ কারণে প্লে-অফের দোরগোড়ায় KKR?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সোশ্যাল মিডিয়ায় নির্বাচনী প্রচারে সতর্কবার্তা নির্বাচন কমিশনের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
কখন শচীনের দ্বারস্থ হন কোহলি?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
চোটে জর্জরিত ম্যান ইউয়ের আজ কঠিন লড়াই
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মমতার দিদিগিরি বরদাস্ত করব না, কলকাতায় ফিরেই হুঙ্কার রাজ্যপালের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
অবশেষে স্বস্তির বৃষ্টি কলকাতায়
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সুদীপের বিরুদ্ধে বিধিভঙ্গের অভিযোগ বিজেপির
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
মঙ্গলবার ৪ কেন্দ্রে ভোট, সব বুথে থাকবে কেন্দ্রীয় বাহিনী
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
সন্দেশখালি ভাইরাল ভিডিওতে কন্ঠস্বর গঙ্গাধর-জবারানির, দাবি শান্তি দলুইয়ের
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
জিতলে গম্ভীরের কৃতিত্ব হারলে দায় শ্রেয়সের? প্রশ্ন কিংবদন্তির  
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
রক্ষাকবচ সত্ত্বেও গ্রেফতার বিজেপি নেতা?
সোমবার, ৬ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team