হৃদরোগের আক্রান্ত হয়ে মারা গেলেন বিশিষ্ট চিত্রশিল্পী ওয়াসিম কাপুর। পারিবারিক সূত্রের খবর, সোমবার প্রফুল্ল সরকার ষ্ট্রিটে নিজের বাসগৃহে দুপুরবেলা তাঁর মৃত্যু হয়। লখনৌ শহরে জন্মালেও কলকাতাই ছিল ওয়াসিমের কর্মস্থল।তিনি জন্মগ্রহণ করেছিলেন ১৯৫১ সালে। তাঁর চিত্রকলা যথেষ্ট জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। কলকাতা তথা ভারতবর্ষের বিভিন্ন নামকরা গ্যালারিতে বহুবার তাঁর একক প্রদর্শনী অনুষ্ঠিত হয়েছে। শৈশবে খাট থেকে পড়ে চোট পেয়েছিলেন শিল্পী। এরপর দীর্ঘ ১২ বছর বিছানাতেই তার দিন কেটেছিল। জানালা দিয়েই বাইরের জগতকে তিনি দেখতে পেতেন। নিজের মনের মধ্যে সেগুলো ফ্রেমবন্দি করে রাখতেন পরে আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে সেগুলি এঁকে ফেলতেন। ছেলের আঁকার প্রতি এই আগ্রহ দেখে ওয়াসিমের বাবা তাঁর জন্য আঁকার শিক্ষক রাখেন। তারপর সেই শিক্ষকই তাঁকে আর্ট কলেজে ভর্তি করান। এভাবেই তাঁর বহির্জগতের সঙ্গে সরাসরি পরিচয় হয়। দেবি প্রসাদ চৌধুরী, অতুল বসু, যামিনী রায়,মকবুল ফিদা হুসেন,পরিতোষ সেনদের মত বিখ্যাত শিল্পীদের সান্নিধ্য লাভ করেন তিনি। এরপর দেশে-বিদেশে তাঁর চিত্র-প্রদর্শনী শুরু হয়। প্রসঙ্গত, ভারতের সংসদ ভবন থেকে শুরু করে ললিতকলা একাডেমী, উর্দু একাডেমি সর্বত্র রয়েছে তাঁর শিল্প-সৃষ্টি। তাঁর অন্যান্য বিশিষ্ট চিত্র- সিরিজের মধ্যে অন্যতম ছিল বলিউড জনপ্রিয় অভিনেত্রীদের নিয়ে আঁকা ছবি সিরিজটি। যা নিয়ে কলকাতা সহ ভারতের বিভিন্ন শহরে প্রদর্শনী হয়েছিল। এছাড়াও রাধাকৃষ্ণ এবং অন্যান্য বিভিন্ন সিরিজ সৃষ্টি করেছিলেন তিনি যা সারা পৃথিবীতে প্রশংসিত হয়েছিল। পছন্দ করতেন রুপোলি পর্দার নায়িকাদের আদলে চিত্রকলা রূপায়ণে। বিভিন্ন সাক্ষাৎকারে বলেছেন যে তার নিজের মনে বিরহ, বেদনা, একাকিত্ব ফুটে ওঠে তার ক্যানভাসে। কিন্তু আশ্চর্যজনক ভাবে সেই বিরহ বেদনা ফুটে উঠতো রোমান্টিকতার মাধ্যমে. আর এখানেই ওয়াসিমের জাদু। কয়েক বছর আগে অমিতাভ বচ্চনকে নিয়ে আঁকা একটি বিশেষ ছবি তিনি বিগ-বির হাতে নিজে তুলে দিয়েছিলেন। যা দেখে অভিভূত হয়েছিলেন স্বয়ং অমিতাভ।তাঁর মৃত্যুতে শিল্পীমহলে নেমে এসেছে শোকের ছায়া।