বারাসত: ২১ জুলাই রাতে পয়েন্ট ব্ল্যাংক রেঞ্জ থেকে গুলি করা হল এক তৃণমূল কর্মীকে। সূত্রের খবর অনুযায়ী, প্রায় সাড়ে ১০টা নাগাদ বিরাটির বণিক মোড় তৃণমূলের দলীয় কার্যালয় থেকে বাড়ি ফিরছিলেন তৃণমূল কর্মী শুভ্রজিৎ দত্ত(৩৯)। অভিযোগ অনুযায়ী, দুটি বাইকে করে আসা বেশ কয়েকজন বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতী শুভ্রজিৎকে লক্ষ্য করে গুলি চালায়। ঘটনাস্থলে লুটিয়ে পড়ে শুভ্রজিৎ। স্থানীয়রা শুভ্রজিৎ কে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে নিমতা থানা বিশাল পুলিশবাহিনী। এই ঘটনার পরবর্তীতে যাতে আর কোনও উত্তেজনা সৃষ্টি না হয় রাত ভোর গোটা এলাকায় চলে পুলিশি টহলদারি। এই ঘটনায় স্থানীয় তৃণমূল নেতা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। বৃহস্পতিবার ঘটনাস্থলে পৌঁছন রাজ্যের মন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য। তবে, বিজেপির তরফ থেকে কোনও প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি এখনও।
সূত্রের খবর অনুযায়ী, মৃত এই তৃণমূল কর্মী শুভ্রজিৎ দত্ত ওরফে পিকুনের সঙ্গে প্রায় ১৫ বছরের বন্ধুত্বের সম্পর্ক ছিল বাবুলালের সঙ্গে। দুজনেই ওই এলাকায় ইমারতি দব্যের সিন্ডিকেটে যুক্ত ছিল। এই ব্যাবসা বাড়ানোর জন্য মৃত পিকুনের থেকে তাঁর বন্ধু বাবুলাল ৪ লক্ষ টাকা ধার নেয়। পরে ওই টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। তবে, ২০১৮ সালে ওই টাকা ফেরত চাইলেই সম্পর্কে চিড় ধরে। ফলে দুজনের ব্যবসায়িক বিচ্ছেদ ঘটে। এলাকার আরেক প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ব্যাবসায়ী বিপ্লব (মহারাজ) মুখার্জির সঙ্গে মৃত শুভ্রজিৎ ওরফে পিকুনের ঘনিষ্ঠতা বাড়ে। অন্যদিকে বাবুলালের সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা বাড়ে বিজেপির। নানারকম পুলিস কেসে জড়িয়ে বাবুলাল এলাকাছাড়া হয় ।২০২১ বিধানসভা ভোটের আগে এলাকাছাড়া বাবুলাল আবার এলাকায় ফিরে আসে। ভোটে বিজেপির হয়ে কাজও করে। বাবুলাল এলাকায় ফিরে আসায় মহারাজ গোষ্ঠী অস্বস্তিকর অবস্থায় পড়ে ।
এরইমধ্যে প্রভাবশালী সিন্ডিকেট ব্যাবসায়ী মহারাজ জানতে পারে, তাঁর ঘনিষ্ঠ পিকুন বাবুলালের থেকে টাকা পায়। মহারাজ পিকুনকে বাবুলালের থেকে টাকা চাওয়ার কথা বলে। বাবুলাল টাকা দিতে অস্বিকার করে। এরপর ২১ জুলাই দুপুরে বাবুলালকে টার্গেট করা হয় । তাঁর মাথায় একটি মার্বেল টাইলস দিয়ে আঘাত করে মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয় । এই খবর বাবুলাল গোষ্ঠীর কাছে পৌছানোর পর থেকেই তৃণমূল কর্মী পিকুনও টার্গেট হয়ে যায়। বিকেলের পর থেকেই পিকুনের গতিবিধির দিকে নজর রাখছিল বাবুলাল গোষ্ঠী। রাতেব কারফিউ থাকার ফলে ফাঁকা ছিল এলাকা। পিকুন পার্টি অফিস থেকে বেরানোর পরেই দুটি বাইক তাঁকে ধাওয়া করে। দ্বিতীয় বাইকের চালকের আসনের পিছনে বসা আততায়ী পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে তাঁকে গুলি করে। ফলে প্রাথমিক তদন্তে মনে করা হচ্ছে, পুরানো এই শত্রুতার জেরেই আক্রমণ। ইতিমধ্যেই গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করছে পুলিশ। খবর নেওয়া হচ্ছে এই ঘটনায় স্থানীয় কেউ রয়েছেন নাকি ভাড়া করা সুপারি কিলার মারফত করা হয়েছে।