বসিরহাট : নিজের ঘর থেকেই ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় কিশোরীর দেহ। মৃত্যুর পর ময়নাতদন্ত হয় তার। তারপর নিয়ম মেনে কবর দেওয়া হয়। কিন্তু ওই ঘটনার পর থেকেই এলাকার কয়েকজন যুবককে আর খুঁজে পাওয়া হচ্ছে না। সেখান থেকে সন্দেহ দানা বাধে বাবা ও মায়ের মনে। তাঁদের মেয়ে কী সত্যি আত্মহত্যা করেছিল, না তাকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়েছিল, এই সন্দেহ হতে শনিবার ফের একবার কবর থেকে মেয়ের দেহ তুলে ময়নাতদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়।
২০২১ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর ঘটনাটি ঘটেছিল বসিরহাট মহাকুমার মাটিয়া থানার দক্ষিণ রঘুনাথপুর ফকিরপাড়ায়। মৃত কিশোরীর নাম ফারহানা খাতুন (১৫)। অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী ফারহানা। তার বাবা মহম্মদ আলী গাজী, মা রেহানা সুলতানা বিবি কর্মসূত্রে উত্তর ২৪ পরগনার ব্যারাকপুরে থাকতেন। ফারহানা পড়াশোনার সঙ্গে প্রতিবেশীর বাড়িতে পরিচারিকার কাজ করতেন। সে ১৯ সেপ্টেম্বর সকালে তার ঘর থেকে উদ্ধার হয় ফারহানার ঝুলন্ত মৃতদেহ। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে মাটিয়া থানার পুলিশ। খবর দেওয়া হয় ফারহানার মা ও বাবাকে। ফারহানার দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বসিরহাট জেলা হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু কেন এই মৃত্যু, সেই বিষয়ে কোনও রকম তল্লাশি চালায়নি মাটিয়া থানার পুলিশ। ময়নাতদন্তের পর নিজেদের গ্রামেই মেয়ের দেহ কবর দেন বাবা ও মা।
আরও পড়ুন : দুধের বালতিতে গয়না! পাচারের আগেই বিএসএফের জালে
ফারহানার বিষয়টি যখন প্রায় চাপা পরে গেছে, তখন ফারহানার অভিভাবক জানতে পারেন, তাঁদের মেয়ের মৃত্যুর পর থেকেই এলাকার প্রায় ৭জন যুবককে আর ডেকে যাচ্ছে না। বিষয়টি জানার পর সন্দেহ হয় তাঁদের। সত্যি কি আত্মহত্যা করেছিল তাঁদের মেয়ে, না তাকে ধর্ষণ করেছিল ওই ৭ জন যুবক। ধর্ষণের পর খুন করে ফারহানার দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে সন্দেহ হয় তাঁদের। এরপর বসিরহাট মহকুমা আদালতে পুরো বিষয়টি জানান ফারহানার বাবা মহম্মদ আলী গাজী। তিনি অভিযোগ জানান যে, তাঁর মেয়েকে ধর্ষণ করে খুন করা হয়। কেউ যাতে সন্দেহ না করে, সে কারণে ফারহানার দেহ ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছিল বলে অভিযোগ জানান তিনি। তিনি ফের একবার তাঁর মেয়ের দেহ ময়নাতদন্তের দাবি জানান। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে শনিবার সকালে ম্যাজিস্ট্রেট প্রিয়ব্রত দত্তর নির্দেশে চিকিৎসক সুকদেব বিশ্বাস, মাটিয়া থানার পুলিস আধিকারিকের উপস্থিতিতে কবর থেকে ফারহানার মৃতদেহ তোলা হয়। দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয় বসিরহাট জেলা হাসপাতালে। নাবালিকার মৃত্যুর ঘটনায় ওই ৭ জন যুবকের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। পুলিশ তাঁদের খোঁজে তল্লাশি শুরু করেছে। ধর্ষণ না, আত্মহত্যা, তা দ্বিতীয়বারের ময়নাতদন্তের পর স্পষ্ট জানা যাবে বলে মনে করছে পুলিশ।