দুর্গাপুর: দুর্ঘটনার মৃত্যু ঘটেছে এক ব্যক্তির। পেশায় ভিক্ষুক ওই ব্যক্তির দেহ নিয়ে শুরু হয়ে গেল দুই পরিবারের দড়ি টানাটানি। দুই পক্ষের নেতৃত্বে রয়েছেন দুই মহিলা। যারা নিজেদের ওই ব্যক্তির স্ত্রী বলে দাবি করেছেন। পরিস্থিতি সামাল দিতে আসরে নামল পুলিশ।
মৃত ব্যক্তির নাম বাবলু মাল। ৪৮ বছরের বাবলু পূর্ব বর্ধমানের রামনগর এলাকার বাসিন্দা। শুক্রবার রাত্রিতে দুর্গাপুরে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু হয় বাবলু মালের। তারপর তাকে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। মৃত্যু হয় শুক্রবার রাত্রে। শনিবার ময়নাতদন্তের জন্য দেহ নিয়ে যাওয়া হয় দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে।
সেই ময়নাতদন্তের পরে দেহ নিয়ে শুরু হয় বচসা। বিধাননগরের আম্মা কলোনির বাসিন্দা সন্তানদের নিয়ে দুর্গাপুরে এসে বাবলু মালকে নিজের স্বামী বলে দাবি করেন সরস্বতী মাল। তিনি ওই মৃতের প্রথম স্ত্রী। অন্যদিকে, দুর্গাপুরের এমএমসির শ্রীপল্লীর বাসিন্দা বর্ণা মাল একই দাবি করেন। যা নিয়ে শুরু হয় বচসা। যা ক্রমে হাতাহাতিতে গড়ায়।
আরও পড়ুন- তালিবান রোধে দেশের স্বার্থে রাজনীতির উপরে উঠে ভাবতে হবে মুসলিম প্রসঙ্গ
স্থানীয় বাসিন্দা সুরেশ সেট জানিয়েছেন যে দুর্ঘটনার পরে বাবলু মালকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে যাতীয় খরচ করেছিল বর্ণা মাল এবং তার সন্তানেরা। অর্থাৎ মৃতদেহ পাওয়ার অধিকার রয়েছে দ্বিতীয় স্ত্রী-র। অন্যদিকে, বর্ণা মাল বলেছেন, “প্রথম বিয়ের বিষয়ে আমি কিছুই জানি না। আমার স্বামী বলে গিয়েছিলেন খয়রাশোলে তাঁর শেষকৃত্য করার কথা। আমরা সেটাই করতে চাই।”
স্বামীর দ্বিতীয় বিয়ের কথা স্বীকার করে নিয়েছেন সরস্বতী মাল। তিনি জানিয়েছেন স্বামী নিয়মিত না থাকলেও মাঝে মাঝে আসতেন। সরস্বতীর বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়েছেন মৃতের মা এবং বোন। মৃতের কন্যা লক্ষ্মী মাল বলেছেন, “আমি ছোট থেকে দেখছি আমার বাবা ভিক্ষা করছেন। আমার মা বর্ণা মালের সঙ্গে সংসার করে কষ্ট করে আমায় মানুষ করে বিয়ে দিয়েছেন। এখন বাবার মৃত্যুর পরে শুনছি প্রথম স্ত্রী-র কথা। এতদিন তাঁরা কোথায় ছিলেন?”
আরও পড়ুন- ভবানীপুরের ভোট নিয়ে দিলীপ-শুভেন্দুর ভিন্নসুর
শনিবার দুপুর থেকেই এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে রীতিমতো উত্তেজনার পারদ চড়িয়ে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতাল চত্বরে। পরিস্থিতি সামাল দিতে ঘটনাস্থলে বিধান নগর ফাঁড়ির পুলিশ। অবশেষে দুই পক্ষকে থানায় ডাকা হয়। মৃতদেহ ফিরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালের মর্গের ভিতরে।