দুর্গাপুর : দুর্গাপুর শিল্পাঞ্চলে চড়া সুদ কারবারিদের দাপটে মঙ্গলবার কলেজ পড়ুয়া এক যুবকের মৃত্যু ঘিরে রাত পর্যন্ত ব্যাপক উত্তেজনা ছড়ায়। সেই রাতেই দূর্গাপুর থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। মৃতের নাম রোহান দাস (২০)।
আরও পড়ুন : বৃষ্টি মাথায় ভ্যাকসিন নিতে গিয়ে চরম দুর্ভোগে দুর্গাপুরবাসী
সুদ কারবারিদের দাপটে এবং দাদার অন্যায় কাজের বলি হতে হল ভাইকে। রোহনের দাদা রাহুল দাস ব্যবসা সূত্রে লক্ষাধিক টাকা সুদ কারবারিদের কাছ থেকে ধার নিয়েছিলেন। কিন্তু চড়া সুদের টাকা মেটাতে পারেননি। দুর্গাপুর স্টিল টাউনশিপের টেগর অ্যাভিনিউয়ের বাড়িতে থাকতেন না রাহুল দাস। সেখানে কেবল রোহন ও তাঁর বাবা গৌতম দাস ও মা থাকতেন। অভিযোগ, সুদ কারবারিরা দীর্ঘদিন ধরে ওই পরিবারের ওপর মানসিক ভাবে অত্যাচার করছিল। গুণ্ডাদের বাড়িতে পাঠিয়ে তাঁদের হুমকি দিত। নানা ভাবে হুমকি সহ মারধরেরও অভিযোগ ওঠে সুদ কারবারিদের বিরুদ্ধে। আতঙ্কে ও আত্মসম্মানের কারণে কয়েকদিন আগে হঠাৎই নিখোঁজ হয়ে যায় রাহুল। পরিবারের লোকজন থানায় গিয়ে নিখোঁজ ডায়েরি করেন। রোহনের বাবা গৌতম ও তাঁর স্ত্রী আত্মীয়ের বাড়ি গিয়েছিলেন। বাড়িতে রোহন একাই ছিল। এলাকাবাসী জানিয়েছেন, রোহন বাড়িতে যখন একা ছিল, সেই সময় গাড়িতে করে সুদ কারবারির লোকজন এসে চড়াও হয় সেখানে। প্রায় ২০ থেকে ৩০ জন ছিল যারা রোহনকে হেনস্থা ও মারধর করে। প্রতিবেশী প্রতিবাদ করতেই এলাকা ছাড়ে সুদ কারবারিরা। রোহান দুর্গাপুর থানায় গিয়ে বিষয়টি জানায়। এই ঘটনার পরেই মঙ্গলবার দুপুর বেলায় এলাকাবাসী ঘরের ভেতরে রোহনের গলায় ফাঁস লাগানো ঝুলন্ত মৃতদেহ দেখতে পায় ঘরের ভেতর। পুলিশ ও রোহানের বা ও মাকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে একটি সুইসাইড নোট উদ্ধার করে। মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য দুর্গাপুর মহকুমা হাসপাতালে পাঠানো হয়।
আরও পড়ুন : ফ্লোরেন্স নাইটিঙ্গেলকে মনে করালেন দুর্গাপুরের ফ্লোরা
এলাকাবাসী ও পরিবারের দাবি, শহরের সুদ কারবারিদের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নিক পুলিশ প্রশাসন। সেই সঙ্গে রোহনের খুনের জন্য যারা দায়ী, তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছেন এলাকাবাসী। মৃতের বাবা গৌতম দাস জানান, ”ওই সুদ কারবারিরা অযথা আমাদের ওপর অত্যাচার করত। যার সঙ্গে টাকা লেনদেন করেছে তার সঙ্গে বুঝতো বিষয়টি। কিন্তু আমার রোহন’কে ওই সুদ কারবারিদের জন্য মৃত্যুর পথ বেছে নিতে হল। আমি দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করেছি পুলিশের কাছে।”