মুর্শিদাবাদ: ওরা দু’জন একে অপরকে ভালোবাসে। সেই সম্পর্ক মেনে নিতে পারেনি বাড়ির লোকেরা। চলত নিয়মিত অত্যাচার। বাড়ির লোকের অত্যাচার সহ্য করতে না পেরে বহরমপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করেছিলেন দুই মহিলা। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি।
পুলিশ অভিযোগ শুনেও কোনও পদক্ষেপ করেনি। কারণ ওরা দু’জনেই মেয়ে। সমকামী। সমাজ এখনও এ ধরনের ভালোবাসা সহজে মেনে নিতে পারে না। অত্যাচার থেকে বাঁচতে তাই কলকাতা হাইকোর্টের সরকারি তালিকাভুক্ত এক রূপান্তরকামী আইনজীবী অংকনী বিশ্বাসের দ্বারস্থ হয়।
ভেবেছিলেন এবার লড়াইটা জিততে পারবে। কিন্তু না। গোটা বিষয়টি জানতে পেরে ওদের বাড়ির লোক রূপান্তরকামী আইনজীবী অংকনী বিশ্বাসের নামেও থানায় অভিযোগ দায়ের করে। তিন জন কোনওক্রমে পালিয়ে গ্রেফতারি এড়ান।
আরও পড়ুন- লিভ ইনে আছেন, এবার বিয়ে করতে চান
কিন্তু এ ভাবে কতদিন? শেষপর্যন্ত কলকাতা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। আবেদন করা হয়েছিল যাতে তাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ খারিজ করে কলকাতা হাইকোর্ট। গোটা ঘটনা শুনে বিচারপতি রাজ শেখর মান্থা জানিয়ে দেন সমপ্রেমে কোনও আইনি বাধা নেই। তাঁদের বিরুদ্ধে যে অভিযোগ করা হয়েছে তা বৈধ নয়।
দুই সমকামি এবং রূপান্তরকামী আইনজীবী বিরুদ্ধে বহরমপুর থানায় দায়ের করা অভিযোগও খারিজ করা হয়েছে। এ ছাড়াও তদন্তের সময় যে সমস্ত নথি আটক করা হয়েছে তাও পুলিশকে ফিরিয়ে দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালত জানিয়েছে, সমলিঙ্গের সম্পর্কে কোনওরকম বাধা তৈরি করতে পারবে না মেয়েদের পরিবারের লোকেরা।
আরও পড়ুন- আইনজীবীর চেম্বার বিয়ের আসর!
সমকামিতাকে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছিল ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩৭৭ ধারা আইনে। ২০১৮ সালে সেই আইন বাতিল করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট। সমলিঙ্গে প্রেম আইনের চোখে আর অপরাধ নয়। তবে, সমলিঙ্গে প্রেম আজও সমাজে ছুঁতমার্গ। তাও আরও একবার চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দিল মুর্শিদাবাদের এই ঘটনা।