মালদহ: লেবার কমিশনারের বাড়িতে খানাতল্লাশি চালাতে থানার আরটি সেলের পুলিসের টিম কেন? মালদহ জেলার কালিয়াচক থানার ৫২ বিঘা গ্রামে মঙ্গলবার রাতে এক ঠিকাদার এসরাউল শেখের বাড়িতে তল্লাশি অভিযান চালায় কালিয়াচক থানার আরটি সেলের পুলিসের টিম। কিন্তু তারা কেন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে অভিযান চালিয়েছে, তা নিয়ে ধোঁয়াশায় রয়েছেন জেলা পুলিস কর্তারা। কেন, কোনও ওয়ারেন্ট ছাড়া ওই শ্রমিক সরবরাহকারী ব্যবসায়ীকে গ্রেফতার করতে গেল পুলিস, সেটাও এখনও পর্যন্ত জানা যায়নি। ব্যবসায়ী এসরাউল শেখ মালদহ জেলা পুলিস সুপার অমিতাভ মাইতির কাছে এই ঘটনার সুবিচার চেয়ে একটি আবেদন করেছেন।
জেলার অতিরিক্ত পুলিস সুপার (গ্রামীণ) অনীশ সরকার বলেন, যে তিন পুলিসকর্মী এএসআই পীযূষ মণ্ডল, কনস্টেবল রাজকুমার ঘোষ, আশিস দেব মঙ্গলবার রাতে অভিযান চালান, তাঁরা থানার আইসি বা কর্তৃপক্ষকে কিছুই জানাননি। কেন তাঁরা জানাননি সেই বিষয়ে তদন্ত চলছে। সাসপেন্ড হওয়া ওই পুলিস অফিসার সহ কনস্টেবলরা কেই পুলিসের পোশাকে ছিলেন না বলেই তদন্তকারী আধিকারিক এএসপি(গ্রামীণ) অনীশ সরকার জানতে পেরেছেন। এমনকি যে টাকা এবং সোনার গয়না তাঁরা উদ্ধার করেছিলেন, সেগুলিরও কোনও সিজার লিস্ট দেয়নি পুলিস।
আরও পড়ুন : Malda robbery: মালদহে ডাকাতির অভিযোগে সাসপেন্ড এএসআই-সহ ৩ পুলিসকর্মী
ঘটনার পর ৪৮ ঘণ্টা কেটে গেলেও এখনও পর্যন্ত ওই ব্যবসায়ীর বাড়ি থেকে খোওয়া যাওয়া টাকা এবং সোনার হদিশ পুলিসের হাতে আসেনি। অভিযুক্ত ওই তিন পুলিসকর্মীকে জিজ্ঞাসাবাদের সময় তাঁরা জানিয়েছেন, যখন টাকা এবং সোনা সহ ওই ব্যবসায়ীকে তাঁরা পুলিসের গাড়িতে তুলছিলেন, সেই সময় ব্যবসায়ী পুলিসের গাড়ি থেকে বলপূর্বক টাকা এবং সোনার গয়না নিয়ে পালিয়ে বাড়ির ভিতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন।
এসরাউল শেখ বলেন, আমার কাছে লেবারদের পেমেন্টের টাকা ছিল। কয়েক ধাপে আমি ব্যাঙ্ক থেকে সেই টাকা তুলেছিলাম। আমার কাছে ব্যাঙ্কের সমস্ত নথি রয়েছে। তদন্তকারী পুলিস অফিসার যদি তা দেখতে চান, আমি তা দেখাতে পারি। যারা আমার বাড়িতে লুটপাট চালিয়েছে, তারা আমাকে জোর করে গাড়িতে তুলছিল। আর ভয় দেখাচ্ছিল যে, আমাকে ওরা ব্রাউন সুগারের কেস দিয়ে চালান করবে। আমার বাড়ি থেকে পুলিস কিন্তু কোনও ব্রাউন সুগার উদ্ধার করতে পারেনি। কালিয়াচক থানাতেও তিনি নিজের এবং পরিবারের নিরাপত্তা চেয়ে একটি আবেদন করেছেন। কিন্তু বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত কালিয়াচক থানা থেকে কেই তাঁর বাড়িতে যায়নি।
কালিয়াচক থানার আইসি মদনমোহন রায় বলেন, এই ঘটনার তদন্ত চলছে। এএসপি গ্রামীণ নিজে তদন্ত করছেন। এখানে আমার কিছুই বলার নেই। কর্তৃপক্ষ আমাকে যা নির্দেশ দেবে আমি সেটাই পালন করব। এদিকে সাসপেন্ড হওয়া তিন পুলিসকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে পুলিসের খাতায় কোনও অভিযোগ আছে কি না, তদন্তকারী অফিসার সেটাও খতিয়ে দেখছেন।