মেদিনীপুর/বালুরঘাট: কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবিতে আজ সোমবার ভারত বনধের (Bharat Bandh) ডাক দিয়েছে কৃষক সংগঠনগুলি৷ তার মিশ্র প্রভাব পড়ল রাজ্যের জেলাগুলিতে৷ সকাল থেকে লাল পতাকা হাতে রাস্তায় বেরিয়ে পড়েন বাম ট্রেড ইউনিয়নগুলির (Trade Union) সদস্যরা৷ তাঁদের দাবি, মানুষ বনধকে সমর্থন করেছে৷ রাস্তায় লোক নেই৷ কিন্তু এর বিপরীত ছবিও ধরা পড়েছে৷ রাস্তায় কাজে বেরিয়ে নাকাল হতে হয় নিত্যযাত্রীদের৷ তাঁদের একাংশের বক্তব্য, এভাবে বনধ ডেকে কোনও সমস্যার সমাধান হয় না৷ শুধু মানুষের হয়রানি হয়৷
আরও পড়ুন: ৯৫ কিলোমিটার বেগে আছড়ে পড়ল ঘূর্ণিঝড় গুলাব, প্রাণ গেল ২ মৎস্যজীবীর
সকাল থেকেই মেদিনীপুর সেন্ট্রাল বাসস্ট্যান্ডে (Medinipur Central Bus Stand) যাত্রীদের ভিড় চোখে পড়ে৷ বাস না পেয়ে স্ট্যান্ডেই তাঁদের দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতে হয়৷ অথচ সার দিয়ে দাঁড়িয়ে বেসরকারি বাস৷ একটা বাসও নামেনি৷ অন্যদিন দিঘা রুটে ২৫০টি বেসরকারি বাস চলে৷ আজ সব বন্ধ৷ বাস চালক তাপস ঘোষ বলেন, ‘কিছু গাড়ি যাচ্ছে৷ প্যাসেঞ্জার হবে না বলে গাড়ি বন্ধ রেখেছি৷’ হাতে গোনা কয়েকটা সরকারি বাস চলছে বটে৷ কিন্তু অভিযোগ, সরকারি বাস আটকে রাস্তায় বিক্ষোভ দেখান বনধ সমর্থনকারীরা৷ যদিও পুলিশ তাদের সেখান থেকে সরিয়ে দেয়৷ বনধ সমর্থকদের গা-জোয়ারি দেখে বিরক্ত প্রকাশ করেন যাত্রীরা৷ দুর্গাপুর যাবেন বলে অনেকক্ষণ বাসে বসেছিলেন মেদিনীপুরের বাসিন্দা তপন পাত্র৷ তিনি বলেন, ‘আমরা তো খেটে-খাওয়া মানুষ৷ বনধ করলে তো পেট চলবে না৷ বনধ করে সমস্যা মেটে না৷’
উত্তরবঙ্গের জেলাগুলিতে বনধের মিশ্র প্রভাব পড়েছে৷ জলপাইগুড়িতে অনেকেই দোকানপাট খোলা রাখেন৷ আবার অনেক জায়গায় বাজার-হাট শুনশান৷ শহরের শান্তিপাড়া এনবিএসটিসি বাস ডিপোর সামনে সরকারি বাস আটকানোর চেষ্টা করেন বনধ সমর্থকরা। পরে পুলিশ এসে তাদের সরিয়ে বাস চলাচল স্বাভাবিক করে৷ সিটুর সহ-সভাপতি কৃষ্ণ সেন বলেন, ‘ধর্মঘটকে সফল করার জন্য সক্রিয়ভাবে রাস্তায় নেমেছি৷ শান্তিপাড়াতে পুলিশ আমাদের সরিয়ে দিয়ে গাড়ি চালাচ্ছে ঠিকই৷ মানুষ ধর্মঘটকে সমর্থন করছে৷ তার প্রমাণ গাড়িতে কোনও যাত্রী নেই৷ এটা দেশ বাঁচানোর ধর্মঘট৷’ তবে বনধের সেই অর্থে প্রভাব পড়েনি জলপাইগুড়ির চা বাগানগুলিতে৷ একাধিক চা বাগান খোলা৷ সকাল থেকে কাজে যোগ দিয়েছেন বাগানের শ্রমিকরা৷ চলছে পাতা তোলার কাজ৷
আরও পড়ুন: দাবি মতো চাঁদা না দেওয়ায় কচুরি বিক্রেতাকে ফুটন্ত তেলে ফেলার অভিযোগ
দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাটে বনধের তেমন প্রভাব পড়েনি৷ আর পাঁচটা দিনের মত স্বাভাবিক ভাবেই বাস চলছে৷ তবে বেলা গড়াতেই রাস্তা বনধ সমর্থকারীদের দেখা মেলে৷ স্থানীয় বাজারে ঢুকে সবজি ও মাছের বাজার বন্ধের আবেদন জানান৷ কেউ কেউ তৎক্ষণাত দোকানের ঝাঁপ ফেলে দিলেও বনধ সমর্থনকারীরা চলে যেতেই আবার দোকান খুলে কেনা-বেচা শুরু করেন৷