কলকাতা: চণ্ডীচরণ লেটের কথা মনে আছে? ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে বর্ধমান উত্তর কেন্দ্র থেকে সংযুক্ত মোর্চার সিপিআইএম প্রার্থী হয়ে লড়েছিলেন। নিজের চেষ্টায় চণ্ডীচরণ আজ স্টেট এলিজিবিলিটি টেস্ট বা সেট পরীক্ষায় পাশ করলেন। ২৩ তম সেট পরীক্ষায় তাঁর মোট প্রাপ নম্বর ১৬৮। অভাব যার নিত্যদিনের সঙ্গী, নুন আনতে পান্তা ফুরোনোর মতো পরিবারে স্বপ্ন দেখা যেখানে ধৃষ্টতা, সেখানে চণ্ডীচরণ নিজের অদম্য চেষ্টায় সাইকেল সারাইয়ের দোকান থেকে সরাসরি ঢুকে পড়লেন কলেজে অধ্যাপনার দৌড়ে।
একটু পিছনে ফিরে তাকালে চণ্ডীচরণের লড়াইটা আরও স্পষ্ট হবে। বর্ধমান উত্তরের ব্লক ২ রায়ান গ্রামে মা-বাবার সঙ্গে একচিলতে ঘরে বাস চণ্ডীচরণের। ছোট থেকেই বাবার সাইকেল সারানোর দোকানে হাতে ধরে কাজ শেখা। স্কুল-কলেজের গণ্ডী পেরিয়ে বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে এমফিল। তবে, এখনও বাবার সাইকেল সারাইয়ের দোকানে নিত্যদিন কাজ করেন চণ্ডীচরণ। নিজের অভিজ্ঞতা থেকে উপলব্ধি করেছিলেন যে, শুধু এমফিল করে বসে থাকলে হবে না। দারিদ্র্যতার সঙ্গে লড়াইয়ে জিততে হলে আরও এগোতে হবে। সেই থেকে সেট পরীক্ষার জন্য নিজেকে তৈরি করতে থাকেন চণ্ডীচরণ।
এলাকার দরিদ্র বাচ্চাদের টিউশন দিতে থাকেন। যেটুকু টাকা পান তা দিয়েই নিজের হাত খরচ চালান। আজ সেট পরীক্ষার ফলপ্রকাশের পর নিজের লড়াইয়ে সফল হতে পেরে ভীষণ খুশি ৩০ বছরের তরুণ চণ্ডীচরণ লেট। তাঁর এই সাফল্য খুশি তাঁর পরিবার ও এলাকাবাসী। তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। শুভেচ্ছাবার্তা গিয়েছে বাম ছাত্র সংগঠন এসএফআইয়ের তরফেও। নিজের অদম্য জেদ, ইচ্ছাশক্তি ও চেষ্টার কাছে যে দারিদ্রতাও হার মানে তা প্রমাণ করে দেখালেন চণ্ডীচরণ লেট।