বাঁকুড়া : বাঁকুড়ায় ই-ওয়ালেট জালিয়াতি কাণ্ডে এবার খোঁজ নতুন চক্রের। এবার খোঁজ মিলল ভুয়ো কিউ আর কোড বানিয়ে জালিয়াতি চক্রের। এই ঘটনার তদন্তের মাঝেই পুলিশের তদন্তে উঠে এল অন্য আরও এক চক্রের খোঁজ। বাঁকুড়া জেলা জুড়ে ডিজিটাল দুনিয়াকে কাজে লাগিয়ে এক শ্রেণির জালিয়াতি চক্র যে গজিয়ে উঠেছে তাতে তদন্তে নেমে চক্ষু চড়কগাছ তদন্তকারী আধিকারিকদের। একের পর কে চাঞ্চল্যকর তথ্য উদ্ধার কে ঘিরে বেরিয়ে আসছে একের পর এক চক্রের হদিশ।
আরও পড়ুন : হাজার হাজার ফেক সিম, ই-ওয়ালেট প্রতারণা চক্রের পর্দা ফাঁস বাঁকুড়ায়
গত ১০ অগস্ট বাঁকুড়া জেলায় প্রথম ই-ওয়ালেট জালিয়াতি কাণ্ড সামনে আসে। এই ঘটনার তদন্ত শুরু হতেই একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে আসতে শুরু করে। এই ঘটনার তদন্ত চলাকালীন ১৩ অগস্ট রাতে বাঁকুড়ার ছাতনা থানার আড়রা গ্রামের কাছে জেটিয়া পুকুরে জলের ধার থেকে উদ্ধার হয় ৯০ টি মোবাইল ফোন। বিপুল সংখ্যক এই মোবাইল ফোন উদ্ধারের ঘটনা তদন্তের মোড় ঘুরিয়ে দেয়। মোবাইল উদ্ধার করে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। পুলিশ মনে করছে, একদিকে যখন এক চক্রের তদন্ত শুরু হয়েছে অন্য চক্র তখন প্রমাণ লোপাটের জন্য মোবাইল গুলি জলে ফেলে দেয়। এই ঘটনার তদন্তে নেমে পুলিশের হাতে উঠে আসে ছাতনা এলাকায় ই ওয়ালেট ও সিম জালিয়াতি চক্রের বিষয়। তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পারে, অভিষেক মণ্ডলের পাশাপাশি বাঁকুড়ার ছাতনা থানার খড়বোনা গ্রামে পৃথক ভাবে ই-ওয়ালেট চক্র ফেঁদে বসেছিল সব্যসাচী কুণ্ডু নামে অপর এক যুবক।
আরও পড়ুন : বাঁকুড়ায় পুকুর থেকে উদ্ধার ৮৮টি মোবাইল ফোন, সাইবার প্রতারণায় যোগ খুঁজছে পুলিশ
পৃথক এই চক্র ভুয়ো আধার কার্ডের ভিত্তিতে হাজারে হাজারে সিম কার্ড আক্টিভেট করত। সেই সিম কার্ডের ই-ওয়ালেট তৈরি করত এবং বিভিন্ন রাজ্যের জালিয়াত চক্রকে সরবরাহ করত। সব্যসাচীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে গঙ্গাজলঘাটি থেকে বাপি গরাইকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দু’জনের কাছ থেকে নতুন করে উদ্ধার হয়েছে প্রায় ৬,০০০টি অ্যাক্টিভেটেড সিম কার্ড। সব্যসাচীর বাড়িতে হানা দিয়ে পুলিশ মোবাইল ফোন, কম্পিউটার, ভুয়ো আধার কার্ড পেয়েছে। নতুন এই জালিয়াত চক্রের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া প্রায় ৫৭ টি কিউ আর কোড এই ঘটনায় তদন্তে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। জালিয়াত চক্রটি এই কিউ আর কোড গুলি ঠিক কি কাজে লাগাত তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ। নতুন করে ধৃত ২ জনকে নিজেদের হেফাজতে নিয়ে তদন্তের অগ্রগতি চাইছে পুলিশ। সব মিলিয়ে ই ওয়ালেট জালিয়াতি ও সিম জালিয়াতি চক্রে মোট ১২ জন গ্রেফতার হয়েছে। তাদের আলাদা আলাদা ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে এই চক্রের জাল কতদূর বিস্তৃত তা জানার চেষ্টা করছে পুলিশ। মোট ৫ টি মোবাইলকে ফরেন্সিক টেস্টের জন্য পাঠানো হয়েছে। উদ্ধার হওয়া হার্ডডিস্কগুলিও ফরেন্সিক টেস্ট করার কথা ভাবছে জেলা পুলিশ। এই চক্রের সঙ্গে ভিন রাজ্যের যোগ রয়েছে কিনা, সেটা গুরুত্ব সহকারে খতিয়ে দেখছে তদন্তকারী দল। ধৃত ২ জনেকে ৫ দিনের পুলিশ হেফাজতের নির্দেশ দিল বাঁকুড়া জেলা আদালত।