দার্জিলিং : বৃষ্টি কমতেই ক্রমেই স্বাভাবিক হচ্ছে পাহাড়। বিকেল থেকেই উদ্ধারকারী দল রাস্তা সারাইয়ের কাজে নামে। ফলে, সন্ধের মধ্যেই প্রায় সব রাস্তায় খুলে গিয়েছে। স্বাভাবিক হচ্ছে যোগাযোগ ব্যবস্থা।
গত সোমবার রাতে থেকে ক্রমাগত বৃষ্টির ফলে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল দার্জিলিং জুড়ে। বিভিন্ন জায়গায় ধস নেমে রাস্তা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ধসের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল একাধিক বাড়িঘর। পর্যটন মরশুম হওয়ার কারণে পাহাড়ে অনেক পর্যটক বেড়াতে গিয়েছিল। বিভিন্ন জায়গায় আটকে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছিলেন তাঁরা।
যারা আগে থেকেও পাহাড়ে ঘুড়তে যাবার জন্য বুকিং করেছিল তাঁরাও নিশ্চিত হতে পারছিলেন না পাহাড়ে যাবার ব্যাপারে। মঙ্গলবারের পরিস্থিতি ছিল ভয়াবহ। সারাদিন ধরে পাহাড়ের বিভিন্ন জায়গা থেকে একের পর এক শুধু ধসের খবর আসছিল। কালিম্পং ও লাভাত মাঝে পর্যটকেরা আটকে পড়েছিল।
বৃষ্টি কমতেই আবার নিজের ছন্দে ফিরছে পাহাড়। শ্বেতী জোড়ার কাছে ও ২৯ মাইলে ধসের ফলে ১০ নং জাতীয় সড়ক বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। ফলে, বন্ধ ছিল সিকিম ও শিলিগুড়ির মধ্যে দিয়ে মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ। সন্ধ্যার কিছুক্ষণ আগেই ধস সরিয়ে শ্বেতির জোড়া দিয়ে যান চলাচল শুরু হয়েছে। যদিও পাহাড়ের বেশ কিছু জায়গা দিয়ে ওয়ান ওয়ে হিসাবে গাড়ি চলাচল করছে।
আরও পড়ুন – তিস্তার জলস্তর কমতে উঠে গেল লাল সতর্কতা
কালিম্পং ও লাভায় আটকে পড়া পর্যটকদের বুধবার সকালে পায়ে হেঁটেই প্রশাসনের লোক এবং পর্যটন ব্যবসায়ীরা জলখাবার ও চা পৌঁছে দেন। এরপর থেকেই পর্যটকরা ধীরে ধীরে সমতলের দিকে ফিরে আসতে থাকেন। শুধু ৫৫ নম্বর জাতীয় সড়কের মূল রাস্তার অনেকটাই ধসে যাওয়ায় এখনো বন্ধ হয়ে আছে।
শিলিগুড়ি থেকে দার্জিলিং যাওয়ার পথ এবং রোহিনী বা পাংখাবাড়ির পথ খোলাই ছিল। বাংলা ও সিকিমের সংযোগকারী রংপুর ক্ষতিগ্রস্ত বৃষ্টিতে। এন এইচ আই ডি সি এল এর প্রতিনিধিরা জানিয়েছেন ১০ টন পর্যন্ত গাড়ি ওই ব্রীজ দিয়ে যাতায়াত করতে পারবে।
আরও পড়ুন – উত্তরবঙ্গে Yellow Alert, আলিপুরদুয়ার জেলায় ভারী বৃষ্টির আশঙ্কা
গত দুদিনে সবথেকে বেশি বৃষ্টিপাত হয়েছে কালিম্পং জেলায়। কালিম্পং জেলায় ৩৩৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। যার ফলে ১১২টি ঘর ধসের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। প্রায় ৪৬ জায়গার উপরে ধস নেমেছে। যেসব পর্যটকরা গত দুদিন পাহাড়ে আটকে ছিল তাদের জন্য রাজ্য সরকার পক্ষ থেকে দুটো পৃথক বাস এবং একটি এসি বাস কলকাতা পর্যন্ত চালানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার বৃষ্টি না হলে। নতুন করে কোথাও ধস না নামলে পাহাড়ের সবকটি রাস্তায় খুলে গিয়ে স্বাভাবিক ছন্দ ফিরে আসবে পাহাড়ে।