কলকাতা: কখনও ভুয়ো আইএএস, আবার কখনও বা পুরকর্তা! ২২ জুন ভুয়ো ভ্যাকসিনকাণ্ডে কসবা থেকে অভিযুক্ত দেবাঞ্জন দেবকে গ্রেফতার করার পর তদন্তে উঠে আসছে একের পর এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। দেবাঞ্জন সরকারি জাল রাবার স্ট্যাম্প তৈরি করতেন যাদবপুরের একটি দোকান থেকে। এ ব্যাপারে আরও তথ্য পেতে সোমবার দোকানের সঙ্গে যুক্ত সুব্রত দে ও শুভজিৎ ঘোষ নামে দুই ব্যক্তিকে জেরা করেন গোয়েন্দা আধিকারিকরা।
আরও পড়ুন লালবাজারের আতসকাচে দেবাঞ্জনের মহিলা সঙ্গী
অভিযোগ ছিল পুরসভাকে নাম ভাঙিয়ে ভুয়ো ভ্যাকসিন শিবিরের আয়োজন করেছেন দেবাঞ্জন। তদন্তের গতিপ্রকৃতি এগোতেই ক্রমশ লম্বা হচ্ছে তাঁর অপরাধের তালিকা। ছাত্র থেকেই প্রতারণা আর মিথ্যে কথায় মাস্টার ছিলেন দেবাঞ্জন। জালিয়াতি চালিয়ে যেতে ব্যবহার করতেন নীলবাতির গাড়ি ও সরকারি স্টিকার। ভুয়ো পরিচয় দিয়ে ই-মেল করেছিলেন সিরাম ইনস্টিটিউটেও। লালবাজার গোয়েন্দা সূত্রের খবর, মঙ্গলবার নিউমার্কেটের পাশে একটি ফ্ল্যাটে সরকারি অনুমোদন ছাড়া একটি টিকা শিবিরের আয়োজন করেন দেবাঞ্জন। নিজেকে পুরসভার যুগ্ম কমিশনর হিসাবেও পরিচয় দেন তিনি। টিকা শিবির থেকে টিকা গ্রহণ করেন সাংসদ মিমি চক্রবর্তী। সরকারি স্টিকার দেওয়া স্যানেটাইজার ও মাস্ক বিলি করা হচ্ছিল শিবির থেকে।
আরও পড়ুন নবান্নের প্যাড জাল করে বিএসএফ রক্ষী নিয়োগ দেবাঞ্জনের
অভিনেত্রী মিমির অভিযোগের ভিত্তিতেই আটক করা হয় দেবাঞ্জনকে। তদন্তে নেমে একের পর এক জাল সরকারি নথি, রাবার স্ট্যাম্প, নবান্নের নামে নোটপ্যাড, মেডল এমনকী ভুয়ো ‘বঙ্গবিভূষণ’ স্মারক উদ্ধার হয়। তদন্তকারীদের বক্তব্য, নিজেকে সরকারি আমলা পরিচয় দিয়ে তথ্য জাল করে বিভিন্ন জায়গা থেকে টাকা নিতেন দেবাঞ্জন। কলকাতা পুরসভার যুগ্ম কমিশনর পরিচয় দিয়েও প্রতারণার জাল বুনে ছিলেন দেবাঞ্জন। পুর কমিশনরের সাক্ষর জাল করে তৈরি করেন ভুয়ো আইকার্ড। পুরসভার নামে একাধিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টও খুলেছিলেন তিনি। অ্যাকাউন্ট খুলতে ব্যবহার করতেন পুরসভার নথি, রাবার স্ট্যাম্প। কলকাতা পুরসভার হলোগ্রাম ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে তাঁর বিরুদ্ধে। পুরসভার জাল ব্যানার, হোর্ডিং বানিয়ে তিলজলায় ‘দুয়ারে সরকার’ আয়োজন করেন। জাল রবার স্ট্যাম্প তৈরি করতে নিজে যাদবপুর ৮ বি বাসস্ট্যান্ডের কাছে ইমপ্রেশন নামে একটি দোকানে যেতেন দেবাঞ্জন।