একের পর এক জাল চক্রের খবর সামনে আসছে। এবার জাল চক্রে নাম জড়ালো বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু ঘনিষ্ঠ রাখাল বেরা ও হিমাংশু মান্নার। ভুয়ো সরকারি লোগো ও জাল প্যাড ব্যবহার করে কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের আড়ালে চাকরি দেওয়ার জাল চক্র চালানোর অভিযোগ উঠেছে।
কাঁথির পৌর এলাকার ধনদিঘির বাসিন্দা সৌম্যব্রত পাল প্রতারিত হয়েছেন। তাঁর অভিযোগের ভিত্তিতে একজনকে গ্রেফতার করে কাঁথি থানার পুলিশ। অভিযুক্তের নাম সুজিত পয়ড়্যা। তাঁকে বীরভুম থেকে গ্রেফতার করে নিয়ে আসা হয়। বৃহস্পতিবার তাঁকে আদালতে তোলা হলে অভিযুক্তের জামিনের আবেদন নাকচ করে ১০ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে কাঁথি আদালত। সুজিত পয়ড়্যা সহ ১০ জনের বিরুদ্ধে ৪১৯,৪২০,৪৬৫,৪৬৮,৪৭১,৪৭২,৪৭৩,৪০৬ ও ১২০বি ধারায় মামলা দায়ের করেছে পুলিশ। এই অভিযুক্ত ১১জনের মধ্যে রয়েছে শুভেন্দু ঘনিষ্ট রাখাল বেরা ও হিমাংশু মান্না।
২০১৯ সালে কাঁথির কলেজ রোডে সিস্টার নিবেদিতা স্বাক্ষরতা মিশন নামের একটি কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্র শুরু করে সুজিত। অভিযুক্তের বাড়ি হলদিয়া ব্রজলালচকে । কাঁথিতে বাড়ি ভাড়া নিয়ে এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালাতো তাঁরা। এর আড়ালে প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ওয়েবসাইটে – সরকারি লোগো জাল করে রাষ্ট্রীয় মাধ্যমিক শিক্ষা অভিযান প্রকল্পে বিভিন্ন স্কুলে ভোকেশনাল শিক্ষক নিয়োগের ভুয়ো বিজ্ঞপ্তি দেওয়া হত। এরপরই চাকরি পাইয়ে দেওয়ার নামে কয়েক লক্ষ টাকা নিয়ে বিভিন্ন স্কুলে শিক্ষক নিয়োগের জাল নিয়োগ পত্র দেওয়া হত।
শুধু তাই নয় প্রভাবশালীদের নাম ব্যবহার করে স্কুল কতৃপক্ষকে প্রভাবিত করে বেশ কয়েক জনকে শিক্ষক হিসেবে নিয়োও করেন তাঁরা। তিন থেকে চার মাস বেতন পান ওই যুবকরা। সরকারি লোগো থাকায় স্কুল কতৃপক্ষের অবিশ্বাস করার জায়গা তৈরি হয়নি। তবে, হঠাৎ করে বেতন বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যারা চাকরির জন্যে টাকা দিয়েছে তাঁরা বুঝতে পারন প্রতারিত হয়েছেন।
আরও পড়ুন – শুভেন্দুর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের প্রাক্তন দেহরক্ষীর স্ত্রীর
প্রতারিত সৌম্যব্রত পাল অভিযোগ করেছেন, ‘চাকরির জন্যে সাড়ে তিন লক্ষ টাকা দেওয়ার পর খেজুরির একটি স্কুলের কম্পিউটার শিক্ষক হিসেবে যোগ দিই। বেতনও পাচ্ছিলাম। হঠাৎ বেতন বন্ধ হয়ে যায়। কতৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করলে জানানো হয় লকডউনের জন্যে বেতন বন্ধ। পরে এরিয়ার হিসেবে বেতনের টাকা পেয়ে যাবেন। কিন্তু আমার কয়েকজন সহকর্মীর সঙ্গে কথা বলে জানতে পারি আমরা প্রতারিত হয়েছি।’
প্রতারিত সৌম্যব্রত পালের আইনজীবী মজ্ঞুর রহমন খান জানিয়েছেন, শুধু এই জেলা নয় আরও কয়েকটি জেলায় কম্পিউটার প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের নামে প্রতারণাচক্র চালাতেন অভিযুক্তরা।