বাঁকুড়া: স্বামী মরতেই ভিটে ছাড়তে হয় তাঁকে৷ আশ্রয় হয় ছেলের শ্বশুর বাড়িতে৷ সেখান থেকেই ভিটে ফিরে পেতে আদালতের দ্বারস্থ হন বৃদ্ধা৷ আইনি লড়াই শেষে প্রায় ১০ মাস পর ভিটেয় ফিরলেন বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের ৭০ বছরের বৃদ্ধা। স্বামীর তিল তিল করে গড়া নিজের বাড়ি ফিরতে পেরে অনেক দিন পর স্বস্তিতে বৃদ্ধা।
বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুরের ১৯ নম্বর ওয়ার্ডের ঝাপড় মোড় এলাকার প্রগতি পল্লীর বাসিন্দা রাসমণি নাগ৷ ২০১৭ সালে তাঁর স্বামী মারা যান। তিন ছেলে ও বৌমাকে নিয়ে সংসার রাসমণি দেবীর। কিন্তু স্বামী মারা যাওয়ার পর বাড়ি দখলকে ঘিরে সংসারে অশান্তি শুরু হয়। অভিযোগ, বাড়ির দখল নিতে মেজ ও ছোট ছেলে-বউমারা বৃদ্ধার উপর অত্যাচার শুরু করেন৷ সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বৃদ্ধার উপর অত্যাচার বাড়তে থাকে৷ প্রতিবাদ করেও লাভ হয়নি। বৃদ্ধার বড় ছেলে-বৌমারা প্রতিবাদ করেও কিছু করতে পারেননি। বরং, দিনের পর দিন মেজ ও ছোট-বৌমাদের অত্যাচার বাড়তে থাকে৷ সীমাহীন অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে ভিটে ছাড়েন বৃদ্ধা৷
পরিবার সূত্রে খবর, গত ২৪ আগস্ট ২০২০ সালে বৃদ্ধাকে ঘর থেকে বের করে দেওয়া ওই বৃদ্ধা মা’কে। শুধু মা নয়, বড় দাদা-বউদিকেও ঘর থেকে বের করে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এরপর বড় ছেলের শ্বশুরবাড়িতে ঠাঁই হয় তাঁদের। বড় ছেলের সহযোগিতায় বাড়ি ফেরার আর্জি নিয়ে ২০২০ নভেম্বর মাসে কলকাতা হাই কোর্টের দ্বারস্থ হন বৃদ্ধা। গত ২৫ জুন শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্ট ওই বৃদ্ধাকে পুলিশি নিরাপত্তায় বাড়িতে ফিরিয়ে দেওয়ার নির্দেশ দেন। একই সঙ্গে মেজ ও ছোট ছেলে-বউমাদের বাড়ি থেকে বের করে দেওয়ার নির্দেশে দিয়েছে আদালত। হাই কোর্টের সেই নির্দেশ অনুযায়ী বিষ্ণুপুর থানার পুলিশ ওই বৃদ্ধাকে প্রগতি পল্লীর বাড়িতে পৌঁছে দেন৷ আইনি লড়াউয়ের পর নিজের বাড়িতে ফিরতে পেরে হাঁফ ছেড়েছেন বৃদ্ধা।